সুস্থ ও সচল ঢাকা গড়তে চান আতিকুল ইসলাম
প্রকাশিতঃ 10:27 am | January 28, 2019
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি ছিলেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপ-নির্বাচন স্থগিত হওয়ার আগেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
এরপর নির্বাচন অনুষ্ঠান বাধামুক্ত হওয়ার পর আবারো আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দের প্রার্থী হিসেবেই মনোনয়ন পেয়েছেন ‘ক্লিন ইমেজে’র ব্যবসায়ী নেতা আতিকুল ইসলাম। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনে প্রতিদ্বন্দ্বী, আনকোড়া এক মনোনয়ন প্রত্যাশীর লম্ফঝম্ফের সময়েও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন এই মানুষটি নীরবই ছিলেন। শোডাউনের জনদুর্ভোগের রাজনীতির পথে না হেঁটে শুধুমাত্র দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়েই মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
অমায়িক ভদ্র, সজ্জন ও বিনয়ী আতিকুল ইসলামের নির্বাচনী স্লোগানই হচ্ছে ‘সবার জন্য সবার ঢাকা।’ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের অপূর্ণ স্বপ্ন পূরণ করার পাশাপাশি অসমাপ্ত কাজগুলোও শেষ করতে চান। সুস্থ, সচল, আধুনিক ও নিরাপদ ঢাকা উপহার দিতেই নিবিষ্ট মনে কাজ করতে চান পারিবারিক ঐতিহ্যের অধিকারী এই ব্যবসায়ী নেতা।
আতিকুল ইসলামের ভাই তোফাজ্জল ইসলাম ছিলেন প্রধান বিচারপতি। তার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি বেঞ্চ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় দেয়। আতিকুল ইসলামের আরেক ভাই মইনুল ইসলাম সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রধান ছিলেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরপরই বিডিআর বিদ্রোহের যে ঘটনা ঘটে, সেই সময় ওই বিদ্রোহ নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো তাঁর।
এই পরিবারের সন্তান আতিকুল ইসলাম মেয়র পদে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পর তাকে নিয়েই নতুন করে স্বপ্ন বুনছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের বিশ্বাস, উত্তর সিটি করপোরেশনকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করলে এবং পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের পাশাপাশি উন্নয়নমূলক কাজে হাত দিলে আতিকুল ইসলাম সফল হবেন।
আনিসুল হকের মতোই বিভিন্ন পরিকল্পনা ও পদক্ষেপের মাধ্যমেই তিনি সফল হবেন। জনমনে প্রশংসা কুড়াতে সক্ষম হবেন। আর কাজ করার অদম্য মানসিকতা রয়েছে আতিকুল ইসলামের। ভোটে নির্বাচিত হলে তিনি সত্যি সত্যিই মডেল উত্তর সিটি করপোরেশন উপহার দিতে পারবেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচিত হলে প্রথমে কোন কাজটি করতে চান এই প্রশ্নের জবাবে আতিকুল ইসলাম বলেন, একটি সুস্থ, সচল, আধুনিক ও নিরাপদ ঢাকা আমার কনসেপ্ট। এটা নিয়েই আমি কাজ করতে চাই। সুস্থ ঢাকা বলতে, আমাদের এখানে অনেক মানুষ অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে, ডিপ্রেশনে ভুগছে। ট্রাফিক জ্যামে আমাদের অধিকাংশ সময় চলে যাচ্ছে। এর ফলে মাল্টিভাইরাল ইফেক্ট পড়ছে মানুষের মধ্যে।
অমিত দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের স্কুলে খেলার মাঠ যেগুলো আছে শিশুদের জন্য, সেগুলো যথেষ্ট নয়। আমরা যত দ্রুত সম্ভব আমাদের খেলার মাঠগুলো আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই। আমরা তাদের একটি খেলাধুলার পরিবেশ দিতে চাই। নতুন প্রজন্ম এবার সরকারকে অনেক বেশি ভোট দিয়েছে। সুতরাং তাদের চাওয়া-পাওয়াটাও অনেক বেশি। আমার মনে হয়, তারা যেটা চায়, অন্যায় কিছু না। তারা চায় একটি খেলার মাঠ।
ট্রাফিক জ্যাম বা খেলার মাঠ নিয়েই শুধু কাজ করতে চান না আতিকুল ইসলাম। তাঁর নজর রয়েছে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার দিকেও। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মহিলাদের জন্য আলাদা বাসের ব্যবস্থা করতে চাই। বাসের রুটগুলোতে দেখা যাচ্ছে একই রুটে অনেকগুলো বাসের মধ্যে কম্পিটিশন। এগুলো থাকতে পারবে না। আমরা যদি এগুলো নিয়ন্ত্রনের মধ্যে আনতে পারি। বিশেষ করে আনিস ভাই যেটা করতে চেয়েছিলেন, সেগুলো বাস্তয়ায়ন করার জন্য আমি কাজগুলো করবো। তার অসমাপ্ত কাজগুলো আমি সমাপ্ত করবো।’
ঢাকার রুটে পাবলিক বাসের রুট নির্দিষ্ট করার পাশাপাশি বাস পার্ক করার জন্য জায়গারও ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আতিকুল ইসলামের। তিনি বলেন, পাবলিক বাস বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রুটের সংখ্যাও বাড়াতে হবে। এজন্য আমাদের ফ্রাঞ্জাইজি আনতে হবে। অবশ্যই পাবলিক বাস বাড়বে।
তিনি বলেন, তাঁর থেকে আমি বেশি জোর দিচ্ছি, আমাদের যে বাসগুলো আছে, সেগুলোর রুট ঠিক করার জন্য। বাসগুলোর মধ্যে কম্পিটিশিনের কারণে বাসগুলো নির্দিষ্টি স্থানে পার্ক করছে না। বিদেশে দেখা যায়, বাস পার্ক করার জন্য নির্দিষ্টি জায়গা রয়েছে। সেখানে তারা পার্ক করছে। আমাদেরও সেই ডিসিপ্লিনগুলো আনতে হবে।’
কালের আলো/এসআর/এএ