স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর দূরদর্শীতার প্রশংসায় মেয়র আতিক, আবেগঘন উচ্চারণে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা মন্ত্রীর

প্রকাশিতঃ 10:34 pm | February 19, 2023

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

দিনবদল আর পালাবদলের পালায় বদলে যাচ্ছে দেশের বৃহৎ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাইডলাইনে প্রতিনিয়ত খোলনলচে পাল্টে মন্ত্রণালয়টিকে বদলে দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে মন্ত্রীর দূরদর্শী পদক্ষেপের কথা আরও একবার দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারণ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো.আতিকুল ইসলাম। রাজধানীর খালগুলো ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তরে মন্ত্রী তাজুল ইসলামের বিচক্ষণ সিদ্ধান্তের যারপরেনাই প্রশংসা করেছেন মেয়র।

আরও পড়ুন:চওড়া হাসি মিরপুরবাসীর মুখে; ঢাকাকে স্মার্ট সিটিতে রূপান্তরের অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর

তিনি বলেন, ‘মাননীয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই, তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সামারি পাঠিয়েছিলেন, প্রস্তাব করেছিলেন রাজধানীর খালগুলো ঢাকা ওয়াসা থেকে নিয়ে জনপ্রতিনিধিকে দিয়ে দেওয়া হোক। আমি ও দক্ষিণের মেয়র খাল পাওয়ার পর জনগণকে সঙ্গে নিয়ে খালগুলো উদ্ধার করে জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছি। এর ফলে এখানে আর কোন জলজট হয় না। ফ্লাইওভারের মাধ্যমে এখানে আর যানজটও হবে না।’

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর মিরপুরে ইসিবি চত্বর থেকে মিরপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ এবং কালশী ফ্লাইওভার উদ্বোধনে স্থানীয় কালশী বালুর মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সাহসী এ পদক্ষেপের দৌলতে রাজধানীতে জলজটের দীর্ঘশ্বাসের ইতি টানার প্রেক্ষাপটে নগরবাসীর মুখে হাসি ফুটানোর বার্তাই দিচ্ছিলেন উত্তরের নগর সেবক আতিকুল ইসলাম।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্বে সড়ক নেটওয়ার্কে নতুন মাত্রা, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার শপথ পুনর্ব্যক্ত সেনাপ্রধানের

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘বাংলার মানুষের দু:খ-দুর্দশা লাঘবে আলোকবর্তিকা’ উপমায় ভূষিত করেন। তিনি ঢাকার উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলামকে ‘জননন্দিত মেয়র’ ও ‘প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত আস্থাভাজন’ হিসেবেও উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড.এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ’র নেতৃত্বেরও প্রশংসা করেন।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে মেয়র আতিকের গান, উচ্ছ্বাস-করতালি শেখ হাসিনার

বদলে যাওয়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এই অভিভাবক বলেন, ‘বাংলার গর্বিত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন সেনাবাহিনীর গোড়াপত্তন করেন তখন তাঁরা বাংলার প্রতি ইঞ্চি সীমানা হৃদয় দিয়ে রক্ষা করার শপথ নিয়েছিলেন। দেশ-বিদেশে আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছেন। সেই গর্বিত সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।’

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম নিজের বক্তব্যের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্নের কথাগুলো অমিত দৃঢ়তায় তুলে এনে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাংলা মানুষের দু:খ-দুর্দশা দেখে সারাজীবন ত্যাগ শিকার করেছেন। জেল জুলুম, অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার করেছেন। কারা নির্যাতন ভোগ করেছেন। শত নির্যাতন, বাধা বিপত্তিও তাকে রুখতে পারে নাই। বাঙালি জাতির অধিকারের ব্যাপারে কোন আপোস করেন নাই। জেল জুলুম, অত্যাচারের পরে স্বাধীনতার নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করেছেন। স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়বেন। বাংলার দুঃখ-দুর্দশা মানুষের কোন দুঃখ থাকবে না। গ্রামগঞ্জের মা বোনেদের কোন আত্মচিৎকার থাকবে না। আমাদের হাহাকার থাকবে না। খাদ্যের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি হবে, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হবে। আমাদের সামগ্রিক উন্নতির মাধ্যমে আমরা একটা গর্বিত জাতি পাবো। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নকে পূরণ করতে দেওয়া হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পরে ২১টি বছর পর্যন্ত বিপথগামীরা দেশ পরিচালনা করেছেন। জাতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন, অত্যাচার করেছেন ও লাঞ্ছিত করেছেন। উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সকল খাত ধ্বংস হয়েছে। আমরা মিসকিনের জাতি, ভিক্ষুকের জাতিতে রূপান্তরিত হয়েছিলাম। এই দু:খ বেদনা লাঘব করার জন্য প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা আপনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। জাতির জনকের রক্তের উত্তরাধিকার হিসেবে বাংলার মানুষকে আবার ঐক্যবদ্ধ করলেন। সংগঠিত করতে গ্রাম থেকে গ্রামান্তর ঘুরেছেন। মানুষকে শক্তি দিয়েছেন, সাহস জুগিয়েছেন। ৯৬ সালে প্রথম ক্ষমতায় আসেন। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেন। বাংলার প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক করেন। আপনি বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। আপনি একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচনের যাত্রা আরম্ভ করেছেন। অনেক উন্নয়ন হয়েছিল সেই সময়। বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য ২০০১ সালে আপনি ক্ষমতায় আসেননি। আবার উন্নয়নের যাত্রা বিপরীতগামী হয়েছে।’

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বিপথগামীরা দেশের মানুষের হৃদয়কে চুরমার করেছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমাদের জীবিত মানুষকে মৃত্যুতে রূপান্তরিত করেছিল তাঁরা। হতাশাগ্রস্ত জাতিতে রূপান্তরিত করেছিল আমাদের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বুকে ধারণ করে আজকে বাংলাদেশকে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় শামিল করেছেন। সারাবিশ্ব আজকে বলে বাংলাদেশ ইজ দ্যা রুল মডেল অব রেস্ট অব দ্যা ওয়ার্ল্ড, দোস হো আর স্যাপারিং বাই পোপারটি। আজকে বিভিন্ন রাষ্ট্র প্রধানরা আমরা যখন যেখানে যাই আমাদের কাছে তাঁরা জানতে চায় হোয়াটস ইজ দ্যা ম্যাজিক অব এ সিগনিফিকেন্ট ডেভেলাপমেন্ট?

তখন আমরা বলি ম্যাজিক বলে কিছু নেই। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য উন্নত বাংলাদেশ। যে স্বপ্ন দেখেছিলেন মহান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার পথনকশা প্রস্তুত করেছেন। শত বাধা বিপত্তি তাকে থামাতে পারেনি।’

আমাদেরকে ভিক্ষুকের জাতি বানাতে বিএনপি-জামায়াত আবারও ক্ষমতায় আসতে চায় মন্তব্য করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, যারা আপনাকে থামাতে চাচ্ছেন তারা আপনাকে নয় ১৭ কোটি মানুষের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে থামাতে চাচ্ছেন। আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে আজ সারা বিশ্ব সম্মান করে। সকল ন্যায়ের পক্ষে আপনার অবস্থান। সর্বান্তকরণে হৃদয় থেকে বলি, আপনার মন্ত্রীপরিষদ সদস্য হিসেবে নয়, আপনার কর্মী হিসেবে নয়, এদেশের একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে যদি আমি আমার আত্মাকে জিজ্ঞাসা করি, আমার আত্মা আমাকে প্রশ্নের উত্তর দেয়। এই ঢাকা শহর আজ নিরাপদ যতটুকু হয়েছে আপনার নেতৃত্বের কারণে হয়েছে। বাংলার মানুষের উন্নয়ন আপনার নেতৃত্বের কারণেই। বাংলার মানুষ চায় আপনার নেতৃত্ব অব্যাহত থাকুক, দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক। দেশের মানুষের হৃদয়ের ভালোবাসায় আপনি স্থান করে নিয়েছেন। সবাই আপনাকে ভালোবাসে। আপনার নেতৃত্বে আমরা উন্নত বাংলাদেশ পাবো। আপনাকে আল্লাহ দীর্ঘায়ু করুন, আপনি বেঁচে থাকুন।’

কালের আলো/ডিএস/এমএম