সেনাপ্রধানের নির্দেশে তৎপর সেনাবাহিনী, সার্বিক সহযোগিতার অঙ্গীকার জিওসির
প্রকাশিতঃ 11:15 pm | June 05, 2022

বিশেষ সংবাদদাতা ও চট্টগ্রাম প্রতিবেদক, কালের আলো:
সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনারের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জোর তৎপরতা শুরু করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শনিবার (০৪ জুন) রাত থেকেই উদ্ধার অভিযানে বাহিনীটির ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ২৫০ জন সদস্য কাজ শুরু করেন। সেখানে মাঠে রয়েছে একটি বিশেষজ্ঞ দলও।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে অগ্নিনির্বাপণে ও উদ্ধার অভিযানে প্রয়োজনীয় সহায়তার পাশাপাশি ডিপোর বিষাক্ত কেমিক্যাল যেন অন্যত্র ছড়িয়ে না পড়ে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে দেশপ্রেমী এই বাহিনীটি।
আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, ঘটনার পরপরই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড.এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ ২৪ পদাতিক ডিভিশনকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করার নির্দেশ প্রদান করেন। একই সঙ্গে পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এই সহায়তা অব্যাহত রাখার নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।
সেনাপ্রধানের নির্দেশের পরপরই ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ার ও নিরাপত্তা দল সেখানে উপস্থিত হয়। বিস্ফোরণের পর ক্ষতিগ্রস্ত রাসায়নিক সামগ্রী যেন সমুদ্রে ছড়িয়ে না পড়ে, সে ব্যাপারে তারা নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর মিলিটারি পুলিশও সহায়তা করছে। এছাড়াও আহতদের সেবায় সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল টিমও ওই রাত থেকেই নিজেদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। অগ্নিকান্ড আহতদের চট্টগ্রাম সিএমএইচ ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করে দেয়। এছাড়া সেনাবাহিনীর নিজস্ব হেলিকপ্টারে গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় নিয়ে আসে।
আইএসপিআর আরও জানিয়েছে, রোববার (০৫ জুন) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চট্টগ্রামের এরিয়া কমান্ডার ও ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো.সাইফুল আবেদীন। তিনি সার্বিক সহায়তা কার্যক্রম অবলোকনের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
আমাদের চট্টগ্রাম প্রতিবেদক জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের এরিয়া কমান্ডার ও ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো.সাইফুল আবেদীন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের আগুন যতক্ষণ পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ করতে না পারবে ততক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সহযোগিতা করবে বলে দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন।

গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘কনটেইনারগুলো সরানো হচ্ছে, হয়তো কিচ্ছুক্ষণের মধ্যে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসবে। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের যে সক্ষমতা রয়েছে তা দিয়ে রাত ১০টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হবে বলে আশা করছি। অন্ধকার হয়ে গেলে এখানে লাইটার দিয়ে আলোকিত করা হবে। আশা করছি এখান থেকে আর কোনো আহত বা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদিন বলেন, ‘এখানে দুটি ড্রেন ছিল, যা বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত। এই ড্রেন দিয়ে কেমিক্যাল চলে যাওয়ার ঝুঁকি ছিল, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের ইঞ্জিনিয়ার টিম ড্রেনগুলো ব্লক করে দিয়েছে এবং ড্রেন দিয়ে কেমিক্যাল যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া আর কোনো সহায়তা করার প্রয়োজন হলে তা আমরা করবো।’
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় জনগণের পাশে থেকে জনগণের সেবা করে জানিয়ে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদিন আরও বলেন, দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে সব সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে পাশে পাবেন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা এই এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেছে যাতে আরও বেশি জনসমাগম ও নাশকতামূলক কোনো কার্যক্রম পরিচালিত না হয়।’

কালের আলো/বিএস/এমএম