সামরিক ব্যয় সংকোচনের সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
প্রকাশিতঃ 11:20 am | December 26, 2024
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:
তাইওয়ানের বিরোধীদলগুলো দেশের প্রতিরক্ষা খাতে ২৪৫ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় হ্রাস করে একটি বিল অনুমোদন করিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে, চীনের ক্রমবর্ধনাম সামরিক হুমকির বাস্তবতায় দেশটির নিরাপত্তায় মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সতর্ক করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন সিদ্ধান্তের শর্ত পূরণে প্রতিরক্ষা বাজেট সামনের বছর ২৮ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে।
তাইওয়ান পার্লামেন্টে বিরোধীদলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। গত সপ্তাহে অনুমোদিত এই বিলের ফলে, রাষ্ট্রীয় বরাদ্দকৃত অর্থের বড় একটা অংশ কেন্দ্র থেকে পৌরসভার দিকে সরিয়ে নেওয়া হবে। ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি) ও হাজারো বিক্ষোভকারী এই সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ বিরোধী।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই সিদ্ধান্তের ফলে সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি ও যুদ্ধপ্রস্তুতি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। ভারী অস্ত্রশস্ত্রের আধুনিকায়ন হয়ত সম্ভব হয়ে উঠবে না ও অস্ত্র ক্রয়ে শর্ত অনুযায়ী অর্থপ্রদানে সমস্যা হলে সরঞ্জাম বুঝে পেতে বিলম্ব তো হবেই, এমনকি অর্ডারও বাতিল হয়ে যেতে পারে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী বছর পূর্বঘোষিত প্রতিরক্ষা বাজেটের আকার ছিল জিডিপির ২ দশমিক ৪ শতাংশ। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে তা ২ শতাংশের নিচে নেমে আসতে পারে। অথচ ওই অঞ্চলের বাকি দেশগুলো প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়েই চলেছে।
তাইওয়ানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকার করে না চীন। দেশটির ওপর নিজেদের সার্বভৌম ক্ষমতা চর্চা করতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওই অঞ্চলে সামরিক চাপ বৃদ্ধি করছে বেইজিং।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় বুধবার তাইওয়ানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মহাসচিব জোসেফ উ বলেছেন, প্রতিরক্ষা বাজেট সংকোচনের ফলাফল মারাত্মক হতে পারে। তাই এ বিষয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন। অবশ্য আলোচনার বিষয় নিয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি।
তিনি বলেছেন, এই সিদ্ধান্তে ভুল বার্তা পেতে পারে সমমনা দেশগুলো। তাদের ধারণা হতে পারে, নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় তাইওয়ান। ফলে, আমাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার তেমন প্রয়োজন নেই।
বেইজিংয়ের হুমকির মুখে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সামরিক বাহিনীতে আরও যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র যুক্ত করে যাচ্ছিল তাইপেই। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আগস্টের সভায় প্রস্তাব করা হয়, সামরিক খাতে বাৎসরিক ৭ দশমিক ৭ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি করা হোক।
বিভিন্ন বিষয়ে তাইওয়ানের বিরোধী দলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের। চলতি বছর জানুয়ারির নির্বাচনে পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন ডিপিপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর থেকেই দ্বন্দ্ব আরও বেড়েই চলেছে।
কালের আলো/ডিএইচ/কেএ