তেলের পাম্পেও চলছে অঘোষিত ধর্মঘট!
প্রকাশিতঃ 12:34 pm | October 29, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
গত একদিন ধরে পরিবহন মালিক শ্রমিকদের নৈরাজ্যের কারণে নাজেহাল রাজধানীবাসী। তবে এ সমস্যার রেশ শেষ না হতেই নতুন আরেক সমস্যার মুখে এসে পড়ল নগরবাসী।
আর সেই নতুন সমস্যাটি হচ্ছে পরিবহন মালিক শ্রমিকদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবার রাজধানীর ওয়েল পাম্পগুলো অজানা কারণে অঘোষিত ধর্মঘট পালন করছে। পাম্পগুলো বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাই মানুষজন তেল ও গ্যাসের জন্য গেলে তারা নেই বলে জানিয়ে দিচ্ছেন।
তবে এর পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিং স্টেশন ও ওয়েল পাম্পের কর্তৃপক্ষরা পাল্টা যুক্তি দিচ্ছেন। তারা বলছেন, পরিবহন ধর্মঘটের জন্য তাদের সাপ্লাই লাইন কেটে গেছে। তাই তারা তেল বা গ্যাস সরবরাহ করতে পারছেন না।
তবে কর্তৃপক্ষের এমন যুক্তি মানতে নারাজ গ্রহকরা। তারা অভিযোগ করে বলছেন, রাজধানীর প্রতিটি পাম্পেই ২-৩ দিনের অতিরিক্ত তেলের মজুদ থাকে। তাছাড়া পাম্পগুলোতে গ্যাসের সাপ্লাই তো বন্ধ হয়নি। তারা নিজেরা ইচ্ছা করে তেল বা গ্যাস দিচ্ছে না। মালিক-শ্রমিকদের কথায় পাম্পগুলো বন্ধ করে দিয়েছে তারা।
পাম্প কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে সব থেকে বেশি বিরক্ত পাঠাও, উবায় চালকরা। তারা অভিযোগ করে বলছেন, ধর্মঘটে রাইড শেয়ারিং যাতে বন্ধ থাকে তাই এই ফন্দি করেছে পরিবহন শ্রমিকরা। তারা দেখছে রাইড শেয়ারিং এর জন্য তাদের ধর্মঘটের প্রভাব কমে যাচ্ছে। তাই ধর্মঘটে নগরবাসীর ভোগান্তি চলমান রাখার জন্য পাম্প মালিকদের সঙ্গে মিলে এ কাজ করেছে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা।
সোমবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর বাড্ডা, গুলশান, মহাখালী ও বাংলামোটর এলাকার বেশ কয়েকটি ওয়েল পাম্প ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে সোমবার সকালে প্রতিটি ওয়েল পাম্পের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গ্রাহকরা তেল বা গ্যাসের জন্য আসলে না করে দিচ্ছেন পাম্প মালিকরা।
কেন তেল বা গ্যাস নেই গ্রাহকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে কর্তৃপক্ষের কেউ কেউ বলেন মজুদ নেই। আবার অনেকে বলছে, কারণ জানি না। তবে মালিক বন্ধ রাখতে বলেছে।
মহাখালীর গুলশান সার্ভিস স্টেশনে অকটেন কিনতে আসা বাইকার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘কাল রাত থেকেই তেল পাওয়া যাচ্ছে না। আমি বেশ কয়েকটি পাম্পে তেলের জন্য গিয়েছি। সেখানেও একই অবস্থা। মোটরসাইকেলে বেশি তেল নেই। এখন যদি তেল ধর্মঘটও চলে তাহলে তো আর বাসা থেকেই বের হতে পারব না।’
রাজধানীর বাংলামোটর ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস না পেয়ে ফিরে গেছেন উবার চালক মো.সুলেমান।
তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে ৪টি ফিলিং স্টেশনে গিয়েছি। কিন্তু কেউ তেল দিচ্ছে না। তারা চায় শহরে যেন একটি গাড়িও না চলে এবং যাত্রী যাতায়াত বন্ধ হোক। যাতে করে সরকার মানুষের ভোগান্তি দেখে তাদের দাবি মেনে নেয়।’
গুলশান সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা জুয়েল রহমান বলেন, ‘কেন তেল-গ্যাস নেই এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারব না। কিন্তু মালিক নির্দেশ দিয়েছে বন্ধ রাখার, তাই বন্ধ।’
তবে আরও খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ ওয়েল পাম্পগুলো পরিবহন মালিকদেরই। তাই ধর্মঘট সফল করতে তারা পাম্প বন্ধ করে রেখেছে। এছাড়া আবার অনেকে পরিবহন মালিক শ্রমিকদের বিভিন্ন হুমকির মুখে পাম্প বন্ধ রেখেছে।
কালের আলো/ওএইচ