গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে প্রয়োজন ১০ বিলিয়ন ডলার
প্রকাশিতঃ 1:10 pm | January 17, 2025
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের বিধ্বস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে কমপক্ষে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা আরও বেশি অর্থের প্রয়োজন হতে পারে। আগামী পাঁচ থেকে সাত বছরে বিপুল পরিমাণ এই অর্থের প্রয়োজন হতে পারে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রাথমিক হিসেবে উঠে এসেছে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
এদিকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রিক পিপারকর্ন সাংবাদিকদের বলেছেন, গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠন করতে অনেক বড় অংকের অর্থের প্রয়োজন হতে পারে। তার মতে, “গাজার শুধুমাত্র স্বাস্থ্যখাত পুনর্গঠনের জন্য প্রথম দেড় বছরের জন্য ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি এবং তারপর পাঁচ থেকে সাত বছরের জন্য ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে বলে তারা প্রাথমিকভাবে অনুমান করছেন।”
পিপারকর্ন বলেছেন, “আমরা সবাই ভালো করেই জানি, গাজায় যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে তা অকল্পনীয়। আমি আমার জীবনে বিশ্বের অন্য কোথাও এমন পরিস্থিতি দেখিনি।”
অবশ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস ইতোমধ্যেই বলেছেন, “গাজার ৯০ শতাংশ হাসপাতাল ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে।”
এর আগে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ১৫ মাসের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হামাস এবং ইসরায়েল একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছায়। দীর্ঘ কয়েক মাস আলোচনার পর গত বুধবার এই চুক্তিতে পৌঁছায় উভয়পক্ষ, যার অন্যতম মধ্যস্থতাকারী ছিল কাতার। যুদ্ধবিরতির এই খবরকে “সেরা খবর” বলেও উল্লেখ করেছেন গেব্রেইয়েসুস।
তার আশা, দীর্ঘ আলোচনার পর উভয়পক্ষের সম্মত হওয়া এই চুক্তি ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সম্পর্কের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটাবে। তিনি বলেছেন, “আসুন আমরা সবাই এই খবরকে অত্যন্ত স্বস্তির সাথে স্বাগত জানাই।”
আগামী রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে চলেছে। তিন ধাপের এই চুক্তিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি, সেখান থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার এবং হামাসের হাতে আটক থাকা বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যদিও এখনও গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। বুধবার যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণা আসার পর ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৮৭ জনেরও বেশি নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
চুক্তির অংশ হিসেবে হামাসের হাতে আটক ৩৩ বন্দির মুক্তির পরিবর্তে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের অনেককে ছেড়ে দেওয়া হবে। গাজার ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকাগুলো থেকে ইসরায়েলি বাহিনী আরও পূর্ব দিকে সরে যাবে। এর ফলে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের বাড়িতে ফিরতে পারবেন। এছাড়াও ত্রাণবাহী শত শত ট্রাক প্রতিদিন গাজায় প্রবেশের সুযোগ পাবে।
চুক্তির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় স্থান পাবে বাকি বন্দিদের মুক্তি এবং “টেকসই শান্তির” জন্য ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি। তৃতীয় ও চূড়ান্ত ধাপে আসবে গাজার পুনর্গঠন। এর জন্য অনকে বছর লেগে যেতে পারে। তবে হামাসের হাতে আর কেউ বন্দি থাকলে তাদের মুক্তির বিষয়টিও আলোচনায় আসবে এই ধাপে।
কালের আলো/এএএন/কেএ