নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কর ফাঁকি, রাষ্ট্রীয় অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ ও জাল-জালিয়াতির চাঞ্চল্যকর তথ্য যখন বেরিয়ে এসেছে ঠিক তখন কথিত এই ‘শান্তিওয়ালা’কে তোপ দেগেছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।

সব নিয়মকানুন ভেঙে আজীবন গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি থাকতে ড. ইউনূসের খায়েশকে ‘লোভ’ হিসেবেই দেখছেন ক্ষমতাসীন দলটির টানা ৫ বারের এই সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বলেছেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংক প্রকৃত পক্ষে একটি বিধিবদ্ধ ব্যাংক, কখোনো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ছিল না। এটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দেশের প্রচলিত ব্যাংকিং আইনের আওতাভূক্ত। আইন অমান্য করে একজন ব্যক্তির ব্যাংকে এমডি পদে থাকার লোভ জাতিকে অনেক মাশুল দিতে বাধ্য করেছে। এমনকি এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেক মহৎ কর্মসূচী ও অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’

শনিবার (০৩ জুন) জয়পুরহাটে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বৃত্তি প্রদান এবং জেলার বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠণসমূহের প্রধানদের সঙ্গে এক উন্নয়ন ও মানবসেবা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় ড. ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ-তত্ত্ব দিয়ে দারিদ্র বিমোচনের অলীক স্বপ্ন, চড়া সুদ নিজের আখের গুছানোর অপতৎপরতার কড়া সমালোচনা করেন জয়পুরহাটের এই ‘শান্তির বরপুত্র’। তিনি বলেন, ‘বেসরকারী উন্নয়ন সহযোগী নয় এমন একটি প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশের এনজিওদের সকল অর্জন একা ছিনতাই করার চেষ্টা করছে। গ্রামীণ ব্যাংকের উচ্চ সূদ হার বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখেনি। বরং দারিদ্র্য বৃদ্ধি করেছে, বহু মানুষের জীবন, সংসার ধ্বংস করেছে।’

দেশে দারিদ্র্য বিমোচনে বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসমূহ অনবদ্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছে, উল্লেখ করে জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘১৯৭২ সালের ৮৪ শতাংশ দারিদ্র্য সীমা আজ ২০ শতাংশের নীচে নেমে এসেছে, অতি দারিদ্র্য সীমা সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে এসেছে। স্বাধীনতা অর্জনের পর এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইতিবাচক অর্জন।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই মহৎ অর্জনের ‘প্রধান কারিগর’ বলেই মনে করেন আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদক। আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘জাতির পিতার কন্যা, জ্ঞানতাপস রাজনীতিবিদ জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর প্রাজ্ঞ-নেতৃত্বে উৎপাদন ও সেবা কর্মে নিয়োজিত সকল সম্মানিত নাগরিক নিজ নিজ অবস্থান থেকে এই মহৎ অর্জনে ভূমিকা পালন করে চলছেন। এই অর্জনে বেসরকারী উন্নয়ন সহযোগী সংগঠণসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।’

জয়পুরহাট শহরের জাকস ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে জয়পুরহাট বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসমূহ সমন্বয় কমিটির সভাপতি নুরুল আমিন রুহুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মণ্ডল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কালাম আজাদ, পিপি অ্যাডভোকেট মোমিন আহমেদ চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম সোলায়মান আলী, মনিরুল শহীদ মুন্না, মিনফুজুর রহমান মিলন, মোস্তাকিম মন্ডল, মেয়র হাবিবুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, শহীদুল আলম চৌধুরী, রাবেয়া খাতুন, সাবেক মেয়র আব্দুল আজিজ মোল্লা, এনজিও প্রধান মতিনুর রহমান, কামরুজ্জামান সাজু, হৈমন্তী সরকার, আয়েশা আকতার, অ্যাডভোকেট ডোনাল্ড দাস প্রমুখ।

কালের আলো/ওয়াইএ/এমকে