করোনার টিকাদানে বিশ্বে চমক দেখিয়েছে বাংলাদেশ
প্রকাশিতঃ 10:52 am | March 13, 2022

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, অ্যাকটিং এডিটর :
যতো টাকা লাগুক ভ্যাকসিন কিনে দেশের সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদানের অঙ্গীকার করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন অনেকেই ভেবেছিলেন কথার কথা। কিন্তু নিজের দূরদর্শীতায় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রমাণ করেছেন আশ্বাস-প্রতিশ্রুতি নয় বাস্তবায়নের অনুপম নজিরই স্থাপন করেন তিনি। টিকা নিয়ে দেশীয়-আন্তর্জাতিক রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে ভ্যাকসিন কূটনীতিতে রীতিমতো ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
বিনামূল্যে টিকা দিয়ে বিশ্বে বিরল এক দৃষ্টান্তও স্থাপন করেন সরকারপ্রধান। করোনার টিকা কেনা ও টিকাদান কার্যক্রম মিলে এখন পর্যন্ত ব্যয় করেছেন ৪০ হাজার কোটি টাকা। বিপুল অর্থের দিকে না তাকিয়ে শুধুমাত্র দেশের সাধারণ মানুষের সুরক্ষাকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন চতুর্থ মেয়াদে দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ একজন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর গাইডলাইনে এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া ও ডিজি আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সমন্বিত প্রচেষ্টায় টিকাদান কার্যক্রমে প্রায় লক্ষাধিক লোকের বিশাল কর্মযজ্ঞে নিজেদের সক্ষমতার বড় প্রমাণও দিয়েছে বাংলাদেশ। পেয়েছে আশাতীত সাফল্যও।
শুধু তাই নয় একদিনে এক কোটি ২০ লক্ষ মানুষকে গণটিকা দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিশ্বে উজ্জ্বল এক উদাহরণ তৈরি করেছে দেশটি। প্রথম ডোজের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে ২২ কোটি ডোজের টিকা দেওয়ার ‘ল্যান্ডমার্ক’ স্পর্শ করেছে। ‘রোল মডেল’ হিসেবেও উপস্থাপন করেছে নিজেদের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী একটি দেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনা প্রয়োজন। সেই হিসাবও ছাড়িয়ে গেছে দেশটি। করোনা টিকার আওতায় আনা হয়েছে দেশের ৭৫ ভাগ মানুষকে।
করোনা মহামারি রুখে দেওয়ায় ব্লমবার্গের হিসাবে ২০০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম! সত্যিই এমন অসম্ভবকে সম্ভব করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের ‘টিম ওয়ার্ক’। আরও প্রায় ৪ কোটি মানুষকে দ্বিতীয় ডোজের আওতায় আনতে ২৮ মার্চ বিশেষ ক্যাম্পেইন পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

অনেক পরিসংখ্যানেই এগিয়ে বাংলাদেশ
জানা যায়, ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে করোনার টিকাদান শুরু করে স্বাস্থ্য বিভাগ। চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি টিকা দেওয়ার দুই বছর পূর্ণ হয়। এরই মধ্যে করোনার টিকাদানে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। করোনার টিকায় প্রথম ডোজের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে। নানা কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে টিকা প্রদানে গতি বাড়ানো হয়।
ঠিকঠাক ভ্যাকসিন প্রয়োগের দৌলতেই দেশে করোনা সংক্রমণের হার দুই শতাংশে নেমে এসেছে। কমেছে শনাক্তের সংখ্যাও। সময়ের গতিধারায় বেশ স্বাভাবিক বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি। টিকাদানের এই বিশাল সাফল্যের পুরো কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীকেই দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
দিন তিনেক আগে টিকাদানে ম্যাজিক ফিগারের আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা এক দিনেই ১ কোটি ২০ লাখ ডোজ টিকা দিয়েছি, যা একটি রেকর্ড। আমরা এ পর্যন্ত প্রায় ২২ কোটি ডোজ টিকা দিতে সক্ষম হয়েছি।
এর মধ্যে সাড়ে ১২ কোটি ডোজ প্রথম, সাড়ে ৮ কোটি ডোজ দ্বিতীয় ও ৫০ লাখ ডোজ বুস্টার ডোজ দিতে সক্ষম হয়েছি। এই টিকাদান কর্মসূচিতে লক্ষাধিক লোক কাজ করছে। এত বড় একটি কর্মযজ্ঞে তেমন কোনো অনিয়ম বা ত্রুটি দেখা যায়নি।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক করোনা ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজ দেওয়ার জন্য দেশে শিগগিরই করোনার বুস্টার ডোজের ক্যাম্পেইনের আয়োজনের কথাও জানান সেদিন। তিনি বলেন, ‘বুস্টার ডোজের সময় হয়েছে, কিন্তু বুস্টার ডোজ নেননি এমন সবাইকে এর আওতায় আনা হবে। আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রশাসনের কর্মীরাও আমাদের সহযোগিতা করছেন।’
এ বিষয়ে মন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গেই উচ্চারণ করেন- ‘আমরা পূর্বেও ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন করেছি। সর্বশেষ ক্যাম্পেইনে একদিনেই এক কোটিরও বেশি মানুষকে আমরা ভ্যাকসিন দিয়েছি। এখনো প্রথম ডোজসহ আমরা অন্যান্য ভ্যাকসিন দিয়ে যাচ্ছি।’
‘টিম ওয়ার্ক’ সফল হওয়ায় টিকাদানে বাংলাদেশের কাঙ্খিত অগ্রগতি
জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, প্রথম দিকে কিছু ভুল-ভ্রান্তি থাকলেও ঠিক সময়েই পূর্ণোদ্যমে ঘুরে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। একটি নির্দিষ্ট দেশের ওপর টিকার নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প বিভিন্ন উৎস থেকে করোনার টিকা সংগ্রহ করে সব শঙ্কা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়। ‘টিম ওয়ার্ক’ সফল হওয়ায় টিকাদানে বাংলাদেশের কাঙ্খিত অগ্রগতিও লক্ষ্য করা গেছে। টিকা প্রদানে বিশ্বের ২০০ টি দেশের মধ্যে অষ্টম স্থান অর্জন করেছে।
জানা যায়, সাধারণ মানুষকে টিকা প্রদান ও গ্রহণে উৎসাহিত করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার নির্দেশে পরিকল্পিত কর্মযজ্ঞে সফলতার স্বাক্ষর রাখেন মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের নেতৃত্বে গোটা স্বাস্থ্য বিভাগ।
বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে টিকা নেওয়ার ব্যাপারে উদ্ধুদ্ধ করা হয়। ইপিআইয়ের মাধ্যমে মা ও শিশুদের টিকাদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সুখ্যাতি ও সক্ষমতা করোনার টিকার কাজে লাগানো হয় বিস্তৃতভাবেই।
প্রথমে রাজধানীর সরকারি সব বড় হাসপাতাল, জেলা শহরের সরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে করোনার টিকাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হলেও পরবর্তীতে ১২টি সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার ওয়ার্ডে টিকাকেন্দ্র করা হয়। তারপর ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেওয়া হয়।
সারা দেশের ইপিআই কেন্দ্রগুলোতে করোনার টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এর বাইরে টিকার আওতায় এসেছেন ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীরাও। গ্রহণ করা হয় গণটিকার কার্যক্রম। পোশাক কারখানার কর্মী, পরিবহন শ্রমিক ও বস্তিবাসীদেরও আলাদাভাবে টিকা দেওয়া হয়। কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের টিকাকেন্দ্রে যাওয়া ও টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিতে।
চলতি বছরের ১০ মার্চ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, এ সময়ে দেশজুড়ে প্রথম ডোজের টিকার আওতায় এসেছেন ১২ কোটি ৫৮ লাখ ৪৮ হাজার ৪৫৩ জন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৮ কোটি ৮৬ লাখ ৪ হাজার ৬১৫ জন। আর বুস্টার ডোজের আওতায় এসেছেন ৪ কোটি ৬ লাখ ৩২ হাজার ৬৫৬ জন। শুধু তাই নয় এখন পর্যন্ত ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের মধ্যে ১ম ডোজের টিকা দেয়া হয়েছে ১ কোটি ৭০ লাখ ৯০ হাজার ১৯৪ জনকে আর দ্বিতীয় ডোজের টিকা পেয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৬৫ হাজার ৮৫১ জন। টিকার আওতায় আসা ভাসমান মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৯০ হাজার ৮১২ জন। এখন পর্যন্ত সুরক্ষা এ্যাপে টিকা পেতে নিবন্ধন করেছেন ৯ কোটি ৭৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৬৪ জন।
পেছনের দৃশ্যপট তিক্ত, তবুও হাল ছাড়েননি মন্ত্রী
করোনার টিকাদানে অনেক অসম্ভবকেই সম্ভব করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে ইতিবাচক সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হন। অথচ এ সময়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে ‘টার্গেট’ করেই নানামুখী অপপ্রচার চালানো হয়। এ সময় কোন রকম লম্ফঝম্ফ না করে ধৈর্য্যরে সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেন মন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর গাইডলাইনে করোনা নিয়ন্ত্রণে অব্যাহত পদক্ষেপে অবশেষে তিনি সফল হয়েছেন। মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় আস্থাই তাকে এই কন্টকাকীর্ণ পথ পাড়ি দিতে প্রবলভাবেই আশাবাদী করে তুলে। এখন মন্ত্রী যখন ব্লুমবার্গের হিসাবে বিশ্বের ২০০ টি দেশের পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের অষ্টম স্থানকে গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করেন তখন অনেকেই হয়তো লজ্জায় নিজের মুখ ঢাকেন। আর ভাবেন, এও তাহলে সম্ভব!
প্রকৃত অর্থেই অন্ধকার শেষে আলোকিত স্বস্তিদায়ক এক বাংলাদেশই তিনি উপহার দিয়েছেন নিজেদের দিন-রাত একাকার করা সমন্বিত প্রয়াসের দৌলতেই। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমও নি:সন্দেহে প্রশংসা পেতে পারেন। তাদের নেতৃত্বেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন দেশের প্রায় লক্ষাধিক স্বাস্থ্যকর্মী।
ঝুঁকির মাত্রা কমলেও মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি
দেখা গেছে, গত দুই বছরে দেশে করোনা সংক্রমণচিত্রে কয়েক দফা ওঠানামা করেছে। দেশে প্রথম সংক্রমণ পরিস্থিতি খারাপ আকার নিয়েছিল ২০২০ সালের মে থেকে জুনে। মাঝে কিছুদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার পর গত বছরের জুন-জুলাইয়ে দেখা দেয় করোনায় দ্বিতীয় ঢেউ। এরপর সাড়ে তিন মাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল। গত বছরের শেষ দিক থেকে অমিক্রনের বিস্তারে শুরু হয় সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ। চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ দিক থেকে সংক্রমণে আবার নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হয়।
করোনার দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় দেশের বেশিরভাগ মানুষই টিকাদানের আওতায় চলে এসেছেন। টিকাদানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এমন বিশাল অর্জনের ফলে ঝুঁকির মাত্রা কমে এসেছে। সব রকমের বিধিনিষেধও তুলে নেওয়া হয়েছে। সংক্রমণ পরিস্থিতি পুরোদমে নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক হলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে। নিয়মিত মাস্ক পরার অভ্যাস ধরে রাখতে হবে।
বুস্টার ডোজের জন্য বিশেষ ক্যাম্পেইনেই নজর মন্ত্রীর
শুধু প্রথম বা দ্বিতীয় ডোজ নয় বুস্টার ডোজের জন্যও বিশেষ ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। যেহেতু চলতি মাসে দ্বিতীয় ডোজের টিকার লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বিশেষ ক্যাম্পেইন পরিচালিত হবে তাই বুস্টার ডোজের ক্যাম্পেন আগামী এপ্রিল মাসেই হতে পারে। আর এর মাধ্যমেই শেষ হবে দেশজুড়ে বৃহদাকারে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি। এরপর নিয়মিতভাবে অন্যান্য টিকার মতোই চলবে এ কর্মসূচিও। প্রত্যেকেই টিকা পাবে তবে তা একেবারেই সীমিত কেন্দ্রে। এতে চলতি বছরের মাঝামাঝিতেই বড় আকারে টিকাদান কর্মসূচিরও সমাপ্তি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নতন রোগী নেই ৪৬ জেলায়
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন শনাক্ত হয়েছেন ১৯৮ জন। গত আড়াই মাসের এ প্রথম একদিনের শনাক্ত নেমে এলো ২০০-এর নিচে। এর আগে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ১২২ জন শনাক্ত হবার কথা জানিয়েছিল অধিদফতর।
ডিসেম্বর থেকেই ধীরে ধীরে ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। ২৭ ডিসেম্বর দৈনিক শনাক্ত তিনশ ছাড়িয়ে যায়। অবশেষে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শনাক্ত নেমে আসতে শুরু করে হাজারের নিচে। তিনশর নিচে নেমে আসে শুক্রবার (১১ মার্চ)— ২৫৭ জন। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সেটা আরও কমে নেমে এলো ২০০- এর নিচে (১৯৮ জন)।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে তিন অঙ্কের রোগী শনাক্ত হয়েছে এক জেলায়— ঢাকা বিভাগের ঢাকা মহানগরসহ ঢাকা জেলায়— ১৩২ জন। দুই অঙ্কের শনাক্ত হয়েছে এক জেলায়, এক অঙ্কের ১৬ জেলায় আর নতুন রোগী শনাক্ত হয়নি ৪৬ জেলায়। চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলায় শনাক্ত হয়েছে ১০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানাচ্ছে, বর্তমানে দেশ করোনার স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে রয়েছে। তবে এ নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক রোবেদ আমিন জানিয়েছেন, করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া আর উপায় নেই। দীর্ঘদিন আমাদের এগুলো মেনে চলতে হবে।
এখনই মাস্ক খুলে ফেলার মতো সময় আসেনি জানিয়ে অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, আমরা দেখেছি, ইতোমধ্যে অনেকেই ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন। তারা ভাবছেন, এর প্রভাব কমে গেছে। রোগী শনাক্ত এবং নমুনা পরীক্ষাও কমেছে। অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না।
কিন্তু ভাইরাসের মিউটেশন হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভাইরাসের এখনও বিবর্তন হতে পারে। নতুন ভ্যারিয়েন্টের শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ওমিক্রনের যেসব নতুন উপধরন রয়েছে সেসব চলে আসার আশঙ্কা থাকবে। আমাদের ঝুঁকিপূর্ণ যে গ্রুপগুলো আছে— ডায়াবেটিস, হাইপার টেনশন, ক্যানসারের রোগী ও যারা স্টেরয়েড পাচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে ওমিক্রনও সিরিয়াস হতে পারে বলে জানালেন অধ্যাপক রোবেদ আমিন।

কালের আলো/এএএমকে/এনএল