সপ্তমবার ওয়াসার এমডি পদে নিয়োগ; ইতিহাসের পাতায় দীপ্যমান তাকসিম এ খান
প্রকাশিতঃ 9:30 pm | August 03, 2023
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
তাঁর ভুবনে অনন্য এক গৌরব! শ্রম, দক্ষতা আর বিচক্ষণ নেতৃত্বগুণে বরাবরই মেলে ধরেছেন নিজেকে। টানা ৭ বার ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে ইতিহাসের পাতায় নিজেকে দীপ্যমান করেছেন তাকসিম এ খান। অর্জন করেছেন শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট। বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) স্থানীয় সরকার বিভাগের পানি সরবরাহ শাখার উপসচিব মুস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে আগামী তিন বছরের জন্য তাকে পুনর্নিয়োগের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা ওয়াসাকে ঘুরে দাঁড়ানোর এই রূপকার উৎপাদিত পানির সিস্টেম লস শতকরা ৪০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নিয়ে এসেছেন। পানির গতি প্রবাহ ও উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পাশাপাশি রাজধানীর পানি উৎপাদনে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছেন। চাহিদার চেয়ে ১০ কোটি লিটার বেশি পানি উৎপাদন করে চমক তৈরি করেছেন। রাজস্ব আয় সাত গুণ বাড়িয়ে ২ হাজার কোটি টাকার মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। একের পর এক দু:খগাঁথার ভার বইতে বইতে ক্লান্ত ঢাকা ওয়াসাকে জাগিয়ে তুলেছেন স্বপ্নীল আবেশে, ভুবনজয়ী হাসির ফোয়ারায় আর ভরা পূর্ণিমার আলোয়!
পুরস্কারও পেয়েছেন হাতেনাতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আপত্য স্নেহের অধিকারী হয়েছেন। আস্থা আর বিশ্বাস অর্জন করেছেন প্রধানমন্ত্রীর। নিজেকে নিয়ে গেছেন নতুন উচ্চতায়। অনেক প্রাপ্তির পরেও দেশবিরোধী সমালোচকগোষ্ঠীর হৃদয় এফোঁড়-ওফোঁড় করা গল্প পেরিয়ে সাফল্যের নতুন সূর্যোদয়ে উদ্ভাসিত করে আগামী তিন বছরের জন্য তাকসিম এ খানকে পুনর্নিয়োগের আদেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের বৃহস্পতিবারের (৩ আগস্ট) প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন ১৯৯৬-এর ২৮(২) ধারা মোতাবেক তাকসিম এ খানকে তার বর্তমান চাকরির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর থেকে তিন বছরের জন্য ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে পুনর্নিয়োগ করা হলো। আগামী ১৪ অক্টোবর তাকসিমের বর্তমান মেয়াদ শেষ হবে।
এর আগে গত ১১ জুলাই ঢাকা ওয়াসার বোর্ড সভায় তাকসিম এ খানকে আরও তিন বছরের জন্য নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। প্রস্তাবটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে প্রস্তাবের সারাংশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার পরেই তাকসিম এ খানের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে প্রথমবারের মতো নিয়োগ পেয়েছিলেন তাকসিম এ খান। এরপর পাঁচ দফায় তার মেয়াদ বাড়ানো হয়। আগামী ১৪ অক্টোবর তার ষষ্ঠবারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের সাফল্যের অনবদ্য স্বীকৃতিতে আনন্দ-উচ্ছ্বসিত সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাঁরা বলছেন, কর্মগুণেই আলো ছড়িয়েছেন একজন তাকসিম এ খান। নিজেকে প্রমাণ করেছেন বারবার। তাঁর প্রাজ্ঞ নেতৃত্বেই ঢাকা ওয়াসা পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় এখন ‘রোল মডেল’। স্মার্ট পানি ব্যবস্থাপনার যাত্রাও শুরু হয়েছে তার হাত ধরেই। ডিস্ট্রিক্ট মিটার এরিয়া বা ডিএমএ নামে একটি নেটওয়ার্ক পদ্ধতির মাধ্যমে ঢাকাকে ১৪৫টি ক্লাস্টারে ভাগ করেছেন। এতে করে ২৪ ঘণ্টা এলাকাগুলোয় পানি থাকে। পানির জন্য কোন হাহাকার নেই। ৯০ ভাগ স্বচ্ছ পানি সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে ঢাকা ওয়াসা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজধানীবাসীর পয়ঃপরিশোধন করে পরিবেশ উপযোগী করতে একটি মেগা প্রকল্প নিয়েছে ঢাকা ওয়াসা। ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন। দেশে এটিই প্রথম এমন সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। প্রতিদিন ৫০ মিলিয়ন লিটার পয়ঃশোধন ক্ষমতাসম্পন্ন দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম একক পয়ঃশোধন কেন্দ্র (এসটিপি) এটি। যা রাজধানীর আশপাশের নদীগুলোকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের গাইড লাইনে নদীগুলোকে বাঁচাতে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আরও একবার চ্যালেঞ্জে উত্তীর্ণ হয়েছেন তাকসিম এ খান।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দূরদর্শিতা, বিচক্ষণতা এবং প্রজ্ঞায় যে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন তা আরেকবার প্রমাণ করলেন কাজের মানুষ তাকসিম এ খানকে সপ্তমবার ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে নিয়োগ দিয়ে। বিভিন্ন নিন্দুক এবং সমালোচকরা নানা রকম কথা বলছিলেন। এমনকি কিছু কিছু জ্ঞানপাপীও আকারে ইঙ্গিতে তাকে নিয়ে বিভিন্ন কথা বলেছেন। কিন্তু গুজব আর মিথ্যাচারকে প্রত্যাখ্যান করেই ঢাকা ওয়াসার নেতৃত্বে তাকসিম এ খানের ওপরেই আস্থা রেখেছেন চারবারের সরকারপ্রধান।
কালের আলো/জিকেএম/এমএইচ