সব ধর্মের মানুষ যেন একত্রিত হয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে পারে: আদিলুর রহমান খান

প্রকাশিতঃ 3:14 pm | January 10, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, বাংলাদেশ সবার ও বহুমাত্রিক দেশ। সব ধর্মের মানুষ, সমস্ত ভাষাগত ও নৃগোষ্ঠী মানুষ যেন একত্রিত হয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে পারে।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর উত্তরায় বৌদ্ধ মহাবিহার চত্ত্বরে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি ঢাকা অঞ্চল আয়োজিত ‘বাংলাদেশ বৌদ্ধ সর্বজনীন মহাশ্মশানের ভিত্তি স্থাপন’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি ঢাকা অঞ্চলের সভাপতি দীপাল চন্দ্র বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন, শ্রীলংকার হাইকমিশনার মি. ধর্মপালা ওইয়ারাকোদ্দি, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন অ্যারাল্ড গুলব্রানসেন ও রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকারসহ বৌদ্ধ সমিতির নেতৃবৃন্দ।

আদিলুর রহমান খান বলেন, বাংলাদেশের কোনো মানুষ, কোনো নাগরিক যেন আর মনে না করেন যে, তিনি বঞ্চিত। তারা সমাজের মূল ধারার বাইরে আছে। এটাই বাস্তবায়নের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, জুলাইয়ের ৩৬ দিন, যেভাবে সব ধর্মের তরুণ- যুবকেরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রক্ত দিয়েছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে তারা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেটার কিছদূর বাস্তবায়নের দায়িত্ব আমরা পেয়েছি। তা পালনের চেষ্টা করছি। এক্ষত্রে আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন। আমরা চেষ্টা করছি যেসব কাজ বাকী আছে, দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে সেগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা যে কাজগুলো করার চেষ্টা করেছি এবং যে কাজগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি, তার মধ্যে এটা অন্যতম।

অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন বলেন, প্রাচীনকালে বহুবছর ধরে আমাদের জনপদ বৌদ্ধদের শাসনাধীনে ছিল। নেপালের লুম্বিনীতে বাংলাদেশর অর্থায়নে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় একটি বৌদ্ধ বিহার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। ধর্ম উপদেষ্টা সকলকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য সমুন্নত রেখে পরস্পরের হাত ধরে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানান। এছাড়া তিনি বৌদ্ধ মহাশ্মশানের সীমানা প্রাচীর ও চুল্লি স্থাপনে ধর্ম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের যৌথ ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দেন।

রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার বলেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মহোদয় দেড় মাস আগে নির্দেশ দিয়েছিলেন, মহাশ্মশানের জন্য যায়গা দিতে হবে। আমরা দিয়েছি এবং এক সপ্তাহের মধ্যে জায়গার দখল বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ মহাবিহারেরঅধ্যক্ষ মুদিতাপাল থেরো, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির ঢাকা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী, দীপ্তিময় বড়ুয়া সেলু, দেবাশীষ বড়ুয়াসহ বৌদ্ধ ধর্মের নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য যে, অন্তর্বতী সরকার প্রথমবারের মতো বৌদ্ধদেরকে মহাশ্মশানের জন্য জায়গা বরাদ্দ দিয়েছে। নির্দিষ্ট স্থানে ঢাকাবাসী বৌদ্ধদের অন্তিম শেষকৃত্য (শবদাহ) করার জন্য রাজউক ঢাকার উত্তরায় ১৬ নম্বর সেক্টরে ২৩ (তেইশ) কাঠার প্লট বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির অনুকূলে বরাদ্দ দিয়েছে।

কালের আলো/এমএএইচ/ইউএইচ