শ্রান্তি বিনোদন ভাতা পেতে জনপ্রতি ১২০০ টাকা ঘুস দাবি

প্রকাশিতঃ 5:36 pm | January 23, 2025

বরগুনা প্রতিবেদক, কালের আলো:

বরগুনার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চাকরির বয়স তিন বছর পূর্ণ হওয়া কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্সদের শ্রান্তি বিনোদন ছুটি ও ভাতা পেতে ঘুস দাবির অভিযোগ উঠেছে প্রধান সহকারী কাম-হিসাব রক্ষক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ঘুস না দেওয়ায় ছুটি ও ভাতা মঞ্জুরি করা হয়নি। এজন্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী নার্সরা।

অভিযোগপ্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ কে এম নজমূল আহসান।

হাসপাতালে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্সদের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর সরকারি চাকরিতে যারা যোগদান করেন, তাদের ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর তিন বছর পূর্ণ হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী তিন বছর পূর্ণ হওয়ায় যথাসময়ে শ্রান্তি বিনোদন ছুটি ও ভাতা পাওয়ার জন্য প্রধান সহকারী কাম-হিসাব রক্ষক রফিকুল ইসলামের কাছে আবেদনপত্রসহ প্রয়োজনী কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়। তবে আবেদনের পরও যথাসময়ে হাসপাতালে কর্মরত ২৭ জন সিনিয়র নার্সদের ছুটি ও ভাতা মঞ্জুরির কোনো ব্যবস্থা করেননি রফিকুল ইসলাম। পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিজি অফিস থেকে বরাদ্দের ব্যবস্থা ও জেলা হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে পাস করাতে জনপ্রতি ১২০০ টাকা দাবি করেন তিনি।

আরও উল্লেখ করা হয়, সংশ্লিষ্ট ডিজি অফিস ছুটি ও ভাতা মঞ্জুরির বাজেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে বরাদ্দ করলেও রফিকুল ইসলাম নার্সদের কাছে ঘুসের টাকা দাবিসহ সঠিক সময়ে কোনো ব্যবস্থা নেননি। এতে শ্রান্তি বিনোদন প্রাপ্তির নির্ধারিত গত ১২ ডিসেম্বরের পরিবর্তে যেদিন পাস হবে ওইদিন থেকে কার্যকর হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিনিয়র স্টাফ নার্সরা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো জায়গা থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো রফিকুল ইসলাম আমাদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’

এ বিষয়ে উপ-সেবা তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) হাবিবুর রহমান  বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে একজন কর্মচারী ৩ বছর পরে শ্রান্তি বিনোদন ভাতা পান। সেটাও যদি পিছিয়ে যায় তবে পরবর্তীতে আবার ৩ বছর পরে এটি নিয়ে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। এটির প্রভাবে এমনও হতে পারে যথাযথ সময়ে শ্রান্তি বিনোদন ভাতা না পাওয়ায় অবসরকালীন সময়ের শেষের ৩ বছর পূর্ণ না হলে তিনি দুর্ভাগ্যবশত এই টাকা থেকে বঞ্চিতও হতে পারেন। আমাদের সিনিয়র স্টাফ নার্সরা অনেক কষ্ট করেন। তাই আমি আশা করি যাতে তাদের এই বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হয়।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম-হিসাব রক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ তো যে কেউ দিতে পারে। আমি কারও কাছ থেকে টাকা দাবি করিনি। আমার কাছে আবেদন জমা দিয়েছে ২৭ জন। অফিসে প্রসেসিং একটু দেরি হয়েছে। এ কারণে হয়তো অভিযোগ দিয়েছে।’

এ বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ কে এম নজমূল আহসান বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালের আলো/এএএন/কেএ