বিএনএসিডব্লিউসি’র ২৩তম সভা, রাসায়নিক দ্রব্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে একযোগে কাজ করার আহ্বান চেয়ারম্যানের
প্রকাশিতঃ 8:14 pm | December 09, 2024
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
শিল্পখাতের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে অবাধ ব্যবহার বাড়ছে রাসায়নিক কেমিক্যালের। সহজলভ্যতা থাকায় তৈরি হচ্ছে নানা কারখানা। অনেকক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়ায় ঘটছে মারাত্মক সব দুর্ঘটনাও। ধ্বংস হচ্ছে বিপুল সম্পদ। ঘটছে বহু মানুষের প্রাণহানিও। কঠিন এমন বাস্তবতায় সশস্ত্র বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশসহ দুর্ঘটনা মোকাবিলায় সাড়াদানকারী সংস্থাসমূহের করণীয় এবং রাসায়নিক নিরাপত্তা সুসংহত করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় কর্তৃপক্ষ, রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশনের (বিএনএসিডব্লিউসি) চেয়ারম্যান ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশে তফসিলভুক্ত রাসায়নিক দ্রব্যসহ দেশের সার্বিক রাসায়নিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করার জন্য আহবান জানিয়েছেন।
সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসস্থ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের মাল্টিপারপাস হলে বাংলাদেশ জাতীয় কর্তৃপক্ষ, রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন (বিএনএসিডব্লিউসি) এর ২৩তম সাধারণ সভায় বিএনএসিডব্লিউসির চলমান কাজগুলো পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এই সাধারণ সভায় বিএনএসিডব্লিউসি’র চেয়ারম্যান ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান সভাপতিত্ব করেন। সভায় তিনি সুচিন্তিত ও সময়োপযোগী বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
চলতি বছরের ২২ আগস্ট সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের (এএফডি) প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান। পদাধিকারবলেই বাংলাদেশ জাতীয় কর্তৃপক্ষ, রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশনের (বিএনএসিডব্লিউসি) চেয়ারম্যানও তিনি। নিজ দায়িত্বে আসীন হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো তিনি এই সাধারণ সভায় যোগ দেন।
আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, এবারের ২৩তম সাধারণ সভায় বিএনএসিডব্লিউসি’র সদস্যসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা এবং বাহিনীসমূহ থেকে মোট ৪৩ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। সভায় বাংলাদেশে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন সংক্রান্ত বিধিবিধান কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২২তম সাধারণ সভার সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশে কেমিক্যাল ওয়ারফেয়ার এজেন্ট সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাহিনীসমূহের গঠিত কেমিক্যাল ডিজাস্টার রেসপন্স টিম (সিডিআরটি) এর সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ চলমান রয়েছে।
আইএসপিআর আরও জানায়, সভায় বাংলাদেশের সার্বিক রাসায়নিক নিরাপত্তা সুসংহতকরণ ও রাসায়নিক দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কে আলোচনার পাশাপাশি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। দেশে তফসিলভুক্ত রাসায়নিক দ্রব্য সংক্রান্ত কার্যক্রম যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহকে বিএনএসিডব্লিউসি’র সঙ্গে নিবন্ধনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়।
তফসিলভুক্ত রাসায়নিক দ্রব্যসহ অন্যান্য সংবেদনশীল রাসায়নিক দ্রব্যের পরিবহনকালীন নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সভায় গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেন বিএনএসিডব্লিউসি’র চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘমেয়াদে মজুদকৃত রাসায়নিক দ্রব্যসমূহের ধ্বংসকরণসহ দেশের সকল বন্দরে রাসায়নিক দ্রব্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা সুসংহত করার ব্যাপারে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। একই সঙ্গে রাসায়নিক দুর্যোগ বা দুর্ঘটনায় হতাহতদের চিকিৎসার জন্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালগুলো প্রস্তুত করা এবং চিকিৎসক ও চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের বিষয়েও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
কালের আলো/এমএএএমকে