আপনজনদের মামলায় খালেদার সাজা: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 11:32 pm | November 03, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
রাজনৈতিক কারণে বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়া বা আর কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, ‘বিএনপির তৈরি লোকজনই খালেদা ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আপনজনদের করা মামলাতেই তারা সাজা পেয়েছেন।’
শনিবার বিকালে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় চার নেতার স্মরণসভায় প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আওয়ামী লীগ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।
সম্প্রতি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপে বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দীদের মুক্তি দাবি করা হয়।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সংলাপে বিভিন্ন আলোচনার মাঝে রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিও জানানো হয়। তবে কাউকে রাজনৈতিক কারণে গ্রেপ্তার করা হয়নি। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে তাদের আপনজনরাই মামলা করেছে।’
‘তাদের বানানো রাষ্ট্রপতি ইয়াজ উদ্দিন, তাদেরই বানানো সেনাপ্রধান মঈন উদ্দীন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ফখরুদ্দীনরাই এ মামলা করেছেন। এরা সবাই ছিলেন বিএনপিরই তৈরি। তারা ক্ষমতায় বসে মামলা দিয়েছে। তাদের (বিএনপি) উপদেষ্টা মইনুল হোসেনই মামলাটা তৈরী করে দিয়েছেন।’
এসব মামলায় ক্ষমতাসীন সরকারের কোনো দুরভিসন্ধি থাকলে একটা মামলা শেষ করতে ১০ বছর সময় লাগার কথা না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১০ বছর ধরে মামলা চলার পরে রায় হয়েছে, সেই মামলায় সাজা হয়েছে। স্বাধীন বিচার বিভাগ খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’
‘আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে’
আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে- এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্থানীয় সরকার , ইউপি নির্বাচন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছে যা নিয়ে কোনো কথা হয়নি। এই নির্বাচন কমিশন দেশে অনেক সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়েছে। কাজেই এই কমিশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠার কথা না। তারা প্রতিটি নির্বাচন স্বচ্ছতার সঙ্গে করেছে। আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন হোক।’
‘দেশে আর যেন জ্বালাও পোড়াও না হয়। দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক। দেশের মানুষ তাদের পছন্দমত সরকার বেছে নিক। এ লক্ষ্যেই সংলাপে বসেছি আমরা। সংলাপে বেশিরভাগ সময়ই তারা কথা বলেছে। প্রায় দুই ঘন্টা তারা কথা বলেছে। শেষে আমরা কথা বলেছি। কিন্তু আলোচনার মধ্যেই তারা এখন আন্দোলনের কর্মসূচির কথা বলেছে। এখন তারা একদিকে আলোচনা করছে, অন্যদিকে আবার আন্দোলনের দিকেও যাচ্ছে। একদিকে আলোচনা করে অন্যদিকে আন্দোলন -এটা জাতি কীভাবে নেবে আমি জানিনা।’
‘খুনিদের পুরস্কৃত করেছে বিএনপি’
‘খুনিদের বিচার না করে তাদেরকে পুরস্কৃত করেছে বিএনপি’- মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের বিজয়ের চিহ্নকে মুছে ফেলতে যারা কাজ করেছে, তাদেরকে পুনর্বাসন করেছে বিএনপি। খুনিরা তারা জাতির পিতাকে খুন করেছে, জেলে বন্দি নেতাদেরকে খুন করেছে। আইনের তোয়াক্কা না করে খুনিদেরকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। খুন করার যোগ্যতাবলে তাদেরকে চাকরি দেয়ার পাশাপাশি পদোন্নতিও দেয়া হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা ও ৩ নভেম্বরের খুনিদের বিচার করার লক্ষ্য ছিল। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের লক্ষ্যে কাজ করেছি, তাদের বিচার করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে অনেক বাধার সম্মুখিন হয়েছি। তবে লক্ষ্য সুদৃঢ় ছিল বলে শত বাধা অতিক্রম করে আমরা বিচার করতে পেরেছি। এজন্য অনেককে নির্যাতিত হতে হয়েছে।’
‘তাদের তান্ডব থেকে শিশুও রক্ষা পায়নি’
‘আমরা সৃষ্টি করি, ওরা (বিএনপি-জামায়াত) ধ্বংস করে’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের তান্ডব থেকে ছোট্ট শিশুও রক্ষা পায়নি। মানুষ পোড়ানোর পাশাপাশি বাড়িঘর জ্বালানোসহ নানা তান্ডব চালিয়েছে দেশজুড়ে। এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে আনন্দ করেছে। এটাই তাদের রাজনীতি। এইভাবে তারা দেশকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছে।
‘কিন্তু আওয়ামী লীগ চায় দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত হোক। জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ হোক। আওয়ামী লীগ দিতে জানে, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে বিশ্বাস করে।’
কালের আলো/এনএম