বন্ধ হচ্ছে অবৈধ আইপি টিভির নৈরাজ্য, অকুন্ঠ সমর্থন আর অভিনন্দনে ভাসছেন তথ্যমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 3:33 pm | July 05, 2023

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
‘টেলিভিশন’ নাম ব্যবহার করে ধান্ধাবাজ আর চাঁদাবাজদের উৎপাত। ভুয়া পরিচয় পত্র বিক্রির রমরমা বাণিজ্য। লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া। টিভি শব্দটিকে পুঁজি করে নীতিহীন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত ও প্রতারিত করতে ভয়ানক প্রবণতা। রাজধানী থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলা এমনকি গ্রামেও স্বার্থ হাসিলে ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং। বাড়ছে গুজব ও অপপ্রচার। অনুমোদনহীন এসব আইপি টিভির এমন নৈরাজ্য বন্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ।
তিনি শুরুতেই বলেছিলেন, জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা অনুযায়ী কোন আইপি টিভি খবর প্রচার করতে পারে না। চলতি বছরের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে বিশেষ অধিবেশনে জেলায় জেলায় নিবন্ধনহীন আইপি টিভি বন্ধে দেশের সব জেলা প্রশাসককে নির্দেশও দিয়েছিলেন। শুধু বক্তব্য দিয়েই থেমে থাকেননি। রীতিমতো অ্যাকশনে গেছেন মন্ত্রী। ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির আদলে আইপি টিভিগুলোকে সংবাদ প্রচার কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে গত ৩ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। এরপরও নীতিমালা লঙ্ঘিত হওয়ায় প্রায় দু’মাসের মাথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তথ্যমন্ত্রী। যে কথা সেই কাজ।
গত ১৮ জুন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় একটি পত্রের মাধ্যমে দেশের সব জেলা প্রশাসককে অভিযান পরিচালনা করার নির্দেশ প্রদান করে। সেই থেকে জেলার ম্যাজিস্ট্রেটরা ধারাবাহিকভাবে চাঁদাবাজি-হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত অবৈধ আইপি টিভি, ইউটিউব চ্যানেল, ক্যাবল টিভি’র বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। আইপি টিভির নামে চলমান নৈরাজ্য বন্ধে তথ্যমন্ত্রীর সময়োপযোগী ও সাহসী সিদ্ধান্ত দেশের প্রথিতযশা গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের মালিক, মূলধারার সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্বের অকুন্ঠ সমর্থন পেয়েছে। অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছেন প্রখর মেধাবী সৃজনশীল ও পরিকল্পনা গ্রহণে অভিজ্ঞ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ। গত সাড়ে ৪ বছরে এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে সততা দক্ষতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে দারুণ ক্যারিশমা দেখিয়েছেন তিনি। সাফল্যের মাধ্যমেই আস্থা কুড়িয়েছেন সবার।
জানা যায়, অনুমোদনহীন আইপি টিভি, অনলাইন টিভি বা কথিত অনলাইন পোর্টালগুলো গণমাধ্যমের ক্ষতির কারণ হয়ে গেছে। এসব ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠানের কার্ড নিয়ে ‘হঠাৎ সাংবাদিক’ বনে যাওয়া একশ্রেণির চাঁদাবাজরা রীতিমতো কলঙ্কিত করছে সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাকে। এই চক্রের দাপটে নানান ঝামেলায় পড়তে হয় প্রকৃত সাংবাদিকদের। তবে এবার আর এদের শেষ রক্ষা হচ্ছে না। দেশব্যাপী পরিচালিত অভিযানে গত ২৫ জুন চট্টগ্রামে সি-প্লাস টিভি, সি-ভিশন, ২৪ টিভি ও এসবিটিভি নামে অনুমোদনহীন চারটি আইপিটিভির অফিস সিলগালা করে জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট। ঈদের আগের দিন ২৮ জুন সিলেটের পূর্ব জাফলংয়ে দুটি প্রতিষ্ঠানকে যথাক্রমে বিদেশি চ্যানেলের ক্লিনফিড বা বিজ্ঞাপনহীন সম্প্রচারের ব্যত্যয় করার অপরাধে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসার অপরাধে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ঈদের পর গত সোমবার (৩ জুলাই) রংপুরে মোবাইল কোর্ট মেয়াদ উত্তীর্ণ লাইসেন্স ব্যবহারের অপরাধে প্রাইম ক্যাবল নেটওয়ার্ককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে।
অবৈধ আইপি টিভি বন্ধের চলমান অভিযান মূলধারার প্রকৃত সাংবাদিকদের অনীহা-হতাশার কালো আঁধার সরিয়ে আশার আলো ও নব প্রত্যাশা জাগিয়েছে। এমন সুচিন্তিত পদক্ষেপ গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সরকারের জনপ্রিয়তাকে তুঙ্গে নেওয়ার পাশাপাশি গণমানুষের হৃদয়কেও স্পর্শ করেছে। চলমান অভিযানে আপসহীন নীতিতে অটল রয়েছেন তথ্যমন্ত্রী। ফলশ্রুতিতে দেশের টেলিভিশন চ্যানেল মালিকদের সংগঠন ‘এটকো’, সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন-সিইউজে, সম্প্রচার গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন। সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকেও ‘আন্তরিক অভিনন্দন’, ‘হাজারো সালাম’ এবং ‘স্যালুট’ জানানো হচ্ছে মন্ত্রীকে।
এর আগেও বিদেশি টিভি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনমুক্ত বা ক্লিনফিড সম্প্রচার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ক্লিনফিড অনুষ্ঠান চালানোর উদ্যোগ কার্যকরের ফলে দেশীয় টেলিভিশন শিল্পের আর্থিক সংকট অনেকটা কমেছে। দেশের অর্থনীতি, শিল্পী, সংস্কৃতি ও মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি ব্যাপকভাবে লাভবান হয়েছে মন্ত্রীর যুগান্তকারী উদ্যোগে। এই বিষয়টিতেও ওই সময় বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে মন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন।
কালের আলো/এমএএএমকে