স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর পাকিস্তান জিন্দাবাদ থেকে জয় বাংলা
প্রকাশিতঃ 12:01 pm | January 26, 2019
প্রতিবেদক কুড়িগ্রাম, কালের আলো:
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৮ বছর পর কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ১১১ বছরের পুরনো কুয়া থেকে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ লেখাটি মুছে ফেলা হয়েছে। সেখানে ‘জয় বাংলা’ স্থাপনের কাজ চলছে।
উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়। এতে করে মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। কুয়াটিতে পাকিস্তানস্থানের জাতীয় পতাকার প্রতীক চাঁদ-তারা অঙ্কিত ফলকে পাকিস্তান জিন্দাবাদ-মালিক ভোলা মামুদ। ১৩১৩ চৈত্র মাস। মেরামত ১৩৫৭। গ্রামবাসী ও ইউনিয়ন বোর্ড। সৈয়দ উদ্দিন সরকার, পিইউবি লেখা একটি ১১১ বছর আগে তৈরি করা কুয়ার গায়ে।
এই কুয়াকে ঘিরে ইন্দ্রারপাড় নামে পরিচিত কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের আজোয়াটারি গ্রাম। এ পথ দিয়ে যেতে হয় বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ায়।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রব, শফিকুল ইসলাম, ছকিনা বেগমসহ আরও অনেকে জানান, এই এলাকায় বৃটিশ আমলে পানির সংকট ছিল। আর সেই সংকট দূর করতে মৃত ভোলা মামুদ নিজ উদ্যোগে আধাশতক জায়গায় একটি কুয়া নিমার্ণ করেন। সেই থেকে আজ অবধি এই কুয়ার পানি শুকিয়ে যায়নি। এই কুয়ার পানি দিয়ে এখানকার মানুষ খাবার, গোসলসহ সাংসারিক কাজে এখনও ব্যবহার করে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন জানান, প্রাচীনতম কুয়াটি মেরামতের জন্য গত ২০১৭/১৮ অর্থ বছরে এলজিএসপি প্রকল্প-৩ থেকে এর বরাদ্দ মেলে। চলতি বছর দেড় লাখ টাকা ব্যয়ে এটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যেই ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ শব্দটি মুছে ফেলা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই সংস্কারের কাজ শেষ করে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান নাম করণ করা হবে।
এ বিষয়ে জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম টুকু বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে জীবন বাজি রেখে এদেশ স্বাধীন করেছি। সেই দেশের মাটিতেই যদি পাকিস্তান জিন্দাবাদ শব্দটি থাকে এটা খুবেই দুঃখজনক ও লজ্জার। তার পরও স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর কুয়ার গায়ে থেকে পাকিস্তান জিন্দাবাদ শব্দটি মুছে ফেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।
এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাছুমা আরেফিন জানান, কুয়ার সংস্কারের কাজ চলছে। এদেশে পাকিস্থান জিন্দাবাদ লেখাটি থাকবে না। কুয়ার গায়ে পাকিস্থান জিন্দাবাদ লেখাটি মুছে ফেলা হয়েছে। সংস্কারের কাজ শেষ হলে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জয় বাংলা’ নামকরণ করা হবে।
কালের আলো/এএ/এমএইচএ