২০৪১ সালের মধ্যে বিজিবিও হবে বিশ্বমানের স্মার্ট সীমান্ত বাহিনী: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 11:47 am | March 04, 2024
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, কালের আলো:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে আমরা বিশ্বমানের আধুনিক সীমান্ত বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেজন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন-২০৪১ আমরা প্রণয়ন করেছি। যেভাবে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ করতে চাই, সেরকম বিজিবিও হবে স্মার্ট বাহিনী।
সোমবার (০৪ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টায় বিজিবি সদর দপ্তরের বীরউত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবসের আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। এছাড়া তিনি বিজিবি দিবসের এ অনুষ্ঠানে বীরত্বপূর্ণ ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ৭২ বিজিবি সদস্যকে পদক প্রদান করেন।
বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশ্যে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটি দক্ষ ও শক্তিশালী আধুনিক ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে বিজিবি গড়ে উঠেছে। জল, স্থল ও আকাশ পথেও দায়িত্ব পালনে এখন সক্ষম বিজিবি। আমরা দুটো হেলিকপ্টারও কিনে দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব বিজিবির ওপর। সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি চোরাচালান, মাদক, নারী ও শিশু পাচার বন্ধসহ নানা কাজ অত্যন্ত দায়িত্বের সঙ্গে করে যাচ্ছে বিজিবি। দেশ রক্ষায় সদা জাগ্রত সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বিজিবি।
বিজিবি ডিজি আরও বলেন, দেশের আভ্যন্তরীণ যেকোনো সমস্যায় আগুন সন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানা ঘটনা ঘটেছে। বিজিবির সদস্যরা সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। জানমাল রক্ষায় সব সময় ভূমিকা রাখে। বিজিবি জাতির আস্থা বিশ্বাস অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আন্তদেশীয় সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করার লক্ষ্যে সীমান্তে স্মার্ট ডিজিটাল নজরদারি এবং স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভিলেন্স সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে রাডার স্থাপন করেছে করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, অত্যাধুনিক ও যুগোপযোগী প্রযুক্তি স্থাপনের মাধ্যমে বিজিবির অপারেশনাল বাড়ানোয় কাজ ও দক্ষতার প্রতি তাদের আগ্রহ বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিজিবিকে আরও শক্তিশালী করার জন্য ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন -২০১০’ পাস করেছি। একটি আধুনিক, শক্তিশালী, দক্ষ ও ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে বিজিবি আজ গড়ে উঠেছে এবং এখন জল, স্থল এবং আকাশ পথের দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হয়েছে।
বিজিবির বর্ডার পোস্টও (পদ) বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজিবির পাঁচজন অতিরিক্ত মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পাঁচটি রিজিয়নে বিভক্ত করা হয়েছে। বিজিবির সাংগঠনিক কাঠামোতে নতুন ইউনিট, সেক্টর রিজিয়ন সৃষ্টির ফলে কমান্ড লেভেলে ভারসাম্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটি ইউনিটে দায়িত্বপূর্ণ এলাকা কমে যাওয়ায় সুষ্ঠু সুন্দরভারে সীমান্ত সুরক্ষা, সীমান্ত অপরাধ দমন ও সীমান্তবর্তী মানুষের জানমাল রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারছে। আমরাই প্রথম নারীদের বিজিবিতে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ দিয়েছি। বিজিবির পোশাক পরিবর্তন করেছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে বিজিবিতে সৈনিক পদে মোট ৩৫ হাজার ৫১৭ জনকে নিয়োগ দিয়েছে। ৫৫ হাজার ১৮৭ সদস্যকে বিভিন্ন পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে এবং আমরাই প্রথম বিজিবিতে নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করেছি। এ পর্যন্ত বিজিবিতে ৯৯৬ জন নারী সৈনিক ভর্তি হয়েছে। বিজিবি ভিশন ২০৪১ অনুযায়ী এই বাহিনীতে আরও ১৫ হাজার জনবল নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা যেন আরও উন্নত হয় তার যথাযথ ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ সরকার করে দিয়েছে এবং তাদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমুখী ব্যবস্থাও প্রবর্তন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কালের আলো/এমএইচ/এসবি