জলবায়ু পরিবর্তনে বদলাচ্ছে শীতকাল

প্রকাশিতঃ 1:16 pm | January 16, 2025

পঞ্চগড় প্রতিনিধি,  কালের আলো:

হিমালয় বিধৌত অঞ্চলে অবস্থিত উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। দুই পর্বতের কাছাকাছি থাকায় এলাকাটি হিমালয়কন্যা খ্যাত জেলার নামকরণ পেয়েছে। কিন্তু এবারের শীত মৌসুমে জলবায়ু পরিবর্তনে রূপ বদলাচ্ছে শীতকাল। তাপমাত্রা ওঠানামায় এই ঠান্ডা, এই গরম এমন দুই রকম তাপমাত্রায় শীতজনিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

চলতি মৌসুমে উত্তরের এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর ১০ ডিগ্রির নিচে ৮ ডিগ্রি পর্যন্ত বেশ কিছু তাপমাত্রা রেকর্ড হলেও দুই দিন কিংবা পাঁচদিন পর তাপমাত্রা বেড়ে উঠেছে ১০ ডিগ্রির ওপরে। ১০ থেকে ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে এখনও। জানুয়ারি মাসে খুব বেশি শীত পরার কথা থাকলেও এবারের চিত্র অনেক ভিন্ন।

জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়ার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কার্যালয় জানায়, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। গত ১৪ জানুয়ারি থেকে আজ ১৬ জানুয়ারি তিন দিন ধরে ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে এ জেলায়। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ভোর ৬টায় রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পঞ্চগড়ে পহেলা জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত দেখা যায়, মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ ঘটেছে ১ দিন, মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ৯ দিন। এছাড়া ১০ থেকে ১৪ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৬ দিন। এর মধ্যে চার পাঁচদিন ঘন কুয়াশা ও মেঘাচ্ছন্ন প্রকৃতি ঢাকা থাকলেও বাকি দিনগুলোতে ভোর থেকে ঝলমলে রোদে দিনের তাপমাত্রা ২৪ থেকে ২৮ ডিগ্রির মধ্যে রেকর্ডের তথ্য দেখা যায়। চলতি শীতকালে দেশের অন্যান্য কিছু জেলায় বৃষ্টিপাত হলেও এ জেলায় মৌসুমে বৃষ্টিপাত হতে দেখা যায়নি।

পরিবেশকর্মী মাহমুদুল ইসলাম বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে দিনে-রাতে তাপমাত্রা দুই রকম হচ্ছে। দিনে গরম, রাতে প্রচুর ঠান্ডা। তাই পরিবেশ ও জলবায়ুর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জানুয়ারি দেশের সবচেয়ে শীতলতম মাস। এই সময়ে এক থেকে তিনটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়, এবার ব্যতিক্রম। ডিসেম্বরে তাপমাত্রা গতবারের থেকে অনেক বেশি ছিল। সাধারণত নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড় হয়। ডিসেম্বরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় না। এ বছর ব্যতিক্রম দেখা গেছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, শীতের সময়ে জ্বর, সর্দি, কাঁশি, শ্বাসকষ্টসহ ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ বেড়ে যায়। এসব রোগে বেশির ভাগ বৃদ্ধ ও শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তাই শীতে সচেতনতা অবলম্বন করতে পরাপর্শ দিচ্ছেন তারা।

জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ বলেন, গত ১৪ জানুয়ারি থেকে ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ায় তিন দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে এ জেলায়। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ভোর ৬টায় রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বুধবার ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগে মঙ্গলবার ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কালের আলো/এমডিএইচ