২৪ ডিসেম্বর থেকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে: ইসি
প্রকাশিতঃ 9:03 pm | December 12, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে ইসি ভবনের মিলনায়তনে এ বৈঠক হবে। বৈঠকে অংশ নেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তা, রিটার্নিং অফিসার, পুলিশ সুপার এবং জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসি।
বৈঠকে চূড়ান্ত করা হবে কবে নামছে সেনাবাহিনী। তবে এই বৈঠকের কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা ২৪ ডিসেম্বর মাঠে নামবেন। ১ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা নির্বাচনী এলাকায় থাকবেন। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালন করবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তারা ডাকলেই তারা ঘটনাস্থল যাবেন।
ইসির সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, বিজিবি, কোস্টগার্ড, র্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সদস্যরা স্ট্রাইকিং ও মোবাইল টিম হিসেবে ২৬ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবেন। ২৯ ডিসেম্বর ৩০০ আসনে সবমিলে ৬৪০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নামবেন। তারা ভোটের পর দুই দিনসহ সবমিলে চারদিন মাঠে থাকবেন।
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, সংসদ নির্বাচনে ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় সাধারণ এলাকা, মেট্টোপলিটন এলাকা এবং উপকূলীয়, দুর্গম ও পার্বত্য এলাকার ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য পৃথক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। দশম জাতীয় নির্বাচনের আদলে এবারও আইন-শৃঙ্খলায় থাকবে তিনস্তরের নিরাপত্তা ছক।
সূত্র জানায়, ভোটকেন্দ্র পাহারার ক্ষেত্রে সাধারণ কেন্দ্রে একজন পুলিশসহ ১৪ জন, মেট্টোপলিটন এলাকার কেন্দ্রে তিনজন পুলিশসহ ১৫ জন এবং দুর্গম ও উপকূলীয় এলাকার কেন্দ্রে দুইজন পুলিশসহ ১৪ জন ফোর্স রাখার বিষয়ে প্রাথমিক পরিকল্পনা রেখেছে ইসি। তবে, ভোটকেন্দ্র সুরক্ষিত রাখতে বাইরে থাকবেন সামরিক-আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। এর মধ্যে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবেন সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। আর র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ান (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), কোস্টগার্ড ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে টহল দেবেন। কিন্তু কেন্দ্রে প্রবেশে অনুমতি লাগবে রিটার্নিং বা প্রিসাইডিং কর্মকর্তার। এ ছাড়া নির্বাচনের বিধি-ভঙ্গ, প্রতিহিংসামূলক বক্তব্য, চরিত্রহনের অপচেষ্টা প্রতিরোধে মাঠে থাকবেন নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা।
ইসির বৈঠকের কার্যপত্রের তথ্যনুযায়ী, এবার একাদশ জাতীয় নির্বাচনে সবমিলিয়ে প্রায় সাত লাখের কাছাকাছি মোতায়েন হবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনী।
এসব বাহিনী ৩০০ সংসদীয় আসনের ৪০ হাজার ১৮০টি কেন্দ্র পাহারা এবং ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৩ জন ভোটারের নির্বিঘ্নে ভোটদানে সহায়তা দিতে কাজ করবেন।
এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ছকে খুব একটা বেশি পরিবর্তন (বৈঠকের কার্যপত্র থেকে) হবে না। তবে, কেন্দ্র বাড়ায় ফোর্সের সংখ্যা বাড়বে। এ নির্বাচনে সব বাহিনী থাকবে; যার ছক নির্ধারণ হবে ১৩ ডিসেম্বর আইশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠকে।
কমিশনের যুগ্ম-সচিব খন্দকার মিজানুর রহমান বলেন, জাতীয় নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ বেশি হলেও ভিআইপি, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, থানা-প্রশাসন শূন্য করে সব নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে এ কাজে যুক্ত করা যাবে না। কীভাবে ফোর্স মোতায়েন হলে সব কূল বজায় থাকবে সেই বিবেচনা নিয়ে আলোচনা হবে বৈঠকে।
আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচনের পরেও কয়েকদিন সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাখতে বলা হয়েছে।
এ ব্যপারে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, সংসদ নির্বাচনের ২ থেকে ৩ দিন অথবা ৭ থেকে ১০ দিন আগে নির্বাচনী এলাকায় সেনাবাহিনী যাবে। ওই সময় নির্বাচনী এলাকায় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডও (বিজিবি) মোতায়েন হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কালের আলো/এএনএ/এমএইচএ