১৯৫ টি উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে কাল ময়মনসিংহ আসছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 6:53 pm | November 01, 2018
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:
গত ছয় মাসে তিনবার সফর স্থগিতের পর অবশেষে আগামীকাল শুক্রবার ময়মনসিংহে আসছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যতবার ময়মনসিংহে এসেছেন ঠিক ততবারই মুঠো মুঠো উন্নয়ন উপহার দিয়েছেন। এবারও প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহ আসছেন ১৯৫টি উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগের ৪টি জেলায় ১০১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৯৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। বিকেল ৩ টায় ভাষণ দিবেন সার্কিট হাউজ মাঠে আয়োজিত জনসভায়।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে আনন্দে উজ্জীবিত দলীয় নেতাকর্মীরা। সাজসাজ রব বইছে গোটা ময়মনসিংহে। ঝকঝকে-তকতকে করে সাজানো হয়েছে ময়মনসিংহ নগরীকে। রেকর্ড জনসমাগমের টার্গেট মাথায় রেখে প্রস্তুতি সারছে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তাদের মতে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এবার ১৫ লাখেরও বেশি জনসমাগম ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান তারা।
জানা যায়, দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর প্রায় তিন দশকের প্রাণের দাবি ময়মনসিংহকে বিভাগে উন্নীত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর পর্যায়ক্রমে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনও উপহার দেন এই সরকার প্রধান।
এদিকে বর্তমানে পুরোদমে ময়মনসিংহে বিভাগীয় কার্যক্রম শুরু হলেও এখনো সদর দফতর গড়ে ওঠেনি। কেবলমাত্র বিভাগীয় সদর দফতরের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপারে।
এরই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহে এসে ৯৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। তার মধ্যে রয়েছে- ময়মনসিংহ বিভাগের নতুন বিভাগীয় শহরের ভিত্তিপ্রস্তর, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়, বিভাগীয় সার্কিট হাউজ, বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার, বিভাগীয় স্টেডিয়াম, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, আরআরএফ-ময়মনসিংহ রেঞ্জ, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ খনন প্রকল্প প্রমুখ।
ময়মনসিংহ বিভাগবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর এমন উপহারে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত এ অঞ্চলের বাসিন্দারা। ময়মনসিংহ জেলার পাশাপাশি জামালপুর ও নেত্রকোনায় দুটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পাচ্ছে সেখানকার বাসিন্দারা। এরমধ্যে জামালপুরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নেত্রকোনায় শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়।
এছাড়া একাধিক বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এরমধ্যে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী বাফার গোডাউন প্রকল্প ও শেরপুর-জামালপুর বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্প উল্লেখযোগ্য।
উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা ১০১টি উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে ময়মনসিংহ জেলার উল্লেখযোগ্য গুলো হচ্ছে- কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর ময়মনসিংহ কার্যালয়, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) অফিস ভবন, ময়মনসিংহ বিএসটিআই অফিস ভবন, ময়মনসিংহ জেলায় নবনির্মিত জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর (ইইডি) ভবন, ব্রহ্মপুত্র নদের উপর ৮১০ মিটার পিসি বক্স গার্ডার ব্রিজ।
নেত্রকোনা জেলায় উদ্বোধন হতে যাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- নেত্রকোনা আধুনিক স্টেডিয়াম, শ্যামগঞ্জ-জারিয়া-বিরিশিরি-দুর্গাপুর সড়কে জারিয়া সেতু, আটপাড়া, মদন, দুর্গাপুর এবং কলমাকান্দায় উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন ভবন।
শেরপুর জেলায় নকলা উপজেলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি), ঝিনাইগাতী এবং শ্রীবর্দী উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন ভবন, শেরপুর সদর হাসপাতালকে ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ প্রকল্প উল্লেখযোগ্য।
জামালপুর জেলায় উল্লেখযোগ্য হল- জেলার ইসলামপুর উপজেলায় শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, মেলান্দহ উপজেলায় ৫০০ আসন বিশিষ্ট অডিটরিয়াম ও জামালপুর পাসপোর্ট অফিস।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে চাঙা দলটির নেতাকর্মীরা। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে বরণ করে নিতে উন্মুখ হয়ে আছেন তারা। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর বঙ্গবন্ধু কন্যা ময়মনসিংহ সফরে আসছেন। আমরা কমপক্ষে ১৫ থেকে ১৬ লাখ লোকের জনসমাগম ঘটিয়ে নেত্রীকে অভিনন্দন জানাতে চাই। নেত্রীর আগমনকে ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীরা আনন্দে উচ্ছ্বসিত।’
কালের আলো/ওএইচ