ট্রাম্পকে ড.ইউনূসের শুভেচ্ছা বার্তা, আরও গভীর সম্পর্কের প্রত্যাশা দু’দেশের

প্রকাশিতঃ 11:38 pm | November 06, 2024

কালের আলো রিপোর্ট:

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিজয় পেয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিজয়ী হয়েই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সোনালী যুগের সূচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ট্রাম্পের এই বিজয়কে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বিশ্বের জন্য বিপজ্জনক এক নতুন যুগের সূচনা বললেও মোটেও দুশ্চিন্তা নেই বাংলাদেশের। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেল জয়ী ড.মুহাম্মদ ইউনূস সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে উন্মুখ হয়ে আছেন বলেও উল্লেখ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ায় বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বুধবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমনটি জানিয়েছেন।

বুধবার (৬ নভেম্বর) এক শুভেচ্ছাবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা ড.ইউনূস বলেছেন, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজয়ে আপনাকে আমি বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আপনাকে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করায় এটাই প্রতিফলিত হবে যে আপনার নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে অনুরণিত হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনার নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমৃদ্ধ হবে এবং বিশ্বজুড়ে অন্যদের অনুপ্রাণিত করা অব্যাহত রাখবে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট অসংখ্য ক্ষেত্রে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের অংশীদারত্ব আরও জোরদার করতে এবং নিরন্তর উন্নয়নের জন্য একসঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি আমি। দৃঢ়ভাবে আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দুটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ অংশীদারত্বের নতুন নতুন পথ অন্বেষণের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। একটি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তোলার প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের সঙ্গে একত্রিত হয়ে সবার জন্য শান্তি, সম্প্রীতি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আপনার প্রচেষ্টায় অংশীদার হতে ও সহযোগিতা করতে আগ্রহী বাংলাদেশের সরকার ও শান্তিকামী মানুষ-যুক্ত করেন তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিবিসি, সিএনএন, নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার ইউএসের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। আমরা তাকে স্বাগত জানাই। আমরা আশা করি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ইউএসএ’র যে সম্পর্ক সেটা আরও উচ্চ শিখরে যাবে। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ভালো সম্পর্ক আছে। আগস্ট অভ্যুত্থানের পর আরও একটু ভিন্নমাত্রা এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র চায় সারা বিশ্বের দেশগুলোতে গণতন্ত্রে থাকুক। বিশ্বের দেশগুলো গণতন্ত্র চর্চা করুক।

তিনি বলেন, ওরা (যুক্তরাষ্ট্র) দেখছে যে আগের ১৫ বছর এক ধরনের স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা ছিল। সেই জায়গা থেকে যে সরকার এসেছে তাদের কাজ হলো ডেমোক্র্যাটিক ট্রানজেকশনে নেওয়া। সেই জন্য তারা উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা আশা করছি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিতে সম্পর্ক আরও গভীর হবে।

প্র্রেস সচিব আরও বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিক পার্টির সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আছে। তাদের টপ লিডারদের অনেকের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে। আমরা আশা করি, তার যেই সম্পর্ক…বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে সম্পর্ক, সেটা আরও গভীরতর হবে।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যুতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা টুইট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘এখন ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন। আগে যখন তিনি টুইট করেছেন তখন উনি ছিলেন রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্সিয়াল ক্যান্ডিডেট। আমরা মনে করি উনাকে (ডোনাল্ড ট্রাম্প) মিস ইনফরমেশন দেওয়া হয়েছে। এখন যেহেতু তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন, তিনি দেখবেন ঘটনাটা কী হয়েছে। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস… বাংলাদেশে কী ঘটনা ঘটছে, তিনি এক্সচুয়াল চিত্রটা জানবেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের এই সরকার কী চাচ্ছে? এরা তো ডেমোক্র্যাটিক ট্রানজিশনে কাজ করছে। ডেমোক্র্যাটিক ট্রানজিশনের ক্ষেত্রে আমরা মনে করি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্পও চাইবেন পুরো বিশ্বে ডেমোক্র্যাসি ছড়িয়ে পড়ুক। সেজন্য আমাদের সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘আমরা আশা করবো বাংলাদেশের যে মাইনরিটি গ্রুপ, তারা যখন রিপোর্ট করবেন, তাদের রিপোর্টগুলো নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অনেক ক্যাম্পেইন হয়। আমরা আশা করবো তারা রেসপনসিবল রিপোর্ট করবেন। যেটা সত্য সেটাই ফুটে উঠুক।’

কালের আলো/আরআই/এমকে