মাদক বিরোধী অভিযানে অর্জনে আত্মতুষ্টিতে ভুগতে চান না র‍্যাব ডিজি

প্রকাশিতঃ 10:29 pm | November 06, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

মাদক বিরোধী অভিযানে গত ছয় মাসে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) অর্জনে মোটেও আত্মতুষ্টিতে ভুগতে চান না মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ।

এমন অর্জনের জন্য দেশের জনগণ, সরকার ও মিডিয়াকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি।

ডিজি বলেছেন, মাদক নিয়ে কাজ করা অনেক বড় একটি প্রক্রিয়া, মাদক নিরসন দুই একদিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে এটা আশা করা যাবে না। ৩০ বছরের সমস্যা তিন দিনে বা ছয় মাসে শেষ হবে না।

মঙ্গলবার (০৬ নভেম্বর) র‍্যাব সদর দফতরে ‘মাদক-সন্ত্রাস-দুর্নীতি বিরোধী প্রচারণা দিবস-২০১৮’ উপলক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মাদকের সব শেকড়-বাকড় উপড়ে দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে র‍্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা অনেক দূর এসেছি, যেতে হবে বহুদূর। এ যুদ্ধে অবশ্যই আমরা জয়ী হবো।

বেনজীর আহমেদ বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করা খুব কঠিন। আমরা যখন প্রথম কাজ শুরু করেছিলাম, তখন যারা মাদক রাস্তায় বিক্রি করে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাওয়া, আটক করে তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে আমরা পৌঁছেছি উপরের স্তরে। সেই লোকাল ডিলারদের আটক করে তথ্য নিয়ে আমরা যারা অভিনব কায়দায় মাদক নিয়ে আসে (ক্যারিয়ার), তাদের কাছে পৌঁছেছি। বাহকদের ধরে আমরা এখন পৌঁছেছি কক্সবাজারে কারা বিদেশ থেকে মাদক আমদানি করে তাদের কাছে।

‘আমরা মাদকের বিরুদ্ধে অনেক দূর এসেছি, যেতে হবে বহুদূর। আমরা জানি অনেক লম্বা যুদ্ধ এটি, আমাদের মনোবল ও মানসিকতা আছে, সে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার’ -যোগ করেন তিনি।

র‍্যাব মহাপরিচালক আরও বলেন, মাদক যেহেতু একটি সামাজিক সমস্যা, তাই সমাজের সবার সমন্বয়ে এটা মোকাবিলা করতে হবে। অনেকটা ঐকিক নিয়মের অঙ্কের মতো, দশজন মিলে একটি কাজ দ্রুত সমাধান করা যায়।

মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে আমাদের বেশকিছু অফিসার জীবনবাজি রেখেছে, আহত হয়েছে।কাউকে হাসপাতালে কিংবা দেশের বাইরে চিকিৎসা করানো হচ্ছে।

কক্সবাজারে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার মাদক ব্যবসা হচ্ছে, এটা বন্ধের প্রক্রিয়া কতোদূর?- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বেনজীর আহমেদ বলেন, কক্সবাজারে মাদক ব্যবসায় প্রতিদিন এক হাজার কোটি টাকা লেনদেন হলে মাসে ত্রিশ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়।

আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানদের বলেছি, মাদকের টাকার একটা বড় অংশ সহজেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন হয়। কক্সবাজারে কোন ইন্ডাস্ট্রি নেই, আছে শুধু ট্যুরিজম, তাহলে ওইখানে টাকা যাবে না, ওখান থেকে টাকা আসবে। যদি বেশি যায় তাহলে সেটা কোথায় যায় কেন যায়? এটা আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকেও চিঠি লিখেছি, অন্যান্য সংস্থাদেরও জানিয়েছি। আমরা তাদের সহযোগিতা চাই।

আসলে এগুলো গোপন করার কিছু নেই দেশ ও জাতির স্বার্থে খোলা মন নিয়ে আমাদের এ সহযোগিতা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন সংস্থার তৈরি মাদকের গড ফাদারদের তালিকা বিষয়ে জানতে চাইলে র‍্যাব প্রধান বলেন, আমাদের দেশে আইনের শাসন আছে, আমরা গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করি। মাদকের তালিকা দেখে গ্রেফতার করে কাউকে আমি আদালতে পাঠাতে পারি না, তার বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ দরকার আছে।

কক্সবাজারে মাদকের আমদারিকারকদের ধরতে গিয়ে যদি আমরা দেখি তাদের কোন ঊর্ধ্বতন মহলের লোকজন কিংবা প্রভাশালী ব্যক্তি শেল্টার দেয়। তবে সেসব ব্যক্তিদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলেও জানান তিনি।

কালের আলো/এনএম