দুর্নীতি আর লুটপাটই ছিল শেখ হাসিনার রাজনীতি : মামুনুল হক

প্রকাশিতঃ 10:09 pm | September 26, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

দুর্নীতি আর লুটপাটই ছিল শেখ হাসিনার রাজনীতি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক।

তিনি বলেছেন, দুর্নীতি আর লুটপাটের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেওয়াই ছিল শেখ হাসিনার রাজনীতি। তার রাজনীতি ছিল দেশকে অন্য একটি দেশের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার রাজনীতি।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের মাধবপুর এলাকার পৌর ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

শেরপুরে ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার ও নৈরাজ্যবাদের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে এই গণ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা শফিকুল ইসলাম।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক বলেন, ক্ষমতায় থাকার জন্য ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় শেখ হাসিনার বিভিন্ন বাহিনী দেড় হাজারের বেশি মানুষ হত্যা করেছে। শেখ হাসিনার রাজনীতি ছিল জনতাকে শোষণ ও প্রতিশোধ নেওয়ার রাজনীতি, দুর্নীতি আর লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করার রাজনীতি, বাংলাদেশকে অন্য একটি দেশের একটি অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার রাজনীতি। তার রাজনীতি ছিল বাংলাদেশ থেকে ইসলামকে নির্মূল করার রাজনীতি। বিগত ১৫ বছরে কোনো ইসলামী দলকে সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এভাবে গোটা দেশকে জিম্মি করে, মানুষের অধিকার লুটে নিয়ে, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে এবং অর্থনৈতিক অধিকার কেড়ে নিয়ে গোটা সবাইকে তার দাসে পরিণত করেছিল।

তিনি বলেন, ভারত মাতা আর ভারতের নরেন্দ্র মোদীর চরণতলে বিসর্জন দেওয়ার রাজনীতি ছিল তার। তিনি মনে করেছিলেন, ভারত পাশে থাকলে আর কেউ তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে পারবে না। দুঃখ লাগে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ১৫ বছর বাংলাদেশের মানুষের কোনো অধিকারের কথা চিন্তা করেনি। মানুষের অধিকারকে তারা দুপায়ে দলেছে। তারা বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক না গড়ে শুধু শেখ হাসনিার সঙ্গে গড়েছিল।

তিনি আরও বলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীন দেশে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের রাজনীতি আর কোনোদিন পুনর্বাসিত হতে পারবে না।

মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এ দেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে। সবাই যার যার ধর্মীয় অধিকার ও জানমালের নিরাপত্তার অধিকার ভোগ করবে। এখানে কোনো ধর্মাবলম্বী মানুষকে তার ধর্মীয় অধিকার পালনে বঞ্চিত করার সুযোগ নেই। সংখ্যালঘু মানুষ যেমন তাঁদের ধর্মীয় অধিকার পালনে অটুট থাকবে, তেমনি এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ইসলামী ও মুসলিম জাতিসত্তাও বাংলাদেশে টিকে থাকবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কোনো অজুহাতে বা কৌশলে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বাংলাদেশের মাটিতে পুনর্বাসিত করার উদ্যোগ নেওয়া হলে তা এই মানুষ মেনে নেবে না। আর শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে ইসলামকে নির্মূল করার ও ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করা চলবে না। তাই যে শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়েছে, তা বাতিল ও নতুন করে শিক্ষা কমিশন গঠন করার জন্য আহ্বান জানাই। কারণ ইতোমধ্যে হেফাজতে ইসলামসহ দেশের সব ইসলামী দল এই শিক্ষা কমিশনকে প্রত্যাখান করেছে।

সমাবেশে প্রধান অতিথিসহ আরও বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব জালাল উদ্দিন আহমদ, আতাউল্লাহ আমীন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত জালালী, সহ বাইতুল মাল সম্পাদক ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য হেদায়েত উল্লাহ হাদী হাফিজ আহমেদ, আয়োজক সংগঠনের শেরপুর জেলা শাখার সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, মাওলানা কালিছুর রহমান, ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলাম, ইত্তেফাকুল উলামা, শেরপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি মেরাজ উদ্দিন, তেরাবাজার জামিয়া সিদ্দিকীয়া মাদরাসার মোহতামিম সিদ্দিক আহমেদ প্রমুখ।

কালের আলো/ডিএইচ/কেএ