যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিতে বিপাকে পড়বে বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ 4:34 pm | February 01, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

যুক্তরাষ্ট্র বিদেশে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিতে বিপাকে পড়বে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বাজেট সাপোর্টসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলোয় সমস্যা হবে। এজন্য এখান থেকেই ডিপ্লোম্যাটিক উদ্যোগ নিতে হবে৷ তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যেতে গুরুত্ব দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। তাঁরা বলছেন, তাদেরকে এটা বোঝাতে হবে যে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সহযোগী দেশ।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ. বি. এম. মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিদেশে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করেছে সেটা স্বল্প মেয়াদে হলে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।
কারণ, দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইড’র মাধ্যমে বাংলাদেশে যে সাহায্য আসে সেটার পরিমাণ খুব বেশি না। তবে বিশ্ব ব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকসহ (এডিবি) জাতিসংঘের যে সব উন্নয়ন সংস্থা আছে তাদের যদি যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান কমে যায় তাহলে বাংলাদেশের বাজেট সাপোর্টসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর প্রকল্পগুলোয় সমস্যা হবে।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যে সিদ্ধান্তটি নিয়েছে সেটা বিশ্বের দুটি দেশ বাদে সকল দেশের জন্য প্রযোজ্য৷ তবে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে সহযোগিতা তার ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তারা এটা তিন মাস পরে রিভিউ করবে। তখন তারা কি সিদ্ধান্ত নেবে সেখানে বাংলাদেশের কি ভূমিকা থাকবে। মোট কথা এটা একটা চাপ সৃষ্টিরও কৌশল হিসেবে দেখা যেতে পারে।

তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যক্ষ ও অ-প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করে থাকে। তারা বিভিন্ন সংস্থাকে সহযোগিতা করে। সে সব সংস্থা আবার বিভিন্ন দেশে উন্নয়ন মুলক কার্যক্রম করে। এখন এসব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। আবার অনেকেই তিন মাস পরে যখন কার্যক্রম শুরু করবে তখন পিকআপ করার মতো অবস্থায় নাও থাকতে পারে। এজন্য বিভিন্ন দেশ চাইবে যাতে রিভিউটা ইতিবাচক হয়। সুতরাং আমাদের এখানে ডিপ্লোম্যাটিক উদ্যোগের বিষয় আছে।

গত ২৫ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র বিদেশে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করেছে এবং নতুন সাহায্য অনুমোদন বন্ধ রেখেছে। সেই অনুযায়ী বাংলাদেশেও সহযোগিতা কার্যক্রম স্থগিত করেছে দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইড। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা ও বিদেশি দূতাবাসগুলোয় এই নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

ইউএসএইডের চিঠিতে বলা হয়, ইউএসএআইডি, বাংলাদেশ বাস্তবায়নকারী সব অংশীদারদের চুক্তি, কার্যাদেশ, অনুদান, সমবায় চুক্তি বা অন্যান্য অধিগ্রহণ বা সহায়তা স্মারকের অধীনে সম্পাদিত যেকোনো কাজ অবিলম্বে বন্ধ অথবা স্থগিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের প্রাপ্ত বরাদ্দ থেকে ব্যয় কমানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এছাড়া লিখিত কোনো নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে রেফারেন্স হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া এ সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে দ্রুত একটি গাইডলাইন পাঠানোর কথাও বলা হয়।

কালের আলো/এএএন/কেএ