ডেঙ্গুতে নতুন করে বাড়ছে আতঙ্ক
প্রকাশিতঃ 10:51 pm | September 02, 2024
কালের আলো রিপোর্ট:
ডেঙ্গুতে নতুন করে বাড়ছে আতঙ্ক। বাড়ছে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব। বলা চলে নতুন করে চোখ রাঙানোর অপেক্ষায় ডেঙ্গু। এ চিন্তায় যেন ঘুম হারাম সবার। বিশেষ করে গত প্রায় আট মাসে সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৮ জন। আর এ সময় আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ২৭৮ জন। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় গড়ে রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩১৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার তথ্য বলছে, সাধারণত জুন থেকে ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হয়। কারণ, এ সময়ে বর্ষাকালের শুরু। বৃষ্টির পানি বিভিন্ন স্থানে জমে থাকে। এর প্রাদুর্ভাব চলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তাই এ সময়টাকে ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশার প্রজননকাল ধরে নেওয়া হয়।
জানা যায়, গত ৮ মাসে আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৯৫ জন এবং গত ২৫ আগস্ট পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন এক হাজার ১০৫ জন। দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, রবিবার (১ সেপ্টিম্বর) সকাল ৮টা থেকে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এ সময় ২৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার শতকরা ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। দেশে এ পর্যন্ত ২৯ হাজার ৪৯৯ জন করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৯ হাজার ৭৯ জন।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে চলতি বছরের ১ জানুয়ারিতে থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেঙ্গু রোগ ইতোমধ্যে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আগামী দিনে এ সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। রোগটি ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব এবং দ্রুত সংক্রমণের সম্ভাবনা বিবেচনায় প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকারের মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিরোধে একযোগে কাজ করছে।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রতিবেদনে জানানো হয়, ঢাকা মহানগরে নতুন রোগী ভর্তি আছেন ১২৭ জন, মৃতের সংখ্যা ৫৬ জন, ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৯৮৭ জন। বর্তমানে (২৫ আগস্ট পর্যন্ত) ভর্তি রয়েছে ৬৭২ জন। মহানগর ছাড়া ঢাকা বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি হয়েছে ১৯ জন, ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা ৮৭৮ জন, ২৫ আগস্ট ভর্তি হয় ৫৮ জন।
ময়মনসিংহ বিভাগের ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি ৭ জন, ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা ১৯৪ জন।চট্টগ্রাম বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় রোগী ভর্তি হয়েছে ৬৮ জন, গত ৮ মাসে মারা গেছে ১০ জন, ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৯৩ জন।
খুলনা বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী ভর্তি হয় ৫৩ জন, মারা গেছে ২ জন, ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা ৫৭৭ জন এবং রোগী ভর্তি ছিল ৯০ জন। রাজশাহী বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় রোগী ভর্তি হয় ৫ জন, ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা ৪৬ জন এবং রোগী ভর্তি ছিল ৫ জন। ওই সময় কেউ মারা যায়নি।
রংপুর বিভাগে নতুন রোগী ভর্তি হয় ৩ জন, ছাড়্পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা ৪৬ জন, রোগী ভর্তি ছিল ৫ জন। এ বিভাগে ওই সময় কেউ মারা যায়নি। বরিশাল বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী ভর্তি হয় ৩৭ জন, মারা গেছে ১০ জন, ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ২১০ জন, ওই সময় ভর্তি ছিল ৯৩ জন।
সিলেট বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় কোনও রোগী ভর্তি হয়নি। তবে আগে ভর্তি রোগী ছাড়পত্র নিয়েছেন ১১ জন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মনিটরিংয়ের জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ‘প্রধান উপদেষ্টার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় ও ত্রাণ তৎপরতা মনিটরিং সেল’ অন্যান্য সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিকভাবে তৎপর রয়েছে।
গণসচেতনতা বাড়াতে সুপারিশ
ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কে গণসচেতনতা বাড়ানো যেতে পারে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে জনসচেতনতা আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পোস্টার, মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সারা দেশে মশাপ্রবণ এলাকগুলোয় জীবাণুনাশক ওষুধ ছিটানোসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
কালের আলো/আরআই/এমকে