এমপি কোটায় আনা গাড়িগুলো নিয়ে এনবিআরের নতুন সিদ্ধান্ত
প্রকাশিতঃ 1:12 pm | January 08, 2025
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
বাড়তি রাজস্ব লাভের আশায় পতিত আওয়ামী সরকারের এমপিদের নামে আনা ৪২টি পাজেরো গাড়ি নিলামের পরিবর্তে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে ছাড় করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এনবিআর জানিয়েছে, এ সিদ্ধান্তে অন্তত ৪শ কোটি বাড়তি রাজস্ব আয় আসতে পারে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, অতিরিক্ত শুল্কায়নের কারণে গাড়িগুলো বিক্রি না হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের কার শেডে ৫ মাসের অধিক সময় পড়ে আছে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদ সদস্যদের নামে আনা শুল্কমুক্ত সুবিধার গাড়ি। গত ৫ আগস্টের পর গাড়ি আমদানিকারক দ্বাদশ সংসদের সংসদ সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ায় গাড়িগুলো ছাড় করা নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। আইন অনুযায়ী ৩০ দিন অর্থাৎ ১৪ অক্টোবরের মধ্যে আমদানিকারক এসব গাড়ি ছাড় না করায় নিলামের জন্য ২৪টি ল্যান্ড ক্রুজার বাই পেপার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কাছে হস্তান্তর করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। কাস্টম হাউজের পাঠানো একাধিক চিঠির প্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত আমদানিকারকদের আবেদনের বিপরীতে ছাড় করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে এনবিআর। এরই মধ্যে প্রতিটির শুল্ক বাবদ সাড়ে আট কোটি টাকা পরিশোধের মাধ্যমে ২৪টি গাড়ি ডেলিভারি নিতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস আমদানিকারকদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে।
এনবিআরের তথ্যে দেখা যায়, এই ৫১টি গাড়ির (যার বেশিরভাগই টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার ও ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো) আমদানি মূল্য প্রায় ৬১ কোটি টাকা। এসব গাড়ির মধ্যে সবচেয়ে কম দামের ল্যান্ড ক্রুজারটি আমদানি করা হয়েছিল ৯৮ লাখ টাকার সামান্য কিছু কমে। শুল্ক দিতে গেলে গাড়িটির দাম পড়বে ৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আনা ৩৩৪৬সিসির এ গাড়িটির স্বাভাবিক শুল্ককর হার ৮২৬ দশমিক ৬ শতাংশ। সংসদ সদস্যরা প্রতি পাঁচ বছরে একবার শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি করতে পারেন।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমদানিকারকরা যদি তার অনুকূলে ছাড় করার জন্য যথাযথ শুল্ক পরিশোধ করে তাহলে ছাড় করা হবে। না হলে গাড়িগুলো নিলামে তোলা হবে।’
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানান, চট্টগ্রাম বন্দর চায় জায়গা খালি হোক সেটি ‘নিলাম বা আমদানিকারক ছাড় করিয়ে নিয়ে যাক’ যেভাবেই হোক না কেন।
বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সহ-সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘১০ কোটি মূল্য হিসেবে এসব গাড়ি কেউ ছাড় করাবে বলে মনে হয় না। আমদানিকারকদের চিঠির মাধ্যমে ছাড় হবে কিনা জিজ্ঞাসা করে অতিদ্রুত নিলামের ব্যবস্থা করা উচিত।’
উল্লেখ্য, গত বছর ৪২টি গাড়ি চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন বন্দরে আটকা পড়লেও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং ব্যারিস্টার সুমনসহ ৭ জন তৎকালীন সংসদ সদস্য জুলাই মাসেই গাড়ি ছাড় করে নিয়েছে গত বছরের জুলাই মাসে। আইন প্রণেতাদের খুশি করতে ১৯৮৭ সালে এইচ এম এরশাদের শাসনামলে শুল্কমুক্ত গাড়ি সুবিধা চালু করা হয়েছিল।
কালের আলো/এসএকে