বিএনপি’র আবোল-তাবোল রিজভী!
প্রকাশিতঃ 4:15 pm | February 16, 2018

পলিটিক্যাল এডিটর, কালের আলো:
দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রায়ের মাত্র দু’দিন আগের ঘটনা। নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কোন রকম পুলিশ পাহাড়া না থাকলেও গেটে তালা দিয়ে ভেতরে বসেছিলেন বিএনপি’র দপ্তরের দায়িত্বে থাকা যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
ওইদিনই এক সংবাদ সম্মেলনে এ নেতা অভিযোগ করেছিলেন, দলের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেল সিলেট থেকে ফেরার পর না কী আটক হয়েছেন। তাঁর হদিসও দাবি করেছিলেন তিনি। বেশ কয়েক দফা সংবাদ সম্মেলন ডেকে এমন অভিযোগ ছিল এ নেতার কন্ঠে।
অথচ গত বৃহস্পতিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের ঠিক সামনেই নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছিল সোহেলকে। অবশ্য তিনদিন পর সেই অভিযোগের খোলস ভাঙেন রিজভী নিজেই।
রিজভী জানান, সোহেল আটক নেই, যেখানেই আছেন ভালো আছেন। সরকারের গোয়েন্দা সূত্রই না কী সোহেলকে আটকের বিষয়টি তাকে নিশ্চিত করেছিল! তাঁর কথায় ব্যালান্স না থাকায় অনেকেই তার নামের পাশে যোগ করেছেন ‘আবোল-তাবোল’ বিশেষণ।
সব সময় আলোচনায় থাকতে পটু বিএনপি’র এ নেতা বুধবারও (১৪ ফেব্রুয়ারি) দলীয় কার্যালয়ের ভেতরেই খালেদার মুক্তি দাবিতে অনশন করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদার মুক্তি দাবিতে কেন্দ্রের অনশন কর্মসূচিতেও তিনি অংশ না নিয়ে মিডিয়ার ফোকাস পেতেই দলীয় কার্যালয়ে বসে অনশন ‘নাটক’ মঞ্চস্থ করেছেন এমনটি মনে করেন দলীয় নেতাদের অনেকেই।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে রুহুল করিব রিজভী’র এতো পরিচয় ছিল না। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপট রচনার পর দলের নেতৃত্ব শুন্যতাকে কাজে লাগিয়ে লাইম লাইটে চলে আসেন এ নেতা।
২০১৩ সালে সরকার বিরোধী চলাকালে মাস দুয়েক কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবরুদ্ধ ছিলেন রিজভী। পরে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর ভোররাতে তাকে কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
কিন্তু সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে হাসপাতাল থেকে পালান তিনি। এরপর কিছুদিন অজ্ঞাত স্থান থেকে কখনো বিবৃতি দিয়ে, আবার ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে দলের পক্ষে সরব ছিলেন এ নেতা।
মূলত দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ‘টেক্কা’ দিয়ে প্রতিনিয়তই দলের মুখপাত্রের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে দেখা যায় তাকে। খালেদার রায়ের দিন সংবাদ সম্মেলনে তাঁর কান্না নিয়েও দলীয় পরিমন্ডলেই তীব্র সমালোচনা হয়।
সূত্র জানায়, দফতরের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রিজভী বিএনপি’র রাজনীতিতে রীতিমতো প্রভাবশালী নেতা বনে গেছেন। গত দু’টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। ওই সময় দেশের কোন কোন জায়গায় তাঁর বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। অনেক জায়গাতেই কমিটি গঠনে তাঁর হস্তক্ষেপ নিয়েও দলীয় পরিমন্ডলে কঠোর সমালোচনা রয়েছে।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি।
কালের আলো/পিএ