রেণু থেকে বঙ্গমাতা

প্রকাশিতঃ 12:01 am | August 08, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো :

মাত্র ৫৪ বছরের জীবনে ৪৬৮২ দিন কারাভোগ করেছেন ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ জেলজীবনে সংসার, ঘর দূয়ার সামলানোর পাশাপাশি দলও এক হাতেই সামলেছেন মহিয়সী এক নারী। ছিলেন বঙ্গবন্ধুর প্রিয় রেণু। একজন প্রেমময়ী স্ত্রী আবার একজন আদর্শ মাতাও বেগম শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব।

আরও পড়ুনঃ বঙ্গমাতার দূরদর্শী সিদ্ধান্তই খুলে দেয় স্বাধীনতার পথ

বঙ্গবন্ধুর গোটা জীবনের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হয়েছেন। হিমালয়ের মতোন অবিচল থেকেছেন। সার্বক্ষণিক ভূমিকা রেখেছেন জাতির পিতার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা হিসেবে। শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির পিতা ও বিশ্ববরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হওয়ার পেছনে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেন।

আরও পড়ুনঃ শেখ হাসিনার চোখে ‘আসল গেরিলা’ বঙ্গমাতা

আমৃত্যু ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অফুরান প্রেরণার শক্তি ও উৎস এবং সংগ্রামী জীবনের সাফল্যের নেপথ্য অনুঘটক। দেশ এবং জাতির স্বার্থে অপরিসীম ত্যাগ, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতার কারণেই বাঙালি জাতি তাকে ভূষিত করেছিলেন ‘বঙ্গমাতা’ উপাধিতে। আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী, সেই মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন। বেঁচে থাকলে আজ তাঁর বয়স হতো ৯১ বছর।

১৯৩০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতা হত্যাকারীদের নিষ্ঠুর, বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে তিনিও শাহাদাত বরণ করেন

মাত্র তিন বছর বয়সে বাবা শেখ জহুরুল হক এবং ৫ বছর বয়সে মা হোসনে আরা বেগমকে হারান বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তার ডাক নাম রেনু। দাদা শেখ কাসেম শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কিশোরী বয়সেই বেগম ফজিলাতুন্নেছার বিয়ে দেন। তখন থেকে বেগম ফজিলাতুন্নেছাকে শাশুড়ি (বঙ্গবন্ধুর মা) সাহেরা খাতুন নিজের সন্তানদের সঙ্গে মাতৃস্নেহে লালন-পালন করেন। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে তিনি প্রাথমিক লেখাপড়া করেন।

আরও পড়ুনঃ অমূল্য সেই দলিলের রূপকার বঙ্গমাতাই

বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্বামী বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সর্বান্তকরণে সহযোগিতা করেছেন। বঙ্গবন্ধু জেলে থাকার সময় আন্দোলনের প্রতিটি ঘটনা জেলখানায় সাক্ষাতের সময় বঙ্গবন্ধুকে জানাতেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশ নিয়ে আসতেন।

আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগকে সেই নির্দেশনা জানাতেন, নেপথ্যে থেকে তিনি ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি অনুপ্রেরণা, শক্তি, সাহস, মনোবল ও প্রেরণা জুগিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। এই মহীয়সী নারী জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে দেশ ও জাতির সেবা করে গেছেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গৃহবন্দী থেকে এবং পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী স্বামীর জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা সত্ত্বেওও তিনি সীমাহীন ধৈর্য্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন।

কালের আলো/এমএএএমকে