চালের উৎপাদন খরচ বেড়েছে, কমেছে চাষীদের লাভ: বিআইডিএস গবেষণা

প্রকাশিতঃ 5:43 pm | December 10, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

দেশে জমির উর্বরতা দিন দিন কমছে। সে সঙ্গে ক্রমশঃ কমে যাচ্ছে শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা। গত ১৯৯১ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত জমির উর্বরতা ছিল ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। তবে ২০০১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত উর্বরতা শক্তি কিছুটা বেড়ে হয়েছিল ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। কিন্তু ২০১১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ব্যাপক কমে উর্বরতা শক্তি ঋণাত্মক (- ০.৪৪ শতাংশ) হয়ে পড়েছে এবং ২০১২ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে উর্বরতা শক্তি আরও বেশি ঋণাত্মক হয়ে দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৩৫ শতাংশ। জমির উৎপাদন বৃদ্ধি নির্ভর করে দক্ষ মানব সম্পদ ব্যবহারের ওপর। তবে সার, কীটনাশক ও ভূগর্ভস্থ পানির অত্যধিক ব্যবহার পরিবেশকে অবনতির দিকে পরিচালিত করছে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এর চারদিনব্যাপী চলমান আন্তর্জাতিক সম্মেলনের শেষ দিনে মঙ্গলবার ( ১০ ডিসেম্বর) আয়োজিত এক সেশনে উপস্থাপিত গবেষণা প্রবন্ধে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এ সম্মেলনে ‘এগ্রিকালচারাল প্রোডাক্টিভিটি অ্যান্ড টেকনিক্যাল এফিসিয়েন্সী ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের রিসার্স ফেলো তাজনোয়ারা সামিনা খাতুন। বিআইডিএস’র সাবেক মহাপরিচালক কাজী সালাউদ্দিন এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

গবেষণায় বলা হয়েছে, চালের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। প্রতিকেজি চালের উৎপাদন খরচ ২০১২ সালে ছিল ১০ টাকা ৫১ পয়সা। সেটি বেড়ে ২০১৫ সালে হয়েছে ১১ টাকা ৬৭ পয়সা এবং ২০১৮ সালে ১২ টাকা ৮৮ পয়সা। পরবর্তী কয়েক বছরে উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

অন্যদিকে ১ কেজি চাল বিক্রয় করে লাভ হত ২০১২ সালে ১৬ টাকা ১৭ পয়সা, ২০১৫ সালে ১৬ টাকা ৫২ পয়সা এবং ২০১৮ সালে ১৭ টাকা ৪৮ পয়সা। এক্ষেত্রে গড় লাভ আসে ১ দশমিক ৩১ শতাংশ। মোট উৎপাদন খরচের সঙ্গে বিক্রিত অর্থ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লাভজনকতা হ্রাস পাচ্ছে। কৃষকরা তাদের বিনিয়োগে কম রিটার্ন পাচ্ছেন। কারণ তাদের উৎপাদিত পণ্যের দামের তুলনায় খরচ দ্রুত বাড়ছে। এ প্রবণতা ধান চাষীদের জন্য একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

গবেষণায় দেশে কৃষি উৎপাদনশীলতা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং সম্পদের ব্যবহার সম্পর্কে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। জমির উর্বরা শক্তি বাড়াতে মাটির স্বাস্থ্য উন্নত করা, উর্বরতা পুনরুদ্ধার করতে নিয়মিত মাটি পরীক্ষা, জৈব সার প্রয়োগ এবং একই জমিতে ফসলের ঘূর্ণন (ভিন্ন ভিন্ন ফসল চাষ) করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

কালের আলো/এমএএইচ/ইউএইচ