যুবলীগ চেয়ারম্যানের ‘প্রিয় ফুটবলার’ সালাম মুর্শেদী, পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান শেখ হাসিনাকে
প্রকাশিতঃ 4:34 pm | January 28, 2023

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
মাঠ কাঁপানো ফুটবলার ছিলেন আব্দুস সালাম মুর্শেদী। বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে তাঁর নামটি চিরভাস্বর। দীর্ঘদিন খেলেছেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন দেশকে। ক্রীড়াঙ্গন থেকে থিতু হয়েছেন দেশের রাজনীতিতে। ব্যবসায় সফলতার পর রাজনীতি তাঁর তৃতীয় অধ্যায়। রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য। অনেকের মতো যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশেরও প্রিয় ফুটবলারের তালিকায় রয়েছেন পুরোদস্তুর এ রাজনীতিক।
দিন চারেক আগে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) খুলনা জেলা ও মহানগর যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধকের বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান নিজেই জানান এই কথা। নিজ বক্তব্যে শেখ পরশ একে একে প্রধান অতিথি, আওয়ামী লীগের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রাজনৈতিক অভিভাবক বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনসহ অন্যান্য অতিথিদের যখন সম্বোধন করছিলেন তখন তাঁর কথাতেই উঠে আসে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) জ্যেষ্ঠ এ সহ-সভাপতির বর্ণাঢ্য জীবন।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘অতুলনীয় প্রতিভাসম্পন্ন ও সর্বদিকে দক্ষ এক ব্যক্তিত্ব, যিনি একাধারে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা জাতীয় দলের ফুটবলার; সেন্টার ফরোয়ার্ড। একজন সফল উদ্যোক্তা এবং জনপ্রতিনিধি- যার যেকোন একটি গুণ পেলে অনেকে নিজেকে ধন্য মনে করবেন। তিনি আর কেউ নন, আমার অত্যন্ত প্রিয় প্লেয়ার আব্দুস সালাম মুর্শেদী এমপি।’ সম্মেলনে বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ আব্দুস সালাম মুর্শেদীও শেখ ফজলে শামস পরশকে ‘যুবলীগের প্রাণ’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
ব্যক্তিত্ব ও সাহসিকতায় হিমালয়, ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুক্তি ও একটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে সারাটা জীবনই জেলজুলুম সহ্য করেছেন। স্বাধীনতার পরে যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন আলোর নিশানা দেখিয়ে-সবই উঠে আসে আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বক্তব্যে। তিনি বলছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু লড়াই সংগ্রামের ২৪ বছরে স্বাধীন বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন। ১৪ বছর জেলে ছিলেন। সেই কারণেই আমি আজ সালাম মুর্শেদি, জাতীয় খেলোয়াড় এবং ব্যবসায়ী।
ইস্ট পাকিস্তানের সময় বাংলাদেশ থেকে কোন জেনারেল আমরা দেখিনি, কর্নেলের ওপরে। কোন বিচারপতি ছিল না। স্বাধীনতার পরপরই আমরা যার যার জায়গায় অধিষ্ঠিত। তাই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।’
শক্তিশালী ও সুসংহত খুলনা জেলা ও মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক দক্ষতার প্রশংসা করে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের গত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে অভাবনীয় উন্নয়নের সার কথা তৃণমূলে সাধারণ মানুষের সামনে উপস্থাপনের আহ্বান জানান। এ সময় আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যার সরকারের উন্নয়নের কথা সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারি না।’ বিএনপিকে ‘নালিশ পার্টি’ হিসেবে উল্লেখ করে বিপদে-আপদে জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে বিদেশীদের কাছে ধর্না দেওয়ার প্রবণতারও কড়া সমালোচনা করেন আব্দুস সালাম মুর্শেদী।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিজেদের ভেতরকার মতপার্থক্য ও মতভেদ ভুলে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী করতে ঐক্যবদ্ধ সংগঠনের বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। নিজেদের মধ্যকার মনোমালিন্য চায়ের আড্ডায় শেয়ার না করতেও অনুরোধ করেন।
খুলনা-৪ আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘চায়ের দোকানে রাস্তায় গিয়ে নিজেদের সমালোচনা করেন তাহলে বিএনপি-জামায়াত, বাংলাদেশ নালিশ পার্টি ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীরা এটিকে ইন ক্যাশ করে তুলে ধরে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু কন্যা দিয়েছেন। নালিশ পার্টি এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তাঁরা জনসাধারণের সঙ্গে নেই। ১০ ডিসেম্বর থেকে না কী খালেদার কথায় বাংলাদেশ চলবে! কোথায় খালেদা জিয়া? তারা ধর্ণা দিয়েছে বিদেশিদের কাছে। জনসমর্থন নিন, বাঙালির অসহায় মানুষের পাশে থাকুন।’
‘আওয়ামী লীগ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত রাজনৈতিক দল। ইউনিয়ন, জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন নির্বাচন নিয়ে আমাদের মাঝে মতবিরোধ ও মতপার্থক্য থাকতে পারে। আমরা সেগুলো ভুলে গিয়ে আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে সকলে একসঙ্গে ঐক্যের মাধ্যমে আবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনবো। ৭৫ পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী করবো, ইনশাআল্লাহ’-যোগ করে শেষ করেন এক সময়কার তারকা এই ফুটবলার।
কালের আলো/এমএএএমকে