সবার নজর দুই সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের দিকে
প্রকাশিতঃ 11:09 am | February 05, 2025
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
গত ৮ আগস্ট সরকার গঠন করার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতের সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়। এর মধ্যে গত ১৫ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ এবং সংবিধান সংস্কারে গঠিত কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে রিপোর্ট জমা দেয়। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন, বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধানরা তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে।
আর সবচেয়ে আলোচিত দুটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে কি থাকছে, সে নিয়ে সবার মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার নিয়ে শতাধিক সুপারিশ থাকছে বলে জানিয়েছেন কমিশনপ্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। একইসঙ্গে বিচারবিভাগ নিয়ে থাকছে এক গুচ্ছ প্রতিবেদন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, আজ দুপুর ১২টার দিকে দুই কমিশনের প্রধানরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ প্রতিবেদনগুলো তুলেন দেবেন।
এদিকে, মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, আমাদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল গত মাসে। কিন্তু আমরা আমাদের কাজের কারণে পারিনি। কারণ আমরা মাঠে গিয়েছি, লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় গিয়ে আমরা কথা বলেছি, অনলাইনে আমরা মতামত নিয়েছি। প্রতিবেদনে ১০০টির বেশি সুপারিশ থাকছে। এখন এর বাইরে আমি কিছু জানাতে পারব না।
জানা গেছে, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক থাকবে প্রশাসনে উপসচিব পদে পদোন্নতি পেতে লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে। এক্ষেত্রে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার থেকে ৫০ এবং অন্য ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ পদোন্নতি দেওয়া হবে-এমন বিধান রেখে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এছাড়া উপসচিব ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের সুদমুক্ত ঋণে গাড়ির সুবিধা বাতিল, প্রশাসন ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ বিভাগীয় কমিশনার, অন্য ক্যাডারে মহাপরিচালক (ডিজি), আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস প্রবর্তন এবং ২৬টি ক্যাডারকে ১২টি ক্লাস্টারে একাধিক ক্যাডার অন্তর্ভুক্ত, স্থায়ীভাবে জনপ্রশাসন সংস্কার ও পে-কমিশন গঠনসহ প্রায় পৌনে দুইশ সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে যুগের পর যুগ গোটা প্রশাসনে যে একক কর্তৃত্ব ছিল বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের, তা অনেকাংশে কমে আসবে। পাশাপাশি প্রশাসনের সঙ্গে অন্য ক্যাডারের যে বৈষম্য ছিল, সেটি দূর হবে-এমন প্রত্যাশা সংস্কার কমিশন সংশ্লিষ্টদের।
এক প্রশ্নের জবাবে মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, আমরা যে সুপারিশ করেছি, সেগুলো সবই বাস্তবায়ন করা সম্ভব। অসম্ভব কিছু হলে তো সেগুলো সুপারিশ করতাম না।
অন্যদিকে, বিচার বিভাগের একগুচ্ছ প্রস্তাব থাকলেও কমিশনের কেউ এ বিষয়ে কথা বলেননি। এসব কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।
গত ৩ অক্টোবর ৮ সদস্যের জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করে সরকার। পরে কমিশনের সদস্য সংখ্যা আরও তিনজন বাড়ানো হয়। ৩ মাসের মধ্যে প্রস্তুত করা প্রতিবেদন হস্তান্তর করতে বলা হয়। এরপর তিন দফা বাড়িয়ে কমিশনের মেয়াদ ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় বেঁধে দেওয়া বর্ধিত সময়ের ১০ দিন আগেই প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হচ্ছে।
কালের আলো/এমডিএইচ