শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালকে ঘিরে মহাকর্মযজ্ঞ
প্রকাশিতঃ 10:57 am | March 06, 2022

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
এ এক মহাকর্মযজ্ঞ। প্রতিদিন কাজ করছেন ৫ থেকে ৬ হাজার শ্রমিক। দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন পুরোদমে। যেন দম ফেলারও ফুরসত নেই।
প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ ও দিকনির্দেশনায় কাজ চলছে পুরোমাত্রায়। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরেই নির্মাণকাজ শেষ করতে চলছে ব্যাপক তোড়জোড়। নির্মাণে খরচা হচ্ছে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
পুরো বিষয়টি মনিটরিং করছেন স্বয়ং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান। বহুল কাঙ্ক্ষিত এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রেখেছেন তিনি।
জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, এই বিমানবন্দর হবে বিশ্বের দৃষ্টিনন্দন ও অত্যাধুনিক বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে একটি। মহামারি করোনার সংক্রমণের মাঝেও এটির নির্মাণ কাজ প্রায় ৩০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান হয়েছে দেশের বৃহত্তম বিমানবন্দরটির তৃতীয় টার্মিনাল।’
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তারা বলছেন, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে এই বিমানবন্দরকে। নির্মাণকাজ শেষ হলে বছরে দুই কোটির বেশি যাত্রী এই বিমানবন্দর দিয়ে দেশ-বিদেশে চলাচল করতে পারবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও এগিয়ে চলছে নির্মাণকাজ। এখানে কোভিডে আক্রান্ত শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য এই টার্মিনালের পাশেই রয়েছে আইসোলেশন ও মেডিকেল টিমের ব্যবস্থা। এতে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন কয়েকজন চিকিৎসকসহ একদল স্বাস্থ্য কর্মী।
বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, স্ট্রাকচার দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর আউটসাইড মেটারিয়াল এবং অপারেশন ইকুইপমেন্টগুলো আসবে। প্রতিটি বিল্ডিংয়ের সঙ্গে অনেকগুলো সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। এটার সঙ্গে আছে ব্যাগেজ হ্যান্ডেল সিস্টেম, লিফট, ফায়ার সিস্টেম ও মুভিং ওয়ার্কার্স। সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে বিল্ডিং ডিজাইন। ডিজাইন মোতাবেক ঠিকমতো কাজ হচ্ছে কিনা, তা পরিবীক্ষণের জন্য প্রতিনিয়ত স্থপতির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। টার্মিনালে ঢুকে যেন দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে না হয়, সেজন্য এ টার্মিনালে থাকছে ১১৫টি চেকইন কাউন্টার। নতুন করে তৈরি হচ্ছে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ। বহির্গমন ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকছে ৬৪টি।
এ ব্যপারে বেবিচকের সিনিয়র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান জানান, নতুন এই টার্মিনাল নির্মাণের সমান্তরালভাবে আরও চারটি কাজ হচ্ছে। রানওয়েতে উড়োজাহাজের চাপ কমাতে তৈরি হচ্ছে দুটি হাইস্পিড ট্যাক্সিওয়ে। পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য দুটি বিশাল ভবনের নির্মাণও এগিয়ে চলেছে। বছরে দুই কোটি যাত্রীসেবা দিতে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তৈরি হচ্ছে তিনতলা ভবন।
তিনি বলেন, মেইন টার্মিনাল বিল্ডিংয়ের কাজ হচ্ছে, অ্যাপ্রনের কাজ হচ্ছে। ট্যাক্সি ট্র্যাক, কার্গো টার্মিনাল এবং হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগ সড়কের কাজও এগিয়ে চলেছে।
কালের আলো/এসবি/এমএম