মৃত্যুঞ্জয়ী শেখ মুজিব : শোক অনির্বাণ আবেগমথিত উচ্চারণ
প্রকাশিতঃ 10:32 am | August 15, 2021

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :
আবারও বছর ঘুরে এসেছে সেই ভয়াল-বীভৎস্য ১৫ আগস্ট। অন্তিম শোকার্ত বাণী পাঠের একদিন। বেদনাবিধুর ও কলঙ্কের কালিমায় কলুষিত বিভীষিকাময় ইতিহাসের এক ভয়ঙ্কর দিন। আজও বাঙালির হৃদয়ে শোক আর কষ্টের দীর্ঘশ্বাস। আজও উজ্জ্বল সূর্যের মতোই দেদীপ্যমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আরও পড়ুন: বাঙালির স্বপ্নপুরুষকে নৃশংসতম হত্যার অশ্রুঝরা দিন
আমাদের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত, নদীর কলতান বা পাখির কুজন-কোথায় নেই বদ্বীপের এই স্বাধীন ভূখন্ডের চিত্রকর। সবুজ-শ্যামল, আর সুনীল প্রান্তরে তিনি আছেন এবং থাকবেন অনন্তকাল। প্রধানমন্ত্রীত্বের হাতছানি প্রত্যাখ্যান করে দেশের স্বাধীনতার পথ বেছে নিয়েছিলেন। দেশ স্বাধীনতা এনে দিয়ে রাষ্ট্রচিন্তার কেন্দ্রভাগে স্থান দিয়েছিলেন অসাম্প্রদায়িকতাকে।
বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে পিছিয়ে দিতে একাত্তরের পরাজিত পাকি শক্তি, ক্ষমতালোভী নরপিশাচ কুচক্রী মহল ৭৫’র ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল সপরিবারে।
আরও পড়ুনঃ নির্মম হত্যাকারীরা অপরিচিত ‘কেউ’ ছিল না
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ওই সময় তৎকালীন পশ্চিম জার্মানীতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান। গোটা বাঙালি জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। জাতির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় অবদানই ‘অজেয়’ করে রেখেছে বঙ্গবন্ধুকে।
শোকাবহ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে সর্বস্তরের মানুষের শোকের উচ্চারণে, ভালোবাসায় স্মরিত হচ্ছেন জাতির জনক। বাঙালির মননে, চেতনায়, ভালোবাসায় অমর অক্ষয় এবং অব্যয় হয়ে আছেন নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালি জাতির এ মুক্তির কান্ডারি।
আরও পড়ুনঃ বঙ্গবন্ধুর ‘অধরা’ পাঁচ খুনি কোথায়?
উজ্জ্বল ফুলকলির মতো ফুটে, লাল গোলাপের মতো পরিস্ফুটিত হাজার বছরের এ শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে নিয়ে মর্মস্পর্শী মূল্যায়ন তুলে ধরেছেন সরকারি দল আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিরা। কালের আলো’র সঙ্গে তাদের আলাপচারিতার সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হচ্ছে পাঠকদের জন্য।
প্রতিটি শোক দিবসেই বঙ্গবন্ধুর দু’কন্যাকে যেমন দেখেছেন মুহাম্মদ ফারুক খান
বাঙালি জাতির শোকের দিন ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের পাশাপাশি কিছু বিশ্বাসঘাতক রাজনীতিকের কূট চক্রান্ত ও সেনাবাহিনীর একদল বিপথগামী সেনা সদস্যের নির্মম বুলেটের আঘাতে সেদিন প্রাণ হারান জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: শেখ রাসেল : কুড়িতেই শেষ হয়ে যাওয়া একটি ফুল
প্রবাসে থাকায় সেদিন প্রাণে রক্ষা পান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। চরম রকমের বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশেও ভাগ্যলিখনে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর এই দুই আমানত।
ফলশ্রুতিতে প্রতিটি শোক দিবসেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দল-মতের উর্ধ্বে উঠে তিনি স্টেটসম্যান বা রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছেন। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আদায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারানোর শোকাবহ দিনটিতে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে কেমন দেখেছেন এমন প্রশ্ন ছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে: কর্ণেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি’র কাছে।
আরও পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর শেষ শয্যার সঙ্গীরা
গোপালগঞ্জ-১ (মকসুদপুর-কাশিয়ানী) থেকে টানা পাঁচবার নির্বাচিত এ সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছোট বোন শেখ রেহানা’র ‘বিশ্বস্ত স্বজন’ হিসেবে পরিচিত। সফলতার সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর। আছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবেও।
কালের আলো’র প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বলছিলেন এভাবে-‘স্বজন হারানোর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে বজ্রকঠিন এক ব্রত নিয়েই ১৯৮১ সালে দেশের মাটিতে পা রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের সংকল্পে শত প্রতিকূলতাও হার মানাতে পারেনি দৃঢ়চেতা শেখ হাসিনাকে। প্রতিটি শোক দিবসেই আমি বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যাকে দেখেছি ধৈর্য্যরে সঙ্গে শোক দিবস পালন করেন।’
তিনি বলেন, ‘গভীর শোকের পাশাপাশি দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে জাতির জনকের ত্যাগ এবং তিতিক্ষার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ ধারণ করেই পথ চলেছেন বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। তাদের হৃদয় দু:খ ভারাক্রান্ত হলেও জাতির পিতার স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতেই নিবিষ্টমনে তারা কাজ করছেন।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে: কর্ণেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি বলেন, ‘মহান জাতির পিতাকে হারানোর শোক আজ গোটা বাঙালি জাতির মধ্যেই প্রবাহিত হয়েছে। জাতির পিতা আমাদের নিজস্ব রাষ্ট্র, নিজস্ব পতাকা আর জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে গেছেন।
জাতির পিতার মতোই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী, সাহসী ও ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বের দৌলতেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে নিজেদের সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে।’
ক্ষোভ প্রকাশ করেই বর্ষীয়াণ এই আওয়ামী লীগ নেতা বলছিলেন, ‘১৫ আগস্ট শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশে^র জন্যই একটি অন্যতম শোকাবহ দিন। এই দিন শুধু আমাদের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েনি, সেই দিন বিশ^ মানবতাকে হত্যা করা হয়েছে।
বিশে^র ইতিহাসে এ ধরণের কলঙ্কজনক এবং শোকাবহ রাজনৈতিক হত্যাকান্ড অতীতে কখনো ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। নারকীয় এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল বাংলাদেশের কিছু ষড়যন্ত্রকারী, দুর্নীতিপরায়ণ ও দেশদ্রোহীরা।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে: কর্ণেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি কালের আলোকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর প্রিয় সহধর্মিনী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, যিনি সবসময় তাকে সকল কাজে সহযোগিতা করেছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রগঠন, বাংলাদেশের আন্দোলনে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছিল তাঁর।
তার বড় ছেলে শেখ কামাল, যিনি আমার বন্ধু ছিলেন। ঢাকা কলেজে আমরা একসঙ্গে পড়াশুনা করেছি। ওর সাথে আমার সব সময় কথা হতো। কত সুখস্মৃতি রয়েছে আমাদের। সেই সময় আমিও ছাত্রলীগ করতাম।
ক্যাপ্টেন শেখ কামাল খেলাধুলা ও সংস্কৃতিচর্চার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সংগঠিত বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিজেকে নিবেদন করেছিলেন।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাড়ি থেকে বের হয়ে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেছিলেন। শহীদ শেখ কামাল ছিলেন তার প্রজন্মের অগ্রবর্তী পথপ্রদর্শক। একই সঙ্গে দূরদর্শী ও গভীর চিন্তাবোধের অধিকারী।
শেখ জামাল একজন সাহসী চৌকস সামরিক সামরিক অফিসার ছিলেন। আমরা দু’জনেই প্যারাট্রুপার ছিলাম। বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও নিজ নিজ অবস্থানে কৃতিমান ছিলেন। তাদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছিল।
এই পরিবারের প্রতিটি সদস্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের আধুনিক বিনির্মাণে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
তারা যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে আজকেও তারা বাংলাদেশের অগ্রগতিতে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারতেন বলেই আমি মনে করি।
আরও পড়ুন: মাত্র ১৫ মিনিটে দাফন হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর লাশ!
শোকার্ত উচ্চারণ স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের
সেই শৈশব থেকেই বঙ্গবন্ধুকে মনেপ্রাণে ধারণ করেন। নিজের প্রতিটি বক্তব্যেই বারবার বলেছেন, শত বছরেও বঙ্গবন্ধুর মতোন মহান নেতা আর দ্বিতীয়টি হবে না। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা কাপুরুষোচিতভাবে ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ পুরুষ বঙ্গবন্ধুকে পরিবার-পরিজনসহ হত্যা করেছে।
বঙ্গবন্ধু কেবল নিজেই ইতিহাস নন, তাঁর পরিবারের প্রতিটি সদস্য ব্যক্তিত্বের দ্যুতিতে মহান হয়ে আছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর রক্তের নামে আদর্শবোধ বুকে নিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশকে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
শোকার্ত হৃদয় নিয়েই এমন সব উচ্চারণ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি’র। বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কিত, শোকের ও কান্নার দিন ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কালের আলো’র সঙ্গে আলাপে নিজের এমন মূল্যায়ন উপস্থাপন করেন মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক যড়যন্ত্রের মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে ইতিহাস থেকে তাঁর নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।
ষড়যন্ত্রকারীদের সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। বরং ইতিহাসে চির স্মরণীয় হয়ে আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
মন্ত্রী মনে করেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে বঙ্গবন্ধুসহ পুরো পরিবারকে নৃশংস হত্যার মধ্য দিয়ে দেশকে গভীর সঙ্কটে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে দেশ এখনও গভীর সঙ্কটেই রয়েছে।’
কথার সঙ্গে কাজের সমন্বয় সাধন করে পথচলায় বিশ্বাসী মানুষ মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। একজন আপাদমস্তক অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনীতিবিদ হিসেবে সততা সাহস নীতি ও আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে, দেশ ও মানুষের প্রতি গভীর মমতা নিয়ে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারূভাবেই পালন করছেন এ স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।
নিজের প্রতিটি বক্তব্যেই মন্ত্রী তাজুল ইসলাম অমিত দৃঢ়তায় উচ্চারণ করেন রাজনীতির অমর কবি, স্বাধীন বাংলাদেশের চিত্রকর বঙ্গবন্ধুর কথা। কালের আলো’র সঙ্গে আলাপেও তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু নিপীড়িত মানুষের জন্য আন্দোলন করেছেন।
জেল, জুলুম, নির্যাতন উপেক্ষা করে জাতিকে সংগঠিত করেছেন। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করেছেন। এই মহান নেতাকে ভুলানোর জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল।
বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসসহ কোনো দিবসে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করা হতো না। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। এই বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুকে ভুলেনি।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু বুভুক্ষু ও দরিদ্র মানুষের জন্য আন্দোলন করেছেন। আমরা আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে দেশের মানুষ ভালো থাকবে। আর দেশের মানুষ ভালো থাকলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে।’
মন্ত্রী তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মাত্র সাড়ে ৩ বছর পেয়েছিল বাংলাদেশ। এই কম সময়ের শাসনামলেই প্রায় শূন্য অর্থনীতির দেশকে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে যান।’
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের সময় দীর্ঘ ৯ মাস দেশে কোনো ফসল উৎপাদন হয়নি। বিজয়ের পরে দেশ ছিল গভীর সঙ্কটে। খাদ্য ছিল না, সড়ক ও কালভার্ট ছিল না, পরিবহন ছিল না। এই গভীর সংকটের মধ্যেই অল্প দিনে বঙ্গবন্ধু দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে নানা পরিকল্পনা করেছেন এবং দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত রাস্তাঘাট মেরামত শুরু করেন, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা খুলে দেন, স্বাভাবিক হতে শুরু করে পরিস্থিতি। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্বে সঙ্কট কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশ।’
আরও পড়ুন: খুনিদের প্রতি তীব্র ঘৃণা, শোকস্তব্ধ বিশ্ব নেতারা
বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির জন্য এক আশীর্বাদ : জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
বাবা প্রয়াত ছহিউদ্দীন বিশ্বাস ছিলেন ইতিহাসের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠকও। মহাকাব্য যুগের রাজনীতিতে মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি সেই শৈশব থেকেই নিজের গভীর হৃদয়গ্রোথিত আবেগ।
বাবার মুখ থেকেই মেহেরপুর-১ আসন থেকে টানা দু’বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জেনেছেন, শোনেছেন গোটা বাংলাদেশকে একটি পরিবার ভাবতেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
স্বাধীনতার অর্জনকে সাফল্যের স্বর্ণশিখরে নিতে আদর্শ ও ত্যাগের মহিমায় একটি জাতিকে নৈতিক চরিত্রে দাঁড় করাতে বঙ্গবন্ধু আত্নত্যাগ করেছেন।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালো রাতে একাত্তরের পরাজিত শক্তিই স্বপরিবারে নৃশংস হত্যাকান্ডের মাধ্যমে বাঙালির হাজার বছরের অর্জন স্বাধীনতা ও সব মহতী আকাঙ্খাকেও হত্যা করতে চেয়েছিল বলে মনে করেন এ প্রতিমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনা যেন তাঁর কাছে অনুভূতি এবং অহংকার দু’টোই। বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক চিন্তা-চেতনা, মননশীলতায় ও মেধায় জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি নিবেদিত থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে দক্ষ জনপ্রশাসন গড়ে তোলার মিশনে নেমেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কালের আলো’র সঙ্গে আলাপে এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মহান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাঙালি জাতির জন্য এক আশীর্বাদ।’
বলতে থাকেন ‘বাংলাদেশ হঠাৎ করে একদিনেই স্বাধীন হয়নি। বঙ্গবন্ধু ধীরে ধীরে এ জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। অনেক প্রতিকূলতা, জেল-জুলুম উপেক্ষা করে তিনি এদেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।’
ফরহাদ হোসেনের বাবা প্রয়াত ছহিউদ্দীন বিশ^াস ১৯৬২ সালে মেহেরপুর মহকুমা আওয়ামী লীগ সভাপতি ছিলেন। ফরহাদ হোসেন নিজেও সভাপতি হিসেবে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বাংলাদেশের প্রথম সরকার মেহেরপুরের মাটিতে শপথ নিলেও স্বাধীনতার পর মেহেরপুরের কেউ মন্ত্রিপরিষদে স্থান পাননি। কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বার ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফরহাদ হোসেনের কাঁধে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বভার অপর্ণ করেন।
কালের আলো’র সঙ্গে আলাপচারিতায় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দুটি স্বপ্ন ছিল। একটি স্বপ্ন ছিল, বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। দ্বিতীয় স্বপ্নটি হচ্ছে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করা।
বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় স্বপ্নটি পূরণ করতে হলে একটি সুদক্ষ জাতি গঠন করতে হবে। তাই একটি দক্ষ জনপ্রশাসন গড়ে তুলে দেশকে উন্নতসমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সরকারি কর্মচারীদের কর্মদক্ষতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘একটি জাতি কতটা উন্নত হবে, তা নির্ভর করে ওই জাতিতে কত বেশি কর্মদক্ষ জনসম্পদ রয়েছে তার ওপর। বঙ্গবন্ধু এটি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।
তাই তিনি এ দেশের মানুষকে দক্ষ জনসম্পদে পরিণত করার জন্য ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতার দেখানো পথ অনুসরণ করে জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে হবে।’
ফরহাদ হোসেন কালের আলোকে আরও বলেন, ‘এই দেশ ও জাতির জন্য বঙ্গবন্ধুর ছিল অকৃত্রিম ভালোবাসা । তিনি সুযোগ পেলেই বারবার সে ভালবাসার প্রমাণ দিয়েছেন। তিনি এদেশের স্বাধীনতার জন্য দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন।
এ দেশকে স্বাধীন করার জন্য বঙ্গবন্ধু যেভাবে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন তা ইতিহাসে বিরল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কারণেই আমরা কাঙ্খিত স্বাধীনতা অর্জন করেছি।’
বঙ্গবন্ধুকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান উল্লেখ করে এ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বঙ্গবন্ধু। তিনি জাতিসংঘে বাংলায় বক্তৃতা করেছেন । বাংলা ভাষা ও মাতৃভাষার মর্যাদা তিনি বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছেন।’
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে শক্তিতে পরিণত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার মিশনের কথাও তুলে ধরেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা, জাতীয় ঐক্যের প্রতীক।
বঙ্গবন্ধুকে সামনে রেখেই জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে বিশ্বের বুকে আমরা উন্নত ও সম্মৃদ্ধ দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াব।’
‘স্বাধীনতার ইতিহাস এবং সেই ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুকে জনগণের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরার ওপর গুরুত্বারোপ করে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচরের এ রাজনৈতিক উত্তরাধিকার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে আরও বেশি গবেষণার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।
নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে যাতে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে ভবিষ্যতে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে পারে।’
আরও পড়ুন: বিশ্ববরেণ্য নেতাদের চোখে বঙ্গবন্ধু
‘বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন’ : এমপি রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক
‘বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন’ এমনটিই মনে করেন কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা খ্যাত অষ্টগ্রাম-ইটনা-মিঠামইনের (কিশোরগঞ্জ-৪) সংসদ সদস্য (এমপি) প্রকৌশলী রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক। এ আসন থেকে বারবার নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের জ্যেষ্ঠ সন্তান।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে ‘ভাটির রত্ন’ হিসেবে পরিচিত এ সংসদ সদস্যের একটি বক্তব্য অতীতেও হৃদয় ছুঁয়েছে সবার। তিনি একাধিকবার বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে সোনার মানুষের খুব প্রয়োজন।’
আপাদমস্তক আওয়ামী লীগ পরিবারের এ সন্তান নিজের এ উক্তির পেছনে বিশ্লেষণী তথ্যও উপস্থাপন করেন কালের আলো’র সঙ্গে আলাপচারিতায়। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন পূরণেই সোনার মানুষের খুব প্রয়োজন। আর এটি সম্ভব হলেই মহান জাতির জনকের বিদেহী আত্মা তৃপ্ত হবে, শান্তি পাবে।’
বঙ্গবন্ধুর ৪৬ তম শাহাদাতবার্ষিকীর অঙ্গীকারও ঠিক করেছেন মহামান্যের এ জ্যেষ্ঠ সন্তান। তিনি বলেন, ‘আজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের অঙ্গীকার হোক তাঁর স্বপ্ন ও আদর্শ বুকে লালনের মাধ্যমে দেশ-জাতি এবং দলের জন্য আত্মনিবেদন করার।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতার চেয়ে জনসেবা ও জনগণের পক্ষে আন্দোলনকে ভালোবেসেছিলেন বলেও মন্তব্য করেন সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহম্মেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা গোটা বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর কাছে অসীম ঋণে আবদ্ধ। বঙ্গবন্ধু ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন আর ষড়যন্ত্রকারীরাই ইতিহাস থেকে মুছে গেছে।’
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্বকেও উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেন প্রকৌশলী রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক।
বলেন, ‘মহান জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড় তুলতে জাতির কান্ডারি হিসেবেই কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বজন হারানোর শোককে তিনি শক্তিতে পরিণত করেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সম্মিলিতভাবে আমাদের কাজ করতে হবে। জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের দৃপ্ত অঙ্গীকার।’
বঙ্গবন্ধুর মতোই দেশকে ভালোবাসার আহ্বান মেয়র আতিকুল ইসলামের
একজন বীরপুরুষের ডাকে একটি মাত্র রণমন্ত্র ‘জয় বাংলা’ ধারণ করে কাঙ্খিত স্বাধীনতা অর্জন করেছিল বীরের জাতি বাঙালি। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেই সপরিবারে হত্যা করেছিল নরপিশাচ ঘাতকের দল। বরাবরই বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়গ্রোথিত আবেগ-শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো.আতিকুল ইসলাম।
বাঙালি জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কিত, শোক আর কান্নার দিনে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতোই দেশকে ভালোবাসতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সুস্থ, সুন্দর, সচল ও আধুনিক ঢাকা বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেন টানা দু’বারের নির্বাচিত এ ‘নগর সেবক’।
ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু স্বীয় মহিমায় সমুজ্জ্বল উল্লেখ করে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম কালের আলোকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সমগ্র জীবনে একটিই ব্রত ছিল- বাংলা ও বাঙালির মুক্তির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করা। দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে জেল-জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন আর স্বৈরশাসকের রক্তচক্ষু ছিল বাঙালি জাতির চির আরাধ্য পুরুষের নিত্যসঙ্গী।
তিনি বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। আমাদেরকে একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়ে গেছেন। নিজের গোটা জীবন অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন। নিজের পরিবার, ছেলেমেয়ে, স্ত্রী কাউকে ভালোভাবে সময় দিতে পারেননি। সেই জাতির পিতাকেই নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।’
বাঙালির প্রতি বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাস ও আস্থা ছিল আকাশচুম্বী জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশের যথাযথ রূপায়ণই হবে তার প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদনের সর্বোত্তম উপায়। এজন্য আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে- বঙ্গবন্ধু যে আদর্শ নিয়ে দেশকে ভালোবেসেছিলেন, আমরা যেন সেই আদর্শ নিয়ে দেশকে ভালোবাসি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ ও গতিশীল নেতৃত্বে এগিয়ে চলা বাংলাদেশকে ভালোবেসে আমরা যেন সুন্দর ঢাকা শহর গড়তে পারি।’
‘অধরা’ খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকরই হবে মুজিববর্ষের প্রত্যয় : মেয়র টিটু
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম খুনি আব্দুল মাজেদকে গত বছরের এপ্রিলে দেশেই গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই মাসেই তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। বঙ্গবন্ধুর আরও পাঁচ খুনি বিদেশে পলাতক আছে। এর মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ও কানাডায় নূর চৌধুরী অবস্থান করছেন। কিন্তু খন্দকার আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম ও রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়।
জাতীয় শোক দিবসের শোকাবহ ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক পাঁচ খুনিকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (মসিক) মেয়র মো.ইকরামুল হক টিটু।
কালের আলোর সঙ্গে আলাপে তিনি বলেছেন, ‘অভিশপ্ত ১৯৭৫’র ১৫ আগস্টের কালো রাতে বাঙালি জাতির ললাটে যে কলঙ্কতিলক পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল; দীর্ঘ ৩৪ বছরের বেশি সময় পর ওই কলঙ্ক থেকে জাতির দায়মুক্তি ঘটেছে। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে পাঁচ খুনির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
গত বছরের এপ্রিলে কার্যকর হয়েছে খুনি আব্দুল মাজেদের ফাঁসির রায়। এরই মধ্যে দিয়ে একটি ঘৃণ্য ও অন্ধকারাচ্ছন্ন অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাঙালির বিজয় অভিযাত্রা আরেক ধাপ এগিয়েছে।’
বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা অন্ত:প্রাণ এ নগর পিতা আরও বলেন, ‘মহান জাতির জনকের পাঁচ খুনি এখনও বিদেশে পালিয়ে রয়েছে। ওইসব নরঘাতকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
আমি বলবো, বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরী ও নূর চৌধুরীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর হবে মুজিব শতবর্ষের প্রত্যয়।’
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ আইনি-প্রক্রিয়া শেষে ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে ১২ খুনির মধ্যে পাঁচ খুনি কর্নেল (অব.) সৈয়দ ফারুক রহমান, কর্নেল (অব.) সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, লে. কর্নেল (অব.) মহিউদ্দিন আহমদ, মেজর (অব.) একে বজলুল হুদা এবং মেজর (অব.) একেএম মহিউদ্দিন (আর্টিলারি) মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। আজিজ পাশা ২০০১ সালে জিম্বাবুয়েতে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন। এখনও পলাতক রয়েছে আরও পাঁচ খুনি।
মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ইতিহাসের মহানায়ক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি চির জাগরূক রাখতে দৃষ্টিনন্দন ও নান্দনিক স্বাধীনতা ভাস্কর্য ‘জয় বাংলা চত্বর’ নির্মাণ করেছেন সিটি মেয়র ইকরামুল হক।
তিনি জানান, ময়মনসিংহের প্রাণকেন্দ্র চায়না ব্রিজ ও বেড়িবাঁধের পাশে নির্মিত লিংক সড়কের মধ্যবর্তী স্থানে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে ‘জয় বাংলা চত্বর’। এ চত্বরে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংক্ষিপ্ত জীবন ইতিহাস স্থান পেয়েছে।’
কালের আলো/এমএএএমকে