রেণু থেকে বঙ্গমাতা

প্রকাশিতঃ 9:02 am | August 08, 2022

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, অ্যাকটিং এডিটর :

মাত্র ৫৪ বছরের জীবনে ৪ হাজার ৬৮২ দিন কারাভোগ করেছেন ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ জেলজীবনে সংসার, ঘর দূয়ার সামলানোর পাশাপাশি দলও এক হাতেই সামলেছেন মহিয়সী এক নারী। ছিলেন বঙ্গবন্ধুর প্রিয় রেণু। একজন প্রেমময়ী স্ত্রী আবার একজন আদর্শ মাতাও বেগম শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব।

বঙ্গবন্ধুর গোটা জীবনের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হয়েছেন। হিমালয়ের মতোন অবিচল থেকেছেন। সার্বক্ষণিক ভূমিকা রেখেছেন জাতির পিতার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা হিসেবে। শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির পিতা ও বিশ্ববরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হওয়ার পেছনে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেন।

আমৃত্যু ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অফুরান প্রেরণার শক্তি ও উৎস এবং সংগ্রামী জীবনের সাফল্যের নেপথ্য অনুঘটক। দেশ এবং জাতির স্বার্থে অপরিসীম ত্যাগ, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতার কারণেই বাঙালি জাতি তাকে ভূষিত করেছিলেন ‘বঙ্গমাতা’ উপাধিতে। আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী, সেই মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন। বেঁচে থাকলে আজ তাঁর বয়স হতো ৯১ বছর।

১৯৩০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতা হত্যাকারীদের নিষ্ঠুর, বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে তিনিও শাহাদাত বরণ করেন।

মাত্র তিন বছর বয়সে বাবা শেখ জহুরুল হক এবং ৫ বছর বয়সে মা হোসনে আরা বেগমকে হারান বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তার ডাক নাম রেনু। দাদা শেখ কাসেম শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কিশোরী বয়সেই বেগম ফজিলাতুন্নেছার বিয়ে দেন। তখন থেকে বেগম ফজিলাতুন্নেছাকে শাশুড়ি (বঙ্গবন্ধুর মা) সাহেরা খাতুন নিজের সন্তানদের সঙ্গে মাতৃস্নেহে লালন-পালন করেন। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে তিনি প্রাথমিক লেখাপড়া করেন।

বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্বামী বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সর্বান্তকরণে সহযোগিতা করেছেন। বঙ্গবন্ধু জেলে থাকার সময় আন্দোলনের প্রতিটি ঘটনা জেলখানায় সাক্ষাতের সময় বঙ্গবন্ধুকে জানাতেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশ নিয়ে আসতেন।

আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগকে সেই নির্দেশনা জানাতেন, নেপথ্যে থেকে তিনি ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি অনুপ্রেরণা, শক্তি, সাহস, মনোবল ও প্রেরণা জুগিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। এই মহীয়সী নারী জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে দেশ ও জাতির সেবা করে গেছেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গৃহবন্দী থেকে এবং পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী স্বামীর জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা সত্ত্বেওও তিনি সীমাহীন ধৈর্য্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন।

শেখ হাসিনার চোখে ‘আসল গেরিলা’ বঙ্গমাতা
মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ২৫ মার্চের কালো রাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতারের পর বন্দি হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম পাকিস্তানে। কঠিন এই সময়টিতে পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে ঢাকায় সামরিক বাহিনীর প্রহরায় গৃহবন্দি অবস্থায় ছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব।

মহান মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় নিজের অসীম সাহস, দৃঢ় মনোবল ও ধৈর্য নিয়ে তিনি সঙ্কটময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন বুদ্ধিমত্তার সঙ্গেই। ত্যাগের মনোভাব নিয়েই তিনি বঙ্গবন্ধুকে শক্তি ও প্রেরণা জুগিয়েছেন। সঙ্কট থেকে উত্তরণে দিয়েছেন যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। বলা চলে, ঘরে বাইরে বেগম মুজিবই ছিলেন জাতির পিতার পরামর্শক, উপদেষ্টা, সহচর আর নির্ভরতার আশ্রয়স্থল।

শুধু তাই-ই নয়, দেশ ও জাতির কঠিন সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে দলের নেতাদের কাছে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা পৌঁছে দিতেন। দফায় দফায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও শাস্তি-নির্যাতনের প্রবল হুমকি-ধমকিও তাকে কাবু করতে পারেনি। উল্টো তিনি ছিলেন অকুতোভয়। কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্ত কর্মীদের কাছে পৌছে দেওয়ার কাজটির জন্যও তিনি ছিলেন প্রকৃত একজন গেরিলা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নিজের বিভিন্ন বক্তব্যে মমতাময়ী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবকেই ‘আসল গেরিলা’ বলে অবহিত করেছেন। মা নিয়ে বলতে গেলে কখনও কন্ঠ ভেঙে আসে, আবার কখনও গর্বে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে দেশরত্নের দু’চোখ।

২০১৮ সালে বঙ্গমাতার জন্মদিনে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতার জ্যেষ্ঠ সন্তান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমার মা বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব ছিলেন আসল গেরিলা।’

আন্দোলন কীভাবে করতে হবে সেটি তার মায়ের কাছ থেকেই শেখা উল্লেখ করে তিনি সেদিন বলেছিলেন, ‘আমার মা এমন গেরিলা ছিলেন, পাকিস্তানিরা কিন্তু তাকে ধরতে পারেনি। এমনকি কোনও রিপোর্ট লিখতে পারেনি তার নামে। তিনি ছিলেন আসল গেরিলা।’

বিভিন্ন সময়ে দেওয়া বক্তৃতায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নে কীভাবে নেপথ্যে থেকে তার মা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস আম্মার যে মনোবল দেখেছি, তা ছিল কল্পনাতীত। স্বামীকে পাকিস্তানিরা ধরে নিয়ে গেছে। দুই ছেলে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করছে। তিন সন্তানসহ তিনি গৃহবন্দি।

যোগাযোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন। কিন্তু আম্মা মনোবল হারাননি। জাতির পিতার জন্য প্রেরণা, শক্তি এবং সাহসের এক উৎস ছিলেন বঙ্গমাতা। স্বামীর সব সিদ্ধান্তে মানসিক সহযোগিতা ছাড়াও বঙ্গমাতার পরামর্শ অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হয়েছে।’

বঙ্গমাতার দূরদর্শী সিদ্ধান্তই খুলে দেয় স্বাধীনতার পথ
মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের দূরদর্শী একটি সিদ্ধান্তই খুলে দেয় স্বাধীনতার পথ। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু যখন কারান্তরীণ তখনই নানাজনের নানান মতকে আমলে না নিয়ে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর সহযোদ্ধা বঙ্গমাতা গ্রহণ করেছিলেন বিচক্ষণ এক সিদ্ধান্ত।

বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে সরাসরি ‘না’ করে দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের তৎকালীন অনেক নেতা সেদিন এ সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছিলেন। কিন্তু অনড় ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সার্বক্ষণিক এই ছায়াসঙ্গী। প্যারোলে মুক্তি নিয়ে পাক সামরিক বাহিনী সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসতে নিষেধ করেই তিনি সেদিন খুলে দিয়েছিলেন স্বাধীনতার দূয়ার।

৬ বছর আগে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এমন তথ্যই জানিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা’র জ্যেষ্ঠ সন্তান হ্যাটট্রিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আবেগ আপ্লুত কন্ঠে স্মৃতিচারণ করে সরকারপ্রধান বলেছিলেন, ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় বঙ্গবন্ধুকে কারাগার থেকে ক্যান্টনমেন্টে ধরে নিয়ে যায় পাক সামরিক সরকার। ছয় মাস পর্যন্ত তাঁর কোন হদিস ছিল না, আমরা জানতেও পারিনি তিনি বেঁচে আছেন কি না।

এরপরে কোর্টেই বঙ্গবন্ধুকে প্রথম দেখার সুযোগ হয়। তখন পাকিস্তান সরকার আম্মাকে ভয় দেখান, বঙ্গবন্ধু প্যারোলে মুক্তি না নিলে তিনি বিধবা হবেন। আম্মা সোজা বলে দিলেন, কোন প্যারোলে মুক্তি হবে না। নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে কোন মুক্তি হবে না।’

শেখ হাসিনা সেদিন আরও বলেন, ‘আমি মায়ের সিদ্ধান্তের কথা কোর্টে যখন বঙ্গবন্ধুকে জানালাম, তখন অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকেও দেখেছি তারা বলেছেন, তুমি কেমন মেয়ে? বাবার মুক্তি চাওনা? আম্মাকে বলেছে-‘ভাবি আপনি কিন্তু বিধবা হবেন’। আমার মা তখন কঠিন স্বরেই বলেছেন, ‘প্যারোলে মুক্তি নিলে মামলার আর ৩৩ জন আসামীর কি হবে? বঙ্গবন্ধু প্যারোলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। গণঅভ্যুত্থানে পাকিস্তান সরকার আব্বাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাধ্য হয়’।

২০২০ সালে বঙ্গমাতার ৯০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একই বিষয়ে বলেছিলেন, ‘পশ্চিম পাকিস্তানে গোলটেবিল আলোচনায় যোগ দেয়ার জন্য প্যারোলে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির প্রস্তাব দেয়া হলে জীবনের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তা প্রত্যাখ্যান করে তিনি (বঙ্গমাতা) সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সঠিক ও সময়োচিত সিদ্ধান্ত আইয়ুব খানকে (আগরতলা ষড়যন্ত্র) মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছিল এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের পথও বদলে দিয়েছিল।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘তিনি (বঙ্গমাতা) দলকে যোগ্যতার সাথে পরিচালনা করতেন (বিশেষত বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকাকালীন) এবং সঠিক সিদ্ধান্ত দিতেন।’

অমূল্য সেই দলিলের রূপকার বঙ্গমাতাই
বিশ্বের খ্যাতিমান নারী এলিনর রুজেভেল্টের অনেক সাদৃশ্য রয়েছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের। দু’জনেই শৈশবে বাবা-মাকে হারিয়েছেন এবং চাচাতো ভাইকে বিয়ে করেছিলেন। নিজেদের স্বামীর রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। তবে একটি রাষ্ট্রের স্বাধীনতা অর্জনের ক্ষেত্রে বঙ্গমাতা সরাসরি ভূমিকা রাখলেও রুজেভেল্ট সেটি পারেননি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র পাতায় পাতায় রয়েছেন মহিয়সী বঙ্গমাতা। অর্থাৎ, দেশ ও রাষ্ট্রের স্বাধিকার আন্দোলনের অমূল্য এক দলিলেরও নেপথ্য রূপকার বঙ্গমাতাই। ঐতিহাসিক এই গ্রন্থের শুরুটিও তাকে ঘিরেই।

নিজের অর্ধাঙ্গীর প্রতি অসামান্য ভালোবাসা প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধু লিখেছিলেন- ‘আমার স্ত্রী আমাকে কয়েকটা খাতাও কিনে জেলগেটে জমা দিয়ে গিয়েছিল। জেল কর্তৃপক্ষ যথারীতি পরীক্ষা করে খাতা-কয়টা আমাকে দিয়েছেন। রেণু আরও একদিন জেলগেটে বসে আমাকে অনুরোধ করেছিল। “বসেই তো আছ, লেখ তোমার জীবনের কাহিনী”।

একজন গ্রামীণ বধূ থেকে নিজের দূরদর্শীতা ও বিচক্ষণতার মাধ্যমে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব সব কাজেই হয়ে উঠেছিলেন বঙ্গবন্ধুর প্রেরণার স্তম্ভ।

নিজের অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচায় ইতিহাসের ধন্য সেই পুরুষ-বঙ্গবন্ধু রেণুর কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আব্বা ছাড়াও মায়ের কাছ থেকেও আমি টাকা নিতে পারতাম। আর সময় সময় রেণুও আমাকে কিছু টাকা দিতে পারত। রেণু যা কিছু জোগাড় করত বাড়ি গেলে এবং দরকার হলে আমাকেই দিত। কোনো দিন আপত্তি করে নাই, নিজে মোটেই খরচ করত না।

গ্রামের বাড়িতে থাকত, আমার জন্যই রাখত।’বঙ্গবন্ধুর ও তাঁর স্ত্রীর সংসার জীবনে বেগম মুজিব ব্যক্তিগত-পারিবারিক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে বিসজর্ন দিয়ে স্বামীর রাজনীতিকে, মানুষের স্বাধিকার আন্দোলনকেই বেছে নিয়ে অন্যরকম এক আধুনিক নারীর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।

গত বছরের ৭ অক্টোবর একটি অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতাকে নিজের জীবন নিয়ে লিখতে তার স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কীভাবে উৎসাহ দিতেন। সেই থেকেই তিনি লিখতে শুরু করেন এবং যতবার কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পেতেন, তখন মা জেলগেইটে উপস্থিত থেকে আর কিছু না হোক লেখার খাতাগুলো তিনি সংগ্রহ করে রাখতেন।’

ধীরস্থির, বুদ্ধিদীপ্ত, দূরদর্শী, নারীর সাহসী, বলিষ্ঠ, নির্লোভ ও নিষ্ঠাবান এক নারী ছিলেন বঙ্গমাতা। যেকোন সঙ্কটে বা দু:সময়ে প্রেরণা ও সাহস জুগিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। শেখ হাসিনা, শেখ কামাল, শেখ জামালসহ ৫ সন্তানকে যোগ্য করে গড়ে তুলেছিলেন।

তিনি কেবল একজন রাষ্ট্রনায়কের সহধর্মিণী নন, বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের নেপথ্যের অন্যতম অনুপ্রেরণা-দানকারী মহিয়সী। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকেছেন। ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ডের সময়ও জীবনের মতো মরণের সহযাত্রী হয়েছিলেন। তার দেশপ্রেম ও আদর্শ অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে যুগ থেকে যুগান্তরে।

কালের আলো/ডিএস/এমএম