দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ফ্রন্টলাইনার বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী!
প্রকাশিতঃ 7:08 pm | March 03, 2024
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
নতুন সরকারে দু’দফায় ৪৩ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়ে রীতিমতো চমক দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ শেখ হাসিনার সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারের অগ্রাধিকার বাস্তবায়নের সময়টিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পূর্ণ মন্ত্রী দেননি প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রণালয়টিতে আওয়ামী লীগের তরুণ রাজনীতিক আহসানুল ইসলাম টিটুকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে তাঁর মাধ্যমেই বাজারে স্বস্তি ফেরাতে চান সরকারপ্রধান। এজন্য সব রকমের উদ্যোগ গ্রহণ, বাস্তবায়ন ও বাজার ব্যবস্থাপনাকে ঠিকঠাক করতে গত দেড় মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দায়িত্ববোধ থেকেই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়টির দক্ষতার সঙ্গে সামলে নিচ্ছেন নতুন এই বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।
কাজের মানসিকতা, বাজার ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল করতে প্রচেষ্টা, কথাবার্তায় সংযম প্রদর্শন ও সিন্ডিকেটকে মোকাবিলায় বুদ্ধিদীপ্ত প্রয়াসের নমুনা প্রথম দেড় মাসেই বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আহসানুল ইসলাম টিটুকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছে। সম্ভবত এ কারণেই মন্ত্রণালয়টিতে নতুন করে আর কোন মন্ত্রী যুক্ত করেননি সরকারপ্রধান। আন্ত:মন্ত্রণালয় টাস্কফোর্স থাকলেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ফ্রন্টলাইনার হিসেবে টিটুতেই পুরোপুরি ভরসা রেখে প্রকারান্তরে তাঁর প্রতি বিশেষ স্নেহসিক্ত উপহার দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। ফলে মন্ত্রণালয়টিতে তরুণ এ প্রতিমন্ত্রী পরিপূর্ণভাবে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর উপদেশ মাথায় নিয়ে নিজের আধুনিক চিন্তা-ভাবনার বাস্তবিক প্রয়োগের মধ্যে দিয়ে বাজার ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল করতে ছক কষেই এগিয়ে চলেছেন।
টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসন থেকে টানা দ্বিতীয়বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু এবার প্রথম বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় রাজনৈতিক দল থেকে এটি তাঁর জন্য বিশাল এক প্রাপ্তি। টিটুর বাবা প্রয়াত হাজী মকবুল হোসেন ১৯৯৬ সালে ঢাকা-৯ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। দলীয় রাজনীতিতে তাঁর অবদান ও ত্যাগ তিতিক্ষার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। বাবার দেখানো পথে টিটুও ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি অটুট থেকেছেন।
দেশের পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আহসানুল ইসলাম টিটু ২০১৩-১৪ মেয়াদে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর অভিজ্ঞতা এবার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজাতে পুরোপুরি কাজে লাগাচ্ছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পরপরই ধারণা করা হচ্ছিল আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ক্রমশ পাদপ্রদীপে আনছেন। বাবার ছায়ায় বেড়ে ওঠা এ রাজনীতিক মন্ত্রীত্বের অধ্যায়টিতেও সাফল্যের স্বাক্ষর রাখতে চান। প্রতিমন্ত্রী সম্প্রতি আবুধাবিতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ১৩তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দেন। সেখানে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযুষ গয়ালসহ ৬ দেশের মন্ত্রীদের সঙ্গে তিনি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। আগামী ৫ মার্চ ঢাকায় ডি-৮ সদস্য দেশগুলোকে নিয়ে তৃতীয় ট্রেড মিনিস্টার্স কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।
এক্ষেত্রে প্রথম দেড় মাসে বেশ কয়েকটি বিষয়ে নজর কেড়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। শুরু থেকেই ভোজ্যতেলের বাজার মনিটরিংয়ে তিনি জোর দিয়েছেন। তেলে ভ্যাট-ট্যাক্স কমানোর চিঠি দিয়েছেন। রোববার (৩ মার্চ) থেকে খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১০ টাকা কমে ১৬৩ টাকায় এবং প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৪৯ টাকায় বিক্রি শুরু হয়েছে। খেজুর ব্যবসায়ীদের দাম কমানোর জন্য একমাস সময় দিয়েছেন। বস্তায় আসা জায়েদি খেজুরের দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছেন। চলতি সপ্তাহেই ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আনার বন্দোবস্ত করেছেন। এসবের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা নয় সফলতারই পরিচয় দিচ্ছেন আহসানুল ইসলাম টিটু।
কালের আলো/এমকে/আরআই