নির্বাচিত হওয়ার পর ঋণখেলাপি হলে এমপি পদ বাতিল

প্রকাশিতঃ 10:31 pm | February 08, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

নির্বাচিত হওয়ার পর ঋণখেলাপি হলে এমপি পদ বাতিল-এমন বিধান আনার সুপারিশ করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।

শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দেওয়া ১৮৪ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রস্তাবনায় এমন সুপারিশ করেছে কমিশন।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ:
১. অভ্যাসগত ঋণখেলাপি ও বিল খেলাপিদের প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত রাখা। বিশেষত ঋণখেলাপিদের ক্ষেত্রে তাদের তামাদি ঋণ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ছয় মাস আগে পরিপূর্ণভাবে শোধ করার বিধান করা। নির্বাচনের পরে আবার ঋণখেলাপি হওয়াকে সংসদ সদস্য পদে থাকার অযোগ্য ঘোষণার বিধান করা। বিল খেলাপিদের নির্বাচনের একমাস পূর্বে এক হাজার টাকার অধিক পরিমাণের সব তামাদি বিল শোধ করার বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করা।

২. আরপিও’র ১২ ধারায় কোনো আদালত কর্তৃক ফেরারী আসামি হিসেবে ঘোষিত ব্যক্তিদের সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত রাখা।

৩. ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে জামিনে মুক্তদের উপযুক্ত আদালত কর্তৃক জামিন লাভের সত্যায়িত অনুলিপি সংযুক্ত করার বিধান করা। কারা অন্তরীণদের ক্ষেত্রে আরপিও অনুযায়ী মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যে সকল দলিলাদি ও কাগজপত্র জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক, তা জেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সত্যায়িত করার বিধান করা।

৪. বেসরকারি সংস্থার কার্যনির্বাহী পদে আসীন ব্যক্তিদের প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ওই পদ থেকে তিন বছর আগে অবসর গ্রহণ সংক্রান্ত আরপিও‘র ধারা বাতিল করা।

৫. সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৬(২)(ঘ) এর অধীনে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে বিচারিক আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির দোষী সাব্যস্ত হওয়ার শুরু থেকেই সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য করা।

৬. সম্প্রতি সংশোধিত আইসিটি আইনে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে) দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির দোষী সাব্যস্ত হওয়ার শুরু থেকেই সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য করা।

৭. আইসিটি আইনের ৯(১) ধারায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সম্পর্কে আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগপত্র গৃহীত হলে এবং তিনি এ অভিযোগে নির্দোষ প্রমাণিত না হলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য করা।

৮. স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পদত্যাগ না করে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য করা।

৯. তরুণ, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু, শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য শতকরা ১০ ভাগ মনোনয়নের সুযোগ তৈরির বিধান করা।

১০. স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জমা দেওয়ার বিধানের পরিবর্তে ৫০০ ভোটারের সম্মতির বিধান করা এবং এ ক্ষেত্রে একক কিংবা যৌথ হলফনামার মাধ্যমে ভোটারদের সম্মতি জ্ঞাপনের বিধান করা।

১১. একাধিক আসনে কোনো ব্যক্তির প্রার্থী হওয়ার বিধান বাতিল করা।

১২. নির্বাচনের পরে নির্বাচন কমিশনের জন্য হলফনামার তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করা এবং হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার বা তথ্য গোপনের দায়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নির্বাচন বাতিল করার বিধান করা।

১৩. হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার কিংবা তথ্য গোপনের কারণে আদালত কর্তৃক কোনো নির্বাচিত ব্যক্তির নির্বাচন বাতিল করা হলে ভবিষ্যতে তাকে নির্বাচনে অযোগ্য করার বিধান করা।

১৪. সরকারের কোনোরূপ শেয়ার আছে এরূপ প্রতিষ্ঠানে কেউ কর্মরত থাকলে তিনি যদি পদত্যাগ না করে থাকেন, তাহলে তাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য করা।

কমিশনের সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।

কালের আলো/এএএন/কেএ