নৌযান ধর্মঘটে আটকে আছে ৮০০ জাহাজ, অচল পণ্য পরিবহন-খালাস

প্রকাশিতঃ 2:00 pm | December 28, 2024

চট্টগ্রাম প্রতিবেদক, কালের আলো:

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে সারবোঝাই ‘এমভি আল-বাখেরা’ জাহাজে সাত খুনের প্রকৃত কারণ উদঘাটন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ চার দাবিতে দেশব্যাপী কর্মবিরতি পালন করছেন নৌযান শ্রমিকরা। বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন এই ধর্মঘটের ডাক দেয়।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে শুরু হওয়া নৌযানের শ্রমিকদের এই কর্মবিরতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে সব ধরনের পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাটসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথে পণ্য পরিবহন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। শত শত লাইটারেজ জাহাজ অলস বসে আছে। আমদানি করা পণ্য লাইটারিং বন্ধ হওয়ায় বহির্নোঙরে অলস বসে আছে ২০টির বেশি বিদেশি মাদার ভেসেলও।

লাইটার জাহাজ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো–অর্ডিনেশন সেলের তথ্য অনুযায়ী, নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে দেশের ৫৭টি ঘাটে ৭৩৮টি জাহাজে আটকা পড়েছে প্রায় ১০ লাখ ১১ হাজার ২৩৫ টন পণ্য। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জাহাজ আটকা পড়েছে যশোরের নোয়াপাড়া ঘাট, নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ঘাট, মেঘনা ঘাট ও সিরাজগঞ্জের ঘোড়াশাল ঘাটে। কর্ণফুলী নদী এবং ঘাটেও বিপুল সংখ্যক লাইটারেজ জাহাজ পণ্য নিয়ে অলস ভাসছে।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন সচিব আতিকুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘চাঁদপুরে জাহাজে সাত খুনের ঘটনার পরপরই প্রশাসনের কাছে চার দফা দাবি জানিয়ে তা বাস্তবায়নে ৭২ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। এ চার দাবির মধ্যে রয়েছে- নিহত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য সরকারিভাবে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা, সব নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ- তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।’

সংগঠনটির সভাপতি শাহ আলম বলেন, ‘আমাদের দাবি পূরণ না করা পর্যন্ত শ্রমিকদের কাজে নামানো সম্ভব হবে না। আমরা দাবিগুলো বলেছি। বর্তমানে তৈল-গ্যাস, কয়লা ও বালুসহ সব ধরনের পণ্যবাহী নৌযান চলাচল এবং পণ্য ওঠা-নামা বন্ধ রয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে।’

বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাঈদ আহমেদ বলেন, ‘আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সুরাহার চেষ্টা চলছে। বিষয়টি নিয়ে ডিজি শিপিংয়ের পক্ষ থেকে আলোচনার চেষ্টা করছেন। তারা আগামী কাল রবিবার বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ৮০০ জাহাজ বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছে। যেখানে ১০ লাখের বেশি পণ্য আছে। এ সমস্যা দ্রুত সমাধান না হলে দেশে পণ্যের সংকট সৃষ্টি হতে পারে।’

কালের আলো/এএমকে