অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কী লক্ষ্য বাংলাদেশের?

প্রকাশিতঃ 9:19 pm | November 10, 2023

স্পোর্টস ডেস্ক, কালের আলো:

সেই ২০০৩ থেকে ২০১৯-বিশ্বকাপে পর পর ৪ আসরে সমান ৩টি করে জয় নিয়ে দেশে ফিরে এসেছে বাংলাদেশ। এবার অনেক খারাপ খেলার পরও সে সম্ভাবনা কিন্তু শেষ হয়ে যায়নি।

তবে আগের চারবারের মত তিন জয়ের স্বাদ নিতে হলে অস্ট্রেলিয়াকে শেষ ম্যাচে হারাতেই হবে। যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে রীতিমত কঠিন।
প্রথম ২ ম্যাচ হারের পর মনে হচ্ছিল, এবার অস্ট্রেলিয়া বেশিদূর যেতে পারবে না। কিন্তু যত সময় গড়িয়েছে, অসিরা ততই নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে।

ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার আর মিডল অর্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলরা অস্ট্রেলিয়াকে টেনে তুলেছেন। তাদের উইলোর দৃঢ়তায় ক্রমেই উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়েছে অসিরা।

অস্ট্রেলিয়া হারার আগে হারে না। তাদের সেই পুরোনো চরিত্র দেখা গেছে সবশেষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে। তারা ছিল নিশ্চিত হারের মুখে। এমন জায়গা থেকে মাসল ক্রাম্প হওয়ার পরও হার না মানা ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে সেমিতে পৌঁছে দিয়েছেন ম্যাক্সওয়েল।

ওই জয়সহ একে একে ছয়টি খেলায় জিতে সেরা চারে জায়গা করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। কাজেই শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্যাট কামিন্স বাহিনীর জয়-পরাজয় খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু না।

তবে বাংলাদেশের এ ম্যাচ থেকে পাওয়ার আছে অনেক কিছু। এ মুহূর্তে টিম বাংলাদেশের সামনে একটাই লক্ষ্য, তাহলো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

গতকাল বৃহস্পতিবার নিউজিল্যান্ডের কাছে শ্রীলঙ্কার বড় হারে বাংলাদেশের প্রথম ৮ দলে থাকার পথ সুগম হয়েছে অনেকটা। তবে নিশ্চিত হয়নি এখনও।
কাল শনিবার জিতলে তো কথাই নেই, তখন ৯ ম্যাচে তিন জয়ে বাংলাদেশের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৬। ওই পয়েন্ট নিয়ে শ্রীলঙ্কা আর নেদারল্যান্ডসের ওপরে থাকা একরকম নিশ্চিত হয়ে যাবে।

শেষ ম্যাচে কিউইদের কাছে হার মানা লঙ্কানদের শেষ পর্যন্ত সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৯ ম্যাচে ৪। কাজেই অস্ট্রেলিয়ার সাথে জিতলে বাংলাদেশ টপকে যাবে শ্রীলঙ্কাকে।
আর নেদারল্যান্ডসের বর্তমান পয়েন্টও ৮ ম্যাচে ৪। ডাচদের শেষ খেলা ভারতের সাথে। ওই ম্যাচ আগামী ১২ নভেম্বর। সে খেলার ফলের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে টাইগারদের।

ফর্মের চূড়ায় থাকা ভারতের সাথে হারলে ডাচরা চলে যাবে তলানিতে। তখন অস্ট্রেলিয়ার কাছে মোটামুটি ব্যবধানে হারলেও শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসের ওপরে থেকে বাংলাদেশের সেরা ৮‘এ থাকার সম্ভাবনা থাকবে।

তবে খুব বাজে ভাবে হারলে নেট রানরেট কমে যাবে টাইগারদের। মোটামুটি লড়াই করে হারলে হয়তো শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যানন্ডসের ওপরে থাকা সম্ভব হবে।

কাল পুনের শেষ ম্যাচে অসিদের বিপক্ষে তাই লড়াকু পারফরম্যান্সটাই চায় বাংলাদেশের ভক্ত ও সমর্থকরা। যদিও এখন অসিরা আছে ফর্মের চূড়ায়। অন্যদিকে বাংলাদেশের ব্যাটিং ও বোলিং কোনোটারই অবস্থা বিশেষ ভালো না।

একটা স্বস্তির খবর হলো, আগের ম্যাচে আফগানদের সাথে পায়ের মাসল ক্র্যাম্প করা ম্যাক্সওয়েলের শনিবার খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এটা টাইগার বোলারদের জন্য কিছুটা হলেও স্বস্তির।

তবে টাইগারদের ভালো খেলা নির্ভর করবে মূলত ব্যাটারদের বিশেষ করে ওপেনার ও টপ অর্ডারের ভালো খেলার ওপর। ওপেনিং ভালো হচ্ছে না কোনো ম্যাচেই। তারা যদি ক্লিক করতে পারেন, তবে বাকিদের স্বচ্ছন্দে ও সাবলীল খেলা সহজ হবে।

ওপরের দিকে প্রথম ৩ জনের দুজন না হয় অন্তত একজনের ভালো খেলা ও রান করার ওপর পুরো ব্যাটিং ডিপার্টমেন্টের সাফল্য ও ব্যর্থতা নির্ভর করবে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গত ম্যাচে নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসানের বড় জুটির ওপর ভিত্তি করেই দল পৌঁছে যায় জয়ের খুব কাছে।

শেষ ম্যাচে যদিও অধিনায়ক সাকিব নেই, তারপরও ওপরের দিকে লিটন দাস, নাজমুল শান্ত ও বাকিদের ভালো খেলা এবং ইনিংস লম্বা করা খুব জরুরি। নাহলে আরেকটি বড় হার শেষ করে দিতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্বপ্ন। জয় না হোক, অন্ততপক্ষে হারলেও যেন ব্যবধানটা কম হয়, সেই প্রত্যাশাই টাইগারভক্তদের।

কালের আলো/এসএমআর