সরকারি খাদ্যশস্য মজুতের রেকর্ড গড়ছে দেশ, এবার ছাড়িয়ে যাবে গোডাউনের ধারণক্ষমতা

প্রকাশিতঃ 2:47 pm | July 28, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো :

মাত্র দুই মাস আগেও দেশের বিভিন্ন খাদ্য গুদামে সরকারি খাদ্যশস্যের মজুত ছিল একেবারেই তলানিতে। কিন্তু দ্রুতই পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। ইতোমধ্যেই দেশে সরকারি খাদ্যশস্য মজুতের এক রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে দেশ।

এমনকি আগস্ট শেষে দেশে মজুতের পরিমাণ ২৫ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশের সরকারি খাদ্য শস্যের মজুত গোডাউনের ধারণক্ষমতা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন খাদ্য অধিদপ্তর।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন খাদ্য গুদামে বর্তমানে প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। এই মজুত দেশের সিএসডি ও এলএসডি গোডাউনগুলোর ধারণক্ষমতার কাছাকাছি। আগামী ১৬ আগস্ট পর্যন্ত চলমান বোরো সংগ্রহ অভিযান শেষ হলে দেশের খাদ্য গুদামগুলোতে খাদ্য মজুতের পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে।

পাশাপাশি দ্রুতই বিদেশ থেকে প্রায় পাঁচ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হলে সরকারি গোডাউনগুলোতে খাদ্যশস্য রাখার আর জায়গাই থাকবে না!

সূত্র জানায়, দেশে সিএসডি ও এলএসডি গোডাউনগুলোর ধারণক্ষমতা ২০ লাখ মেট্রিক টন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমের কার্যকর নির্দেশে খাদ্য অধিদপ্তরের বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) শেখ মুজিবর রহমান খাদ্য মজুতের পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ নেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী ১৬ আগস্ট পর্যন্ত চলবে বোরো সংগ্রহ অভিযান। চলমান অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহ অভিযানে এরই মধ্যে সাড়ে ৭ লাখ মেট্রিক টন চাল, ৩ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন ধান ও ১ লাখ মেট্রিক টন গম সংগ্রহ করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে আরও সাত লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য অভ্যন্তরীণভাবে সংগ্রহের আশা করছে খাদ্য অধিদপ্তর হাইকমান্ড। এসব শস্য সরকারি ভাণ্ডারে যুক্ত হলে আগস্ট শেষে দেশে মজুতের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৫ লাখ মেট্রিক টনে।

মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েক মাসে বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে প্রায় ৯ লাখ মেট্রিক টন চাল ও গম। এই ২০ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন শস্যের মধ্যে বর্তমানে সরকারি খাদ্যগুদামগুলোতে মোট মজুতের পরিমাণ ১৪ লাখ মেট্রিক টন।

খাদ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা কালের আলোকে জানান, গেলো বছর অভ্যন্তরীণ শস্য সংগ্রহ অভিযানে শস্যের দাম বাজারমূল্যের তুলনায় কম থাকায় ওই বছর শস্য সংগ্রহ কার্যক্রম সফল হয়নি। তাতে সরকারের নিরাপত্তা মজুত তলানিতে চলে এসেছিল। তবে এই মৌসুমে চালের দাম ৪০ টাকা নির্ধারণ করায় চাল সংগ্রহ অভিযান সাফল্যের মুখ দেখছে। এ বছর কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় চাল সংগ্রহ করতে আমরা সক্ষম হবো বলে আশাবাদী।

জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) শেখ মুজিবর রহমান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। একজন মানুষও যেন ক্ষুধার্ত না থাকে, খাবারের কষ্ট না পায়, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’

তিনি বলেন, ‘দেশের মাঠের নায়ক কৃষক যেন ন্যায্যমূল্য পায়, সেই দিক বিবেচনায় আমরা ন্যায্যমূল্যে ধান-চাল সংগ্রহ করছি। এখানে কোন রকম ত্রুটি বিচ্যুতির সুযোগ নেই। আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশের সরকারি খাদ্য শস্যের মজুত গোডাউনের ধারণক্ষমতা ছাড়িয়ে যাবে’।

কালের আলো/জিকেএম/এমএ