‘নির্বাচন আইনানুগ না হলে তা হবে কালো নির্বাচন’
প্রকাশিতঃ 1:40 pm | December 05, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছিল। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সংরক্ষণ ও পরিপালনের পূর্ব শর্ত হচ্ছে আইনের শাসন। আইনের শাসন না থাকলে গণতন্ত্র অর্থহীন হয়ে পড়ে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। এজন্য নির্বাচন আইনানুগ না হলে সেটা কালো নির্বাচন। আমরা কালো নির্বাচন নয়, একটি স্বচ্ছ ও সাদা নির্বাচন করতে চাই।
বুধবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ইলেক্ট্রোরাল ইনকোয়ারি কমিটির সদস্যদের উদ্দেশে ব্রিফিংকালে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচনের ক্ষেত্রে আইনানুগ কথাটির ব্যাখ্যার প্রয়োজন। আইন যদি নিজস্ব খাতে প্রবাহিত না হয় তাহলে তা আইন নয়, আইনের অপলাপ মাত্র। আইনের মূল কথা হচ্ছে, সবার প্রতি সমান আচরণ। ‘আইনের চোখে সবাই সমান’ কথাটি প্রবাদ বাক্যে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আইনের প্রয়োগের ক্ষেত্রে সবাই সমঅধিকার ভোগ করছেন কি-না তাই বিবেচ্য।
ইলেক্ট্রোরাল ইনকোয়ারি কমিটির সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সব আইন স্বচ্ছভাবে প্রয়োগ হচ্ছে কি-না তা নিশ্চিত করতে হবে। আপনারা বিচারক, আপনাদের সবার লিগ্যাল বা আইনানুগ মন রয়েছে। নির্বাচনী ব্যবস্থাপনাকে আইনসিদ্ধ করতে হলে আপনারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। যে কোনো নির্বাচনী বিধি-বিধান, আইন-লঙ্ঘন আমলে নিয়ে কঠোর শাস্তি প্রদানের অধিকার রাখেন। তবে আপনাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যাতে কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি শাস্তি না পায়।
তিনি আরও বলেন, দেশের এক ক্রান্তিকালে আপনারা মহান দায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করতে হবে ইলেক্ট্রোরাল ইনকোয়ারি কমিটির সদস্যদের। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সোনালী ইতিহাস রচিত হতে যাচ্ছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ ও পক্ষপাতহীন হলে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য হবে এক স্মরণীয় আলেখ্য। আইনের শাসনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে আপনাদের ভূমিকা। গণতন্ত্রের যাত্রায় যা জোগাবে অনুপ্রেরণা।
তিনি বলেন, আমরা ভাগ্যবান যে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে যাচ্ছি। এমন নির্বাচন সাধারণতঃ প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়। এমন নির্বাচনে একপক্ষের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা সফল হয়নি। আমি মনে করি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে পক্ষ-বিপক্ষের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ থাকবে।
এ জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার আকাঙ্খা ছিল একটি গণতান্ত্রিক দেশ প্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্রের মূল কথা আইনের শাসন ও সমপ্রয়োগ। স্বাধীনতার মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও সুখী বাংলাদেশের স্বপ্ন রচিত হয়েছিল। শুদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে সেই স্বপ্নকে বাস্তবতায় রূপ দিয়ে আসুন আমরা সবাই মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।’
ইসি সচিব হেলালুদ্দীনের সভাপতিত্বে অুনষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিইসি কেএম নূরুল হুদা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসি রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুক।
কালের আলো/এনএম/এমএইচএ