বুক চিতিয়ে লড়ছে আনসার, কাজ করছে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমানতালেই
প্রকাশিতঃ 10:02 am | July 24, 2021

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে করোনাকালে দেশের সাধারণ মানুষকে সুরক্ষায় বহুমাত্রিক কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়েই দেশজুড়ে বুক চিতিয়েই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বাহিনীটির সদস্যরা। এতে কেউ কেউ সংক্রমিত হলেও মোটেও দমে যাননি বাহিনীটির কর্মকর্তা ও সদস্যরা।
মরণঘাতী ভয়ানক এই অদৃশ্য ভাইরাস ঠেকাতে রাজধানী থেকে মফস্বলের সাধারণ মানুষের সেবা নিশ্চিত করতেই কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বাহিনীটির প্রায় আড়াই হাজার সদস্য। রাজধানী থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলায় সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে প্রশাসনকে সহায়তার পাশাপাশি, ভ্রাম্যামাণ আদালতের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ- অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সব কাজই সমানভাবেই করে যাচ্ছেন।
পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, এই বাহিনীর গৌরবময় ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় দেশের জাতীয় সঙ্কটময় ও জরুরি মুহুর্তে বাহিনীর কর্মতৎপরতা প্রশংসা কুড়িয়েছে। করোনাভাইরাসের ঝুঁকি মোকাবেলায় নগরী থেকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠর মানুষজনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কর্মদক্ষতা ও সফলতার পরিচয় দিয়েছেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর গর্বিত সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনার প্রথম ঢেউ দক্ষতার সঙ্গেই সামাল দেওয়ার পর মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিরুদ্ধেও লড়াই করছে বাংলাদেশ। করোনা পরিস্থিতি বিপজ্জনক রূপ নেওয়ায় গত পহেলা জুলাই থেকে দু’দফায় টানা ১৫ দিনের কঠোর লকডাউন দেওয়া হয়। এরপর কয়েকদিনের বিরতিতে ঈদের পর থেকে আবারও শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন।

অবশ্য লকডাউন শুরুর আগেই সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন নিশ্চিতে প্রশাসনের সঙ্গে মাঠে কাজ করতে ৬১ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম।
পরবর্তীতে সরকারের চাহিদার প্রেক্ষিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন পদবীর ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার সদস্য সারাদেশে মোতায়েন করা হয়। এছাড়াও ইউনিয়ন পর্যায়ে মাসিক ভাতাভোগী সাধারণ আনসার কমান্ডার ও ভিডিপি লিডাররাও মাঠে সমানতালে সক্রিয় ছিলেন। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর পরিচালক (অপারেশনস) মো.সাইফুর রহমান কালের আলোকে বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দেশজুড়ে জনসচেনতামূলক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন এবং লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করছেন আনসার সদস্যরা।

পুরো বিষয়টি মনিটরিং করতে একাধিক কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মাননীয় ডিজি মহোদয় পুরো বিষয়টি তদারকি করছেন।’
সূত্র জানায়, এই বাহিনীর সকল পর্যায়ের সদস্যরা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক সকল প্রকার কার্যক্রমে সম্মুখে রয়েছেন। তারা বিশ্বাস করেন সবাই সচেতন হলে এবং সহযোগিতা করলেই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।
একই সঙ্গে মাঠের লড়াকুদের কন্ঠে গুঞ্জরিত হচ্ছে সাম্য ও মানবতার কবি কাজী নজরুল ইসলামের সহজ ও আন্তরিক সেই উচ্চারণ-‘গাহি সাম্যের গান, মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।’

জানতে চাইলে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম কালের আলোকে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেশের মানুষকে সুরক্ষার সর্বোচ্চ স্তরে উত্তীর্ণ করার প্রত্যয়দীপ্ত অঙ্গীকারে উদ্বেলিত আমরা।
করোনাসহ প্রতিটি দেশের প্রতিটি দুর্যোগে এবং সঙ্কটে দেশের সাধারণ মানুষের জন্য আনসার বাহিনীর অন্তর ভালোবাসায় পরিপূর্ণ। করোনা দুর্যোগে প্রতিটি মানুষের স্বার্থ এবং স্বপ্নের সঙ্গে আমরা একাত্ম’ যোগ করেন এই মহাপরিচালক।
কালের আলো/জিকেএম/এমএএএমকে