ঈদের আগেই পেলেন প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক অনুদান, ‘আপ্লুত’ জাতির সূর্য সন্তানরা

প্রকাশিতঃ 10:03 pm | April 17, 2023

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

লাল-সবুজের জমিনে তাঁরা চিরকালের নায়ক। মহান মুক্তিযুদ্ধের রুদ্ধশ্বাস সমরে তাদের বীরোচিত ভূমিকা মণিমুক্তার মতো ভাস্বর। তাদের কীর্তিতেই টানটান বাঙালির মেরুদন্ড। মহান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে মানবের জাগরণ ঘটা একাত্তরে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছিলেন। জীবনের মায়া ত্যাগ করে শত্রুর মুখোমুখি হয়েছিলেন। মুক্তির জন্য করেছিলেন যুদ্ধ। বাঙালির অব্যক্ত আবেগকে দিয়েছিলেন স্বপ্নের স্ফূর্তি। জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের কখনও ভুলেনি বাংলাদেশ। তাদের কল্যাণে বরাবরই নিরলস বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত বছরের ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ওই সময় রাষ্ট্রনায়ক কুশল বিনিময় করেছিলেন তাদের সঙ্গে। বীর সন্তানদের সমস্যা অবগত হয়েছিলেন। খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ঘর নির্মাণ, চিকিৎসা, আর্থিক সহায়তা, চাকুরিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্যের জন্য আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী মোট ১২ জন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের মোট ২০ লক্ষ টাকা প্রদানের অনুমোদন প্রদান করেন।

সোমবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকা সেনানিবাসস্থ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের মাঝে ২০ লক্ষ টাকার চেক হস্তান্তর করেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। দূয়ারে কড়া নাড়া খুশির ঈদের আগেই এমন আর্থিক অনুদান পেয়ে আবেগ আপ্লুত আর আনন্দধারায় ঢাকা সেনানিবাসে অন্যরকম মুহুর্ত পার করলেন জাতির সূর্য সন্তান ও উত্তরাধিকারীরা।

একাত্তরের সুমহান চেতনায় নিজেদের বীরত্ব, ত্যাগ আর সংগ্রামের চিহ্নে মহিমান্বিত চিত্রপটে জ্বলজ্বল করা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মাঝে এসে মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনিতেই যেন প্রজ্বলিত হয়ে উঠেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। জাতির জনকের কিংবদন্তিতুল্য তীব্র কন্ঠের উচ্চারণের ফলেই মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে মুক্তি সংগ্রামীরা মাতৃভূমি রক্ষায় অকুতোভয়ে লড়াইয়ে নেমে পড়ে, দীপ্তি ছড়িয়ে প্রজ্বলিত করা সংগ্রামের মশাল আর বীরত্বগাঁথা ইতিহাসের সার কথা উঠে আসে পিএসও ওয়াকার-উজ-জামানের জবানীতে।

খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকাররা অনুদান পেয়ে আনন্দ নন্দিত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। ঠোঁটের কোণে হাসি রেখে তারা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা শুধু দেশকেই শত্রুমুক্ত করেনি। নিজেদের সন্তান এবং নতুন প্রজন্মের মনে তাঁরাই মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বীজ বুনে যাচ্ছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের নেওয়া কার্যক্রমে সব রকমের সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীন দেশ দিয়েছিলেন। আর স্বাধীনতার ৫২ বছরের মাথায় তাঁর জ্যেষ্ঠ কন্যার নেতৃত্বে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। এমন ভাবতেই ভরে উঠে মন।’

আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণীর যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতা বর্তমানে বর্ধিত হারে প্রদান করা হচ্ছে। বিশেষ আবেদনের প্রেক্ষিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর নির্মাণ খরচ প্রদান, ফ্ল্যাট বরাদ্দ, মেধাভিত্তিক স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ছাত্রবৃত্তি প্রদান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ের উপর প্রতি বছর ২ জনকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান, কন্যা বিবাহ খরচ বহন, দেশে-বিদেশে চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন, রেশন প্রদানসহ বিভিন্ন ধরণের সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।

কালের আলো/এমএএএমকে