‘যৌন হয়রানি’র অভিযোগ ঢাবি আন্দোলনের নেতার বিরুদ্ধেই

প্রকাশিতঃ 12:22 pm | January 29, 2018

বিশেষ প্রতিবেদক | কালের আলো:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে মেয়েদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে যারা আন্দোলন করছেন, তাদের নেতৃত্বে থাকা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীর বিরুদ্ধে এক বছর আগে উঠা যৌন হয়রানির সুরাহা হয়নি।

নিজ সংগঠনের এক নারী কর্মী লিটন নন্দীর বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে এই অভিযোগ তুলে তোলপাড় সৃষ্টি করলেও ছাত্র ইউনিয়ন এর কোনো তদন্ত করেনি। সংগঠনটি দাবি করছে, ওই নারী কর্মী আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ করেনি। ফলে তারা বিষয়টিতে আগায়নি।

আবার লিটন নন্দী দাবি করেছেন, তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নামলে প্রতিপক্ষ নানা অভিযোগ নিয়ে আসে।

তবে নিজ সংগঠনের নারী কর্মী কীভাবে প্রতিপক্ষ হয়, এই প্রশ্নের জবাব ছিল না ছাত্র ইউনিয়নের নেতাদের কাছে।

২০১৭ সালের মে মাসে ছাত্র ইউনিয়নেরই এক নারী কর্মী লিটন নন্দীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন। ফেসবুকে তিনি লিটন নন্দীর সঙ্গ তার কথোপকথনের স্ক্রিনশটও প্রকাশ করেছিলেন।

তখন ফেসবুকে প্রকাশিত স্ক্রিনশটে দেখা যায়, লিটন নন্দী সেই নারী কর্মীকে নানাভাবে হেনস্থা করছেন। এক পর্যায়ে তিনি তার যৌনাঙ্গের ছবি তুলে সেই নারী কর্মীকে পাঠান।

সে সময় লিটন নন্দীর ইনবক্সে পাঠানো ওই বার্তাটির স্ক্রিনশট বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে যায়।

এই অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় হলেও লিটন নন্দীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে কোনো উদ্যোগই নেয়নি ছাত্র ইউনিয়ন। আর গত ১৫ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে মেয়েদের যৌত হয়রানির অভিযোগ উঠার পর নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বামপন্থীদের আন্দোলনে সামনের সারিতেই আছেন লিটন।

গত ২৩ জানুয়ারি উপাচার্য আখতারুজ্জামানের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতেও ছিলেন লিটন। আর তিনি সেদিন আহত হয়েছিলেন বলেও জানিয়েছে তার ছাত্র সংগঠন।

নিটন নন্দীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কেন তদন্ত করা হয়নি- এমন প্রশ্নে তার সংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের একজন নেতা দাবি করেন, ওই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেনি। তাই তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখেননিন।

জানতে চাইলে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জিলানী শুভ বলেন, ‘আসলে বিষয়টি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছিল যাতে আমাদের নেতৃবৃন্দদের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।’

‘আমাদের নেতৃবৃন্দের দ্বারা কেউ কখনো আক্রান্ত হয় তাহলে তিনি নির্দ্বিধায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবেন। কিন্তু ওই ঘটনায় কোন মেয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ করেননি। তাই আমরা তদন্ত করিনি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লিটন নন্দী বলেন, ‘যৌন হয়রানির অভিযোগটি ছিল সম্পূণরূপে মিথ্যা ও বানোয়াট। এই কাজগুলি করার জন্য অনেক সফটওয়্যার আছে, যে কেউ চাইলে এইগেুলোর মাধ্যমে আর্টিফিসিয়াল চ্যাটিং বক্স তৈরি করতে পারেন, এইসব কাজ করার জন্য তেমন দক্ষ লোকের প্রয়োজন হয় না।’

‘আমরা যখনই কোন গণতান্ত্রিক আন্দোলন করি ঠিক তখনি আমাদের বিরুদ্ধে এই প্রচার চালানো হয়। এটি কখনও রাজনৈতিক শিষ্টাচার হতে পারে না।’

 

আরও পড়ুন:: এক টেবিলে ছাত্রদল-ছাত্র ইউনিয়ন, ফেসবুকে ছবি ভাইরাল

কালের আলো/ওএইচ