রণ কৌশল মাথায় রেখে নিজেদের প্রস্তুতের নির্দেশ সেনাপ্রধানের

প্রকাশিতঃ 9:49 pm | September 18, 2023

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

ভবিষ্যতের প্রযুক্তি ও রণ কৌশল মাথায় রেখে নিজেদের প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড.এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ স্মার্ট হচ্ছে, সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেনাবাহিনীকেও স্মার্ট হতে হবে। ভবিষ্যতের টেকনোলজি, রণকৌশল ও বিশ্বপরিস্থিতিকে মাথায় রেখে আমাদের নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।’

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বরিশাল শেখ হাসিনা সেনানিবাসে সৈনিকদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ এই বার্তা দেন সেনাপ্রধান। সেনা সদস্যদের আত্মত্যাগের মানসিকতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান তিনি বলেন, ‘কষ্ট করার জন্যই আমরা সেনাবাহিনীর এই চ্যালেঞ্জিং পেশা বেছে নিয়েছি। নিজেদের প্রস্তুত করে দেশে বিদেশে সরকারের যেকোন দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে মানুষের কাছে আমাদের নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে সক্ষম হবো বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’

নিজেদের পেশাগত মানের উদাহরণ টেনে জেনারেল ড.এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অনেক অর্জন করেছে। আমরা জাতিসংঘে এক নম্বর শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। এটা আমাদের পেশাগত মানের একটা উদাহরণ। আমাদের এই অর্জনে খুশি হয়ে থেমে থাকলে হবে না আরও এগোতে হবে। সারাবিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের এগোতে হবে।’

সেনাপ্রধান শেখ হাসিনা সেনানিবাসের অন্যান্য পদবির সেনাসদস্যদের জন্য ১১২টি ফ্ল্যাট বিশিষ্ট একটি ১৫তলা পারিবারিক বাসস্থান ‘সেনানীড়’ উদ্বোধন করেন। এছাড়াও তিনি শেখ হাসিনা সেনানিবাসে গ্যারিসন কেন্দ্রীয় মসজিদ’সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার উদ্বোধন করেন। পরে তিনি স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করেন।

এ সময় সেনাপ্রধান আরও বলেন, ‘এই স্থাপনাগুলো তৈরির মাধ্যমে আপনাদের (সেনাসদস্যদের) জীবনযাত্রার মান আগের চেয়ে আরামদায়ক হবে। এটি আপনাদের মনোবল বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। উঁচু মনোবল থাকলে তখনই আপনারা সঠিক প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন এবং আপনাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারবেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দায়িত্ব হলো সেবা করা, বহিঃশত্রু থেকে দেশকে রক্ষা করা।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান তাঁর মূল্যবান বক্তব্যে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তোলার পাশাপাশি একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী সেনাবাহিনী গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সুযোগ্য ও গতিশীল নেতৃত্বে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে চলেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়াও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অকুতোভয় বীর সেনানীরা জাতীয় যেকোন দুর্যোগ মোকাবিলায় অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য সদা প্রস্তুত রয়েছে বলেও তিনি তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

এ সময় ৭ম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ও বরিশালের এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা, সেনা সদর ও বরিশাল এরিয়ার ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার মধ্যবর্তী পায়রা নদী সংলগ্ন লেবুখালীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই সেনানিবাসের উদ্বোধন করেন। এটি দেশের ৩১তম সেনানিবাস। ‘শেখ হাসিনা সেনানিবাস’ বাংলাদেশ সরকারের বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে আধুনিকায়নের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ এর অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। শেখ হাসিনা সেনানিবাস হচ্ছে একটি পরিকল্পিত সেনানিবাস। এটি ১ হাজার ৫৩২ একর জুড়ে বিস্তৃত।

কালের আলো/এমএএএমকে