বিশ্বকাপ নিয়ে রিভালদোর সঙ্গে তর্কে জড়ালেন নেইমার
প্রকাশিতঃ 12:19 pm | January 19, 2025
স্পোর্টস ডেস্ক, কালের আলো:
ব্রাজিলের ফুটবল নক্ষত্রদের একজন তিনি। ২০০২ সালে দেশটির পঞ্চম ও সর্বশেষ বিশ্বকাপ জয়ে রেখেছেন বড় অবদান। সেই রিভালদোর জায়গায় নিজেকে দেখতে চেয়ে যেন বিতর্ক উসকে দিয়েছেন নেইমার।
উত্তরসূরি নেইমারের কথার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লম্বা পোস্ট দিয়েছেন রিভালদো। সেটি নজরে পড়তেই রিভালদোকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন নেইমার।
প্রশ্ন উঠতে পারে, ব্রাজিলের সাবেক ও বর্তমান দুই তারকার মধ্যে হঠাৎ কী এমন হলো যে জল এত দূর গড়াল?
বিষয়টি শুরু থেকেই বলা যাক। সম্প্রতি ‘চারলা’ নামে একটি পডকাস্টে নেইমারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন ব্রাজিলের আরেক কিংবদন্তি ও ১৯৯৪ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক রোমারিও। সেখানেই রোমারিও নেইমারকে জিজ্ঞেস করেন, ব্রাজিলের সর্বশেষ তিন বিশ্বকাপজয়ী (২০০২, ১৯৯৪ ও ১৯৭০) দলে নিজেকে কার জায়গায় দেখতে চাইতেন। উত্তরে নেইমার ২০০২ বিশ্বকাপে সাবেক বার্সেলোনা তারকা রিভালদোর নাম বলেন।
তবে বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি রিভালদো। নেইমারের কথার বিরোধিতা করে ৫২ বছর বয়সী এই কিংবদন্তি ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘আমি নেইমারকে বলতে শুনেছি, ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে সে ২০০২ বিশ্বকাপে আমার জায়গায় খেলত। সত্যি বলতে, আমি তার প্রতিভা ও দক্ষতাকে স্বীকার করি এবং এটাও বিশ্বাস করি সে ওই দলে থাকতে পারত। কিন্তু আমার জায়গায় খেলতে নামলে গল্পটা অন্যরকম হতে পারত। তার প্রতি সব ধরনের সম্মান ও প্রশংসা জানিয়ে আমি ১০০% নিশ্চিত হয়ে বলতে পারি এটা (যেভাবে ঘটেছে সেভাবে) ঘটত না।’
রিভালদো ২০০২ বিশ্বকাপে নিজের বিশেষত্ব বোঝাতে গিয়ে বলেছেন, ‘সেই সময় আমি বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের জন্য এতটাই মনোযোগী, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও ক্ষুধার্ত ছিলাম যে, কেউ তার ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে যতই ভালো হোক না কেন, আমার জায়গা নিতে পারেনি। আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছি, যারা সেই মুহূর্তে আমার সঙ্গে ছিল, তারা জানে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য আমি কতটা কঠিন লড়াই করেছি।’
তবে রিভালদোর যুক্তি নেইমার মানতে পারেননি। পূর্বসূরিকে উদ্দেশ্য করে আল হিলালের ৩২ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড লিখেছেন, ‘শান্ত হোন, আমার বন্ধু। বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া সব ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়ই ১০০% নিবেদিত এবং মনোযোগী। কেউ কেউ তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাকিরা পারেনি। এটা ফুটবলেরই অংশ। আমি সব সময় আপনাকে সম্মান করেছি এবং আপনি ব্রাজিলের ফুটবলের জন্য যা যা করেছেন, সেসব অর্জনকে কখনোই খাটো করব না।’
কেন রিভালদোর জায়গায় নিজেকে দেখতে চেয়েছেন, সেটিও লিখেছেন নেইমার, ‘(পডকাস্টে) আমাকে শুধু তিনজনের মধ্যে একজনের জায়গা নিতে বলা হয়েছিল। আপনি নিশ্চয় (২০০২ বিশ্বকাপ দলে) রোনালদো ও রোনালদিনিওর জায়গায় আমাকে দেখতে চাইবেন না, তাই না?’
পডকাস্টে ১৯৭০ ও ১৯৯৪ বিশ্বকাপজয়ী দলে কার জায়গায় নিজেকে দেখতে চাইতেন, সেটিও জানিয়েছেন নেইমার। ১৯৭০ বিশ্বকাপের দলে তিনি তোস্তাওয়ের জায়গা নিতে চেয়েছেন এবং পেলে ও জেয়ারজিনহোর পাশে খেলতে চেয়েছেন। আর ১৯৯৪ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক দুঙ্গাকে সরিয়ে আক্রমণভাগে রোমারিও ও বেবেতোর সঙ্গী হতে চেয়েছেন।
গুরুতর চোট থেকে সেরে উঠে গত বছরের নভেম্বরে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ দিয়ে এক বছর পর খেলতে নামেন নেইমার। কিন্তু দুই ম্যাচ খেলতেই হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে আবারও দুই মাসের জন্য ছিটকে যান। তারকা এই ফরোয়ার্ড এখন ফিটনেস নিয়ে কাজ করছেন। শিগগিরই তাঁকে আবার খেলতে দেখা যাবে।
কালের আলো/এসএকে