লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জয় : অপ্রতিরোধ্য টিটুর সামনে দাঁড়াতে পারেনি কেউ

প্রকাশিতঃ 11:48 pm | March 09, 2024

কালের আলো রিপোর্ট:

নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের ১২৮ ভোট কেন্দ্রের কোথাও তাঁর কোন প্রতিদ্বন্দ্বী পাস করতে পারেননি। এমনকি হেরেছেন নিজেদের বাড়ির কেন্দ্রেও। প্রতিটি কেন্দ্রের ফলাফলে ভোটের ঝড়ে তাদের ধুমড়ে মুচড়ে দিয়েছেন টেবিল ঘড়ি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মো.ইকরামুল হক টিটু। সব মিলিয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে তাঁর জয়ের ব্যবধান গিয়ে ঠেকেছে ১ লক্ষ ৩ হাজার ৮৪১ ভোটে। রূপকথা নয় বাস্তবতা! রাজনীতিতে যাকে বলা যেতে পারে ‘টিটু ক্ল্যাসিকস’। ভোটের মাঠের প্রচারণায় একক আধিপত্য বজায় রেখে ফলাফলেও নিজের সঙ্গে অন্যদের আকাশ ছোঁয়া পার্থক্য গড়ে টিটু আবারও প্রমাণ দিলেন তিনিই প্রকৃত ‘নগর সেবক’।

শনিবার (০৯ মার্চ) অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ইকরামুল হক টিটুর পুনরায় অভিষিক্তিতে তাঁর সামনে বাধার দেয়াল তৈরি করতে পারেনি কেউ। ভোটারদের নিরঙ্কুশ সমর্থনে ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ৬০৪ ভোট পেয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো তিনি নির্বাচিত হয়েছেন মসিক মেয়র। সদ্য বিদায়ী মেয়র ও ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের এই সভাপতির বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী চার মেয়র প্রার্থী সাদেক হক খান মিল্কী টজু, এহতেশামুল আলম, শহীদুল ইসলাম স্বপন মণ্ডল ও মো.রেজাউল হক মিলে পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৩৪৪ ভোট। ঠোঁটকাটা স্বভাবের যারা তাঁরা শনিবার (০৯ মার্চ) রাত থেকেই দিব্যি বলা শুরু করেছেন ‘দড়ি ধরে মারো টান…’, থিওরি জনতার বাঁধভাঙা জোয়ারে খড়কুটোর মতো ভেসে গেছে। ভোটে অপ্রতিদ্বন্দ্বী নায়ক টিটুর এমন রেকর্ড বা রঙিন ইতিহাস সৃষ্টিকারী বিজয় নগরবাসীর স্মৃতিতে থেকে যাবে দীর্ঘদিন। বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই মোটেও।

মেয়র টিটুর নির্বাচনী ফলাফলে প্রতিপক্ষ হতভম্ব ও অবাক হলেও নগরীর বাসিন্দাদের কাছে ফলাফলটি ছিল একেবারেই প্রত্যাশিত। শনিবার (০৯ মার্চ) রাতে নগরীর তাজ বেঙ্গল কমিউনিটি সেন্টার থেকে টাউন হলের অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামের যাওয়ার পথে খোলা গাড়িতে চড়ে যখন টিটু যাচ্ছিলেন তখন সড়কের দু’পাশে, বাড়ির বারান্দায় বা ছাদে সাধারণ মানুষের আকুণ্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত হয়েই মুখায়বে চিরায়ত বিস্তীর্ণ মায়াবি হাসির মোহনায় টইটুম্বর আবেগে জবাব দিচ্ছিলেন অভিবাদনের। মেয়রের বিজয়ের আনন্দ স্পর্শ করেছে প্রতিটি প্রাণে প্রাণে। জনতার হৃদয়গ্রোথিত আবেগ আর বীরত্বে সর্বেসর্বা সিটি মেয়র ইকরামুল হকের সমর্থক সাধারণ ভোটারদের কণ্ঠেও যেন গুঞ্জরিত হচ্ছে—’একদা হাতিশালে হাতি ছিল, ঘোড়াশালে ঘোড়া—এখন সম্বল কেবল শূন্যতায় ভরা।’ বিবর্ণ এমন বর্তমান নিয়ে টিটুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী দলীয় নেতা ও তাদের ‘মেন্টর’ এবার প্রকাশ্যেই রাজনীতির দাবা খেলায় হেরে গেছেন শোচনীয়ভাবেই। নিজেদের নিয়ে গেছেন খাদের কিনারায়।

নগরবাসীর বিশুদ্ধতম ভালোবাসাময় মোহন আনন্দে অপ্রতিরোধ্য ইকরামুল হক টিটু যেন অবগাহন করলেন সাফল্যের সপ্ত সমুদ্রে। সহজেই যদি সব পায়ের কাছে লুটিয়ে পড়ে তাহলে ঘাম রক্তের মূল্য থাকে কতটুকু? তুলির প্রথম আঁচড়েই চিত্র ফুটে উঠলে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চিকে ক’জন মনে রাখতো? রবীন্দ্রনাথ কি প্রথম দিন থেকেই কবিগুরু হয়ে গেছিলেন? চড়াই-উৎরাই না পেরুলে লাইফ বিউটিফুল হয় না। দিগ্বিজয়ী সকল বীরের অপূর্ণতার জাহাজ একদিন পূর্ণতার বন্দরে নোঙর করে! ঠিক তেমনি ধাপে ধাপে নিজেকে প্রমাণ করেই সেই পূর্ণতার গন্তব্যে নিজেকে নামাঙ্কিত করলেন ‘নগর নেতা’ ইকরামুল হক টিটু। পৌঁছে গেলেন সাফল্যের সোনালী তোরণে।

ময়মনসিংহ নগরীর উন্নয়নের বরপুত্র ইকরামুল হক টিটুর জয়ের পর থেকেই উৎসবের নগরীতে রূপ পেয়েছে ময়মনসিংহ। সন্ধ্যা গড়াতেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে ফলাফল নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় খণ্ড খণ্ড মিছিল করেছেন তাঁর কর্মী ও সমর্থকরা। এতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে প্রতিটি এলাকা। রীতিমতো মিছিলের নগরীতে পরিণত হয় ময়মনসিংহ। পাল্লা দিয়ে চলে মিষ্টি মুখ। পরিকল্পিত ময়মনসিংহ নগরী গড়তে টিটুর ওপর ভোটারদের অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস মূলত তাঁর বিগত সময়ের উদাহরণ তৈরিকারী কর্মপ্রচেষ্টারই প্রতিফলন। ‘পরীক্ষিত নগর বন্ধু’ ইকরামুল হক উন্নয়নের ফল দেখেছেন ভোটে। অভাবনীয় এ বিজয় উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট ময়মনসিংহ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্ত:প্রাণ এ রাজনীতিকের সততা, নিষ্ঠা, কঠোর পরিশ্রম একাগ্রতা ও ত্যাগের স্বাক্ষর বহন করছে।

ভোটের মাঠে বার বার বিজয়ের অভিজ্ঞতার বিপরীতে কোন হার নেই ইকরামুল হক টিটুর। স্বভাবতই তিনি নিজের এ বিজয়কে নগরবাসীর বিজয় হিসেবে দেখছেন। বিজয় উৎসর্গও করেছেন নগরবাসীকে। স্মার্ট ময়মনসিংহ গড়ার অভিযাত্রায় তাঁর সঙ্গী হিসেবে চান সবাইকে। সেই স্বপ্ন জয়ের মিশনে পুরোমাত্রায় প্রস্তুত ময়মনসিংহের সিটি মেয়র। অভিবাদন আপনাকে।

কালের আলো/এমএএএমকে