বিআইডব্লিউটিএ’র বিএনপিপন্থী তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে অপপ্রচারের ‘নাটের গুরু’ কে?

প্রকাশিতঃ 9:54 am | January 12, 2025

রাইসুল ইসলাম খান, কালের আলো:

নানা রকম প্রতিকূলতা পেরিয়ে সারা বছর নদীতে পানির প্রবাহ ধরে রাখতে সরকার নদী খননের (ক্যাপিটাল ড্রেজিং) কর্মসূচিতেই মনোযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। নদী খনন করতে গিয়ে পদে পদে বাধার মুখে পড়লেও সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে দেশের ৫৩টি অভ্যন্তরীণ নৌপথের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ২৪টি নৌপথ খনন কাজ সম্পন্ন করেছে তাঁরা। নৌপথের সঙ্গে থাকা ৫৫টি হাট বাজারকে ঘিরে নদীকেন্দ্রিক অর্থনীতির ভিতকে মজবুত ও টেকসই করারও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ‘গভীর নদী খনন’ কর্মসূচিকে বিবেচনা করা হচ্ছে ভবিষ্যত অর্থনীতির ভিত্তি হিসেবে। এর মাধ্যমে চিরদিনের মতো নদী ভাঙন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। ইতোমধ্যে নদী খননের মাটি বা বর্জ্য দিয়ে ২০২ বিঘা অকৃষি জমিতে রূপ দেওয়া হয়েছে। পণ্য পরিবহনেও এসেছে নতুন মাত্রা ও গতি।

ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে থাকায় নদীগুলোকে আগের মতো ঘনঘন তার পথ পরিবর্তন করে ফসলি জমি, বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করতে পারেনি। ফলে হ্রাস পেয়েছে মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতিও। এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা সাশ্রয়েরও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বিআইডব্লিউটিএ। কিন্তু গোল বেঁধেছে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালানো স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে পরিচিত একটি চক্র। পতিত সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট গুটিকয়েক ঠিকাদার ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা মাহবুব-উল আলম হানিফের ব্যবসায়িক অংশীদার ও ভাগ্নে হিসেবে পরিচিত বিআইডব্লিউটিএ-তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. সুলতান আহমেদ খান বিআইডব্লিউটিএকে অস্থির করে তুলতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছেন বলেও অভিযোগ ওঠেছে। তাদের ইশারায় বিআইডব্লিউটিএ’র প্রধান প্রকৌশলী রকিবুল ইসলাম তালুকদার ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. ছাইদুর রহমানকে টার্গেট করে সুকৌশলে অপতথ্য ছড়িয়ে জেরবার করার হীন অপতৎপরতা শুরু হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে। একইভাবে বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিনকেও কায়দা কানুনে হেনস্থা করতেও ছাড়ছেন না একটি বিশেষ মহল।

বিএনপিপন্থী এই তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে গোয়েবলসীয় স্টাইলে অপপ্রচারের নেপথ্য রহস্য
বিএনপিপন্থী এই তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে গোয়েবলসীয় স্টাইলে অপপ্রচারের নেপথ্য রহস্যও উদঘাটিত হয়েছে। মূলত কতিপয় ঠিকাদার ও আওয়ামী লীগের ক্ষমতাধর হানিফের ভাগ্নে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. সুলতান আহমেদ খান নদী খনন কাজ না করেই অতিরিক্ত বিল তুলতে ব্যর্থ হয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের মাধ্যমে তাদেরকে ঘায়েল করার অপকৌশল গ্রহণ করেছেন। এই বিষয়টি এখন হয়ে ওঠেছে ‘টক অব দ্য বিআইডব্লিউটিএ’। যদিও নদী খনন কাজ না করে অতিরিক্ত বিল পরিশোধের কোন সুযোগ নেই বলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। তাঁরা সেই নির্দেশনায় অনড় থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে মিথ্যাচার চলছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে ৫৩টি অভ্যন্তরীণ নৌপথ রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ২৪টি নৌপথ খনন করতে সরকার ২০১২ সালে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। ১ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকার এই প্রকল্প ২০১৮ সালেই শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু নদী খনন করতে গিয়ে পদে পদে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। এজন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) প্রকল্পের মেয়াদ দু’দফায় বাড়ানো হয়। পরে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে সংস্থাটির ড্রেজিং বিভাগ।

জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন কালের আলোকে বলেন, ‘আমি ছাত্রজীবনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতা ছিলাম। ওই সময় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল থেকে সাহিত্য সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছিলাম। আমি বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভাইয়ের সঙ্গে রাজনীতি করেছি। এখন আমাকে আওয়ামী লীগ ট্যাগ দিয়ে পরিকল্পিতভাবে সুনামহানির অপচেষ্টা চলছে। আমার সঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ’র অফিসার্স এসোসিয়েশনের নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন যারা তাঁরাই আমার বিরুদ্ধে নানামুখী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব অপপ্রচার ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন।’

যেকারণে নদী খনন প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে দু’দফা ও অপপ্রচারের সুলুক সন্ধান
সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প নদী খনন বা ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্পটির মেয়াদ দু’দফা বাড়ানোর নেপথ্যে রয়েছে খোদ সরকারেরই বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম বা অসহযোগিতা। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক সরেজমিন প্রতিবেদনে বলা হয়, কোথাও বালুমহালের ইজারাসংক্রান্ত জটিলতার কারণে নদী খনন বন্ধ ছিল। কোথাও-বা কম উচ্চতার সেতু নির্মাণ করায় তার নিচ দিয়ে ড্রেজার নিতে অসুবিধা হয়। আবার কোথাও কোথাও নদী খনন করতে গিয়ে বছরের পর বছর নদী দখল করে থাকা প্রভাবশালীদের পক্ষ থেকে বাধা আসে। এতে বছরের পর বছর পার হলেও নদী খননের কাজ শেষ হয়নি। তবে সব বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে ৫৩টি নৌপথের মধ্যে ইতোমধ্যেই ২৪টি নৌপথ খনন কাজ শেষ হয়েছে।

গত ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর নদী দখলদাররা হালে পানি পাচ্ছেন না। তবে ক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়ে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিবাদ চক্রের সাঙ্গপাঙ্গরা নানাভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাধার প্রাচীর তৈরি করছেন। এক্ষেত্রে তাঁরা নদী খনন না করেই অতিরিক্ত বিল তুলতে তোড়জোড় শুরু করেন। তিনি বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা’র নির্দেশে প্রধান প্রকৌশলী রকিবুল ইসলাম তালুকদার সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নদী খনন কাজ শেষ না করে অতিরিক্ত বিল উত্তোলনের কোন সুযোগ নেই। ফলশ্রুতিতে প্রধান প্রকৌশলী রকিবুল ইসলাম তালুকদার ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. ছাইদুর রহমানের পিন্ডি চটকাতে মহল বিশেষটি ওঠেপড়ে লেগেছে। তাঁরা প্রধান প্রকৌশলী ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীকে আওয়ামী লীগের ‘ঘনিষ্ঠ’ তকমা দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

অথচ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) প্রধান প্রকৌশলী রকিবুল ইসলাম তালুকদার ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. ছাইদুর রহমান দু’জনেই বিএনপিপন্থী হিসেবে পরিচিত। উল্টো আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তাদের নানাভাবে বিএনপি’র ট্যাগ দিয়ে হেনস্থা করেছে বিশেষ মহলটি। এ বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী রকিবুল ইসলাম তালুকদার কালের আলোকে বলেন, ‘আমি ছাত্রজীবনে ছাত্রদলের সভাপতি ছিলাম। এ কারণে দুইবার পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। তারপরও আমাদের দুই জনের বিরুদ্ধে কিছু কর্মকর্তা অপপ্রচার শুরু করেছে। এক্ষেত্রে তারা কারও কারও মাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধে নির্লজ্জ কায়দায় তথ্য সন্ত্রাস চালাচ্ছে।’

একই রকম অভিযোগ করে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. ছাইদুর রহমান কালের আলোকে বলেন, ‘আমার বড় ভাই কুড়িগ্রামে জেলা বিএনপির নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। আমি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সুনামের সঙ্গে করেছি। ৫৩টি নৌপথ ক্যাপিটাল ড্রেজিং (১ম পর্যায়ে : শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করে সরকারের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি। অবৈধ সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত হওয়ায় একটি চক্র আমাদের সম্মানহানি করতে নানা ফন্দিফিকির আঁটছে। কিন্তু আমরা কোন পরাজিত শক্তির দোসরদের প্রোপাগাণ্ডার কাছে মাথা নত করবো না। আমরা আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারাবদ্ধ।’

কী বলছে আইএমইডির সরেজমিন প্রতিবেদন?
আইএমইডির সরেজমিন প্রতিবেদনে বলা হয়, বিআইডব্লিউটিএ মানিকগঞ্জে ধলেশ্বরী নদীর হজরতপুর-জাবরা এলাকায় খনন করতে গিয়ে জানতে পারে, নদীর সেই জায়গাটি বালুমহাল হিসেবে ইজারা দিয়ে রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। তাই বালুমহাল ইজারা নেওয়াদের পক্ষ নদী খননে বাধা দিয়েছে। ওই এলাকায় নদী খনন না করার হুমকিও দেওয়া হয়। বালুমহাল ইজারা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে মৌলভীবাজারের মনু নদ; পাবনা ও নাটোর জেলায় আত্রাই নদ খনন করতে গিয়েও একই ধরনের সমস্যায় পড়ে বিআইডব্লিউটিএ। এসব জেলার স্থানীয় প্রশাসন ও ইজারা নেওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করতেই কেটে যায় বছর। একই কারণে দিনাজপুরেও আত্রাই নদের ড্রেজিং কাজ বন্ধ ছিল। এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা জানান, যারা বালুমহাল ইজারা পেয়েছে, তারা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। জেলা প্রশাসকেরা চাইলেই তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে পারেন না। আবার স্থানীয় প্রশাসনের আয়ের বড় একটি উৎসও হচ্ছে এই বালুমহাল ইজারা। তাই চুক্তি বাতিল করা কঠিন। সে জন্য ইজারাদারের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে সমস্যার সমাধান করতে হয়েছে।

সূত্র জানায়, স্থানীয় বালু দস্যুদের বলগেট ব্যবহার করে কোনো ঠিকাদার ডেজিং কাজ করেনি। নিয়োজিত ৫টি প্রতিষ্ঠান তাদের ৯টি ড্রেজার প্রায় ৩ বছর ড্রেজিং করে কাজটি শেষ করেছে। সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস তৃতীয় পক্ষ হিসেবে ড্রেজিং এর পূর্বে ও পরে এবং কাজ চলমান অবস্থায় হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ করে সঠিকভাবে ড্রেজিংকৃত মাটির পরিমাণ নির্ণয় করে দেয়া হয়। সিইজিআইএস জরিপ করার সময় ডিজিটাল পদ্ধতি অনুসরণ করে ইকোসাউন্ডারসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। মাটির পরিমাণ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সিইজিআইএস হাইপ্যাক সফটওয়ার ব্যবহার করেছে। বিআইডব্লিউটিএ’র অভিজ্ঞ প্রকৌশলীগণ সেই মাটির পরিমাণ পুনঃপরীক্ষা করে ঠিকাদারের বিল উপস্থাপন করেছে। উপস্থাপিত বিল প্রধান প্রকৌশলী’র দপ্তরে পরীক্ষা করে হিসাব বিভাগে পাঠানো হয়। হিসাব বিভাগ পরীক্ষা করে নিরীক্ষা বিভাগে আবার দেয়া হয়। নিরীক্ষা বিভাগ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে পরিশোধের জন্য হিসাব বিভাগে প্রেরণ করে। হিসাব বিভাগ হতে বিলগুলো পাস করে ঠিকাদারের বিল পরিশাধ করা হয় কাজ না করে অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করার কোন সুযোগ নেই। নৌপথে ৫টি প্যাকেজে ৭২ লাখ ৯৭ হাজার ৯১ দশমিক ৭৫ ঘনমিটার মাটি ড্রেজিং এর জন্য ব্যয় হয়েছে ১১২০৭.৮৯ লক্ষ টাকা। সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস ৩য় পক্ষ হিসেবে ড্রেজিং এর পূর্বে ও পরে এবং কাজ চলমান অবস্থায় হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ করা হয়।

তারা সার্বক্ষণিক ড্রেজিং কাজ মনিটরিং করেছেন। ড্রেজিং এর ফলে কি উপকার বা অপকার হচ্ছে তাও মনিটরিং করছেন। সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস ৩য় পক্ষ হিসেবে তারা সঠিকভাবে ড্রেজিংকৃত মাটির পরিমাণও নির্ণয় করেছেন। কংস ও ভোগাই-কংস নদী ড্রেজিং এর সফলতা সম্পর্কে সিইজিআইএস, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে প্রচারিত হয়েছে। ২০২৩ সালে কংস ও ভোগাই-কংস নদী খনের ফলে ১৩৫ কিলোমিটার নৌপথে চলাচল সচল হয়েছে। নৌপথের সঙ্গে রয়েছে ৫৫টি হাট বাজার। এছাড়াও খননের মাটি (বর্জ্য) দিয়ে ২০২ বিঘা অকৃষি জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে। বিশেষ করে বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ ও নেত্রকোনা সদর এ তিন উপজেলায় নদীগুলো প্রাণ ফিরে পেয়েছে। কাজগুলো ই-জিপিতে দরপত্র আহ্বান, গ্রহণ মূল্যায়ন এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে হোপ-এর ৫টি লটের সর্বনিম্ন দরদাতা ৫টি প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছিলেন। সরকারের পিপিআর-২০০৮ অনুসরণ করে কাজের ডিজাইন ও স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ঠিকাদাররা কাজ শেষ করেছেন। ড্রেজিং এর মাটি ব্যবস্থাপনার জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক করে ৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুযায়ী সুষ্ঠুভাবে ড্রেজিং-এর মাটি ব্যবস্থাপনা হয়েছে।

কালের আলো/এমএএইচ/ইউএইচ