নতুন আইজিপিকে স্বত:স্ফূর্ত ভালবাসার স্বাক্ষী পুলিশ সদর দপ্তর
প্রকাশিতঃ 7:08 pm | February 07, 2018
অ্যাক্টিং এডিটর, কালের আলো:
সবে সন্ধ্যা হয়েছে। গণভবনে রাষ্ট্রীয় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। ফুলে ফুলে ভরে গেছে অপেক্ষমান কক্ষ। সেখানো তখনো ভিড়। ফুল নিয়ে নতুন এ পুলিশ প্রধানকে শুভেচ্ছা জানাতে বসে আছেন অনেকেই। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান হওয়ায় আইজিপি’র হাতে আবার সময়ও কম।
কিন্তু নিছক ভালবাসার বহি:প্রকাশ ঘটাতেই যারা এতোদূর থেকে এসেছেন কেবলমাত্র শুভেচ্ছা বিনিময় করতে তাদেরই বা হতাশ করেন কী করে? ফলে হাসিমুখে ফুলের তোড়া গ্রহণ করে, ছবি তোলার সুযোগ দিয়ে তবেই বেরিয়ে পড়লেন পুলিশ সদর দপ্তর থেকে। ঝলমলে এমন ঘটনা প্রবাহ সোমবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার।
অবশ্য এ দৃশ্যটি একদিনের নয়। পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই শুরু হয়েছে ফুলেল ভালবাসায় সিক্ত হবার পালা। দিনমান পুলিশের নানা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা, প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা, যে কোন সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান দেয়ার পাশাপাশি প্রতিদিনই ফুল হাতে আসা শুভান্যুধায়ীদের শুভেচ্ছাও গ্রহণ করছেন মুগ্ধতা ছড়ানো আচরণে।
নিয়ম-সময় মেনেই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানেও ছুটে চলছেন সমানতালে। পাহাড়সম ব্যস্ততায় দম ফেলারও ফুরসত নেই। আবার কোন বিরক্তি নেই চেহারায়। কর্মগুণে বরাবরই সাফল্যকে সঙ্গী করে পথ চলেছেন। শৈশব থেকে ৩২ বছরের বর্ণাঢ্য চাকরি জীবন, সর্বত্রই কঠিন সব চ্যালেঞ্জেই জিতেছেন বার বার।
হয়তো এসব কারণেই পেশাদার ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির মানুষ ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীকে ঘিরে এক অভূতপূর্ব প্রাণচাঞ্চল্য আর উচ্ছ্বাসে ভরপুর পুলিশ সদর দপ্তরে। সিভিল সোসাইটি থেকে শুরু করে রাজনীতিক, কর্মকর্তা বা সাধারণ মানুষের স্বত:স্ফূর্ত এমন ভালবাসায় হয়তো পুলিশের এ সর্বোচ্চ কর্মকর্তার হৃদয়েও বয়ে যাচ্ছে অবারিত আনন্দের ফল্গুধারা।
সব পেশার মানুষের এতো আবেগ, এতো ভালবাসা ক’জনেরই বা ভাগ্যে জুটে। আর তাই তো পুলিশ প্রধান হিসেবে তাঁর যোগদানের এক সপ্তাহ পরেও পুলিশ প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত এ সদর দপ্তর এখনো যেন উৎসবেরই আবহ। নিজের অনুভূতি আর মানুষের আবেগের বিবেচনায় এসব দিনগুলো স্মরণীয় আর স্বর্ণালী স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়েই থাকার কথা বর্তমান পুলিশ এ পুলিশ প্রধানের।
পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত সদস্যরাও বলছেন, ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীকে বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইজিপি হিসেবে বেছে নেয়ায় পুলিশ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে প্রায় সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে আনন্দটাই আলাদা। আর এ আনন্দের বহি:প্রকাশ ঘটছে কাজের ফাঁকে ফাঁকে সকাল থেকে রাত ফুলেল ভালোবাসায় সিক্ত হবার মধ্যে দিয়ে।
দেখা গেছে, স্মৃতির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে প্রায় সবাই মহান মুক্তিযুদ্ধের সুমহান চেতনায় বিশ্বাসী পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) শুভেচ্ছা জানানোর মুহুর্তটি ক্যামেরাবন্দী করছেন। ফেসবুকে ফুলেল শুভেচ্ছার ছবিও পোস্ট করছেন।
প্রতিদিনই তাঁর এলাকা চাঁদপুর থেকে আওয়ামী লীগ দলীয় নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ঢাকায় আসছেন। তারা ফুল আর মিষ্টি নিয়ে পুলিশ প্রধানকে ভালোবাসায় সিক্ত করছেন। আইজিপি’র দায়িত্ব গ্রহণের আগেও ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী রাজধানীর উত্তরার অফিসার্স কোয়াটার্সের যে বাসাটিতে থাকতেন সেখানেও ফুলেল তোড়া ও মিষ্টি নিয়ে হাজির হতেন অনেকেই।
জানা গেছে, পুলিশের এ সর্বোচ্চ পদটিতে আসার আগে ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর পথের বাঁকে বাঁকে বিছানো ছিল বাধার কাঁটা। এ কাঁটা উপেক্ষা করতে পেরেছেন মূলত নিজের সততা, দেশপ্রেম, কর্মদক্ষতা, প্রজ্ঞা আর বঙ্গবন্ধু কন্যার অফুরান আস্থা-বিশ্বাসের মধ্যে দিয়েই।
পুলিশের প্রতিটি ধাপে ধাপে দৃঢ়, বলিষ্ঠ ও যোগ্য নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। একইভাবে টানা ৯ বছর সামলেছেন পুলিশের বিশেষ শাখা এসবি। দৃঢ়তা ও সাহসের সঙ্গে এ শাখাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জেলজীবনের ওপর লেখা গ্রন্থ ‘কারাগারের রোজনামচা’র প্রকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন একই সঙ্গে।
শুধু তাই নয়, ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত এসবির রেকর্ড রুমে বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে ৬৬ হাজার ক্লাসিফাইড গোয়েন্দা তথ্য বিশেষভাবে সংরক্ষণে তাঁর উদ্যোগী ভূমিকায় সন্তুষ্ট বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মুজিব পরিবারের সদস্যরা।
একই সময়ে ওই শাখার অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাঁর সংস্থার দেয়া গোয়েন্দা তথ্যে জঙ্গিবিরোধী বড় রকমের অভিযান চালিয়ে সাফল্যের মুখ দেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
‘রাউন্ড দ্যা ক্লক’ কাজের মানুষ ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীকে দক্ষ, বলিষ্ঠ ও গতিশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে এসবিকে নিয়ে গেছেন অন্য রকম এক উচ্চতায়।
নতুন আইজিপি ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী অত্যন্ত ধার্মিক। শত কাজের ব্যস্ততার মাঝেও ওয়াক্তমতো তিনি নামাজ আদায় করেন। তাঁর গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, আপসহীন, দৃঢ়চেতা, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বগুণ পুলিশ বাহিনীকে অন্যরকম এক উচ্চতায় নিয়ে যাবে এমন আশাবাদ শান্তিপ্রিয় দেশের মানুষের।
আরও পড়ুন: সরকার পতনের ‘হাস্যকর’ তত্ত্ব : আইজিপি আগেই বলেছেন ‘গুজবে কান দেবেন না’
আরও পড়ুন: নগরবাসীকে ভীত না হয়ে স্বাভাবিক থাকার পরামর্শ আইজিপির
কালের আলো/এএ