সংঘর্ষের রাজনীতি আর যেন ফিরে না আসে: আমির খসরু

প্রকাশিতঃ 9:55 pm | December 23, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদার গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যেতে চাই। অনেক সংঘর্ষ হয়েছে, দেশের মানুষ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সাংঘর্ষিক রাজনীতি যেন বাংলাদেশে আর কোনোদিন ফিরে না আসে, আমরা সেই চেষ্টাটা করে যাচ্ছি। সেটা সফল হবে, একমাত্র দ্রুত একটা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার ও সংসদ গঠন করবে।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এনডিএমের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। দেশের চলমান রাজনৈতিক ও বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে গত শনিবার (২১ ডিসেম্বর) থেকে শরিকদের সঙ্গে ফের ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি।

এর অংশ হিসেবে এ দিন এনডিএমের সঙ্গে বৈঠকের পর মিয়া মশিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো যুগপৎ-সঙ্গীদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হলো বিএনপি। আগামী দুয়েকদিনে আরও সমমনা দলের সঙ্গে আলোচনা করবে বিএনপি।

সোমবারের বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের দেওয়া নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় সূচি, সংস্কারসহ সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

আমির খসরু বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে যে সময়ের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, এটা আমাদের জানা ছিল না। এটা নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা হয়নি। সুতরাং, ওই সময় নিয়ে আমরা অবগত নই। কী কারণে দীর্ঘ সময় নিয়ে টাইম ফ্রেম দেওয়া হয়েছে, এটার আমরা কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।’

‘এটার কারণ হিসেবে অনেকে অনেক কথা বলছে। ফলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। নির্বাচনের জন্য আমরা যে যৌক্তিক সময়ের কথা বলেছিলাম, এটাতে আমরা সেই যৌক্তিক সময় দেখতে পাচ্ছি না।’

‘নির্বাচনমুখী সংস্কার এখন সবচেয়ে জরুরি, সেটা সম্পন্ন হয়ে এখন আমাদের নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। আর সংস্কার মূলত হতে হবে জনগণের আস্থা, সমর্থন ও ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচিত সংসদে। নির্বাচনের আগে এখন ওনারা কী সংস্কার করতে পারবেন, সেটা দেখার বিষয়।’

বিএনপি নেতার ভাষ্য, ‘যেসব বিষয়ে ইতোমধ্যে ঐকমত্য হয়েছে, সেসব বিষয়ে সংস্কার হতে পারে। আর যেগুলোতে ঐকমত্য হবে না, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সেটা করতে হবে। সংস্কারের কথা বলে নির্বাচনকে দীর্ঘায়িত করার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই।’

‘কারণ, সংস্কারে আমরা জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, সেটা আমরা করবো। এজন্য আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। জাতীয় সরকারের মাধ্যমে সেটা আমরা বাস্তবায়ন করবো। এ ব্যাপারে কোনও দ্বিধা-দ্বন্দ্বের কারণ নেই। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আগামী নির্বাচন, যেটার জন্য দেশের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।’

আমির খসরু বলেন, ‘সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জনগণের কাছে যাদের জবাবদিহি থাকবে। রাজনীতিবিদদের জনগণের কাছে বার বার যেতে হবে, সেই ধরনের গণতান্ত্রিক অর্ডার দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। একমাত্র যার মাধ্যমে সম্ভব সাংঘর্ষিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসা, একটি স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ দেশ গড়া।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, ‘আমরা যারা রাজনীতি করি, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠন করা, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। বাকি যারা কথা বলছেন, ওনারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়। একমাত্র নির্বাচিত সরকারই জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। যারা দায়বদ্ধ থাকবে না, তারা কে কী ভাবছে— সেটা নিয়ে আমাদের কোনও চিন্তা নেই।’

কালের আলো/ডিএইচ/কেএ