জনবান্ধব পুলিশ প্রতিষ্ঠায় যেসব প্রস্তাব দিয়েছে সংস্কার কমিশন
প্রকাশিতঃ 10:45 am | January 16, 2025
নিজস্ব প্রতিবেদক,কালের আলো:
পুলিশের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে থানায় হওয়া মামলার অগ্রগতির তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখাসহ জনবান্ধব পুলিশ প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে পুলিশ সংস্কার কমিশন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বুদ্ধিভিত্তিক সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিভাগের পাশাপাশি পুলিশ বিভাগেও তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির সুপারিশ করা হয়েছে।
এই উদ্যোগ একদিকে পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক উন্নত করবে, অন্যদিকে আহত ব্যক্তিদের সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে।
বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পুলিশ সংস্কারের সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন জমা দেন সফর রাজ হোসেনের নেতৃত্বাধীন পুলিশ সংস্কার কমিশন। সেই প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ রয়েছে।
‘জনকেন্দ্রিক ও জনবান্ধব পুলিশিং’ প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, জনগণ ও পুলিশের মধ্যে আস্থা পুনর্গঠন ও পারস্পরিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি করতে নিয়মিত টাউন হল সভার আয়োজন করা যেতে পারে। স্থানীয় পর্যায়ে সংলাপে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধি থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের নাগরিকের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।
এছাড়া নাগরিক নিরাপত্তা কমিটি গঠন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও উন্নতির জন্য এলাকায় (প্রতি থানা) নাগরিক নিরাপত্তা কমিটি গঠন করা যায়। তাছাড়া নাগরিক সচেতনতা তৈরির জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গঠনমূলক পাঠ/চর্চা অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
এ লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কারিকুলামে পুলিশিং ও আইন সংক্রান্ত বিষয়াদি রাখা জরুরি। যেমন- ‘এক দিন পুলিশ হয়ে দেখুন’ এ ধরনের রোল প্লে করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুলিশের কাজকর্ম সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হবে।
পুলিশের আলাদা পিআর (পাবলিক রিলেশন) স্ট্র্যাটেজি থাকতে হবে, যাতে পুলিশের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ আরও জোরদার হয়। যেমন- পুলিশের বিভিন্ন হটলাইনের ব্যাপারে মিডিয়ার মাধ্যমে প্রমোশন করা যেতে পারে। বিশেষ করে নারীদের জন্য পুলিশের যে সেবাগুলো আছে, তা আরও প্রচার-প্রচারণার দরকার আছে।
কমিউনিটি পুলিশিং বর্তমানে প্রচলিত কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও সম্প্রসারণ করে এটিকে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের একটি পদ্ধতি হিসেবে প্রস্তাব করা হলো। যা পুলিশের জবাদিহিতা বৃদ্ধি করবে এবং পুলিশের কাজে জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করবে। পুলিশের সেবামূলক ও জনবান্ধব কার্যক্রম
কমিশনের প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে- বর্তমানে চলমান পুলিশের সেবাধর্মী কার্যক্রমের যথেষ্ট উন্নতি প্রয়োজন। আরও আন্তরিক ও নিষ্ঠার সঙ্গে জনবান্ধব পুলিশিংয়ের জন্য জোর প্রচেষ্টা ও প্রচার প্রয়োজন। পুলিশকে সেবাধর্মী ও জনবান্ধব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় পুলিশ সদর দপ্তরের কার্যকর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বহুল প্রচারসহ গতিসঞ্চার করা অপরিহার্য।
পুলিশের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে থানাভিত্তিক মামলা কার্যক্রমের অগ্রগতি সংক্রান্ত তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখা উচিত।
কালের আলো/এএএন/কেএ