সেই গোলাপি রঙের বাস গেলো কোথায়?

প্রকাশিতঃ 10:03 pm | February 12, 2025

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

মাত্র ৬ দিন আগে নির্দিষ্ট রঙের ই-টিকিটিং ও কাউন্টারভিত্তিক বাস চালু উদ্বোধন করে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। এই পদ্ধতিতে বাস শ্রমিকরা নিজের হাতে ভাড়া তুলতে পারবেন না। যাত্রীরা কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে বাসে উঠবেন। প্রতিদিনের ভাড়া কোম্পানির তত্ত্বাবধানে জমা হবে এবং সেখান থেকে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বা মাসিক বেতন দেওয়া হবে।

রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে ঢাকায় প্রবেশকারী বাসগুলোকে গোলাপি রঙে রূপান্তর করে এই কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম ধাপে ২১টি কোম্পানির ১০০টি বাস দিয়ে এই ব্যবস্থা চালু করা হয়। পরবর্তী ধাপে সংশ্লিষ্ট সব কোম্পানির সব বাসকে এই ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে মালিক সমিতি।

শুরুতে রুট অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে বাসের কাউন্টার বসানো হলেও সেই কাউন্টারের সংখ্যা এখন কমে গেছে। সড়কে গোলাপি রঙের বাসের দেখাও মিলছে না তেমন একটা। কিছু দেখা গেলেও সেসব বাস কাউন্টার ছাড়াও যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করাচ্ছে। এছাড়া প্রত্যেক স্টেশনে কাউন্টার না থাকায় ভাড়ারও সমন্বয় করা যাচ্ছে না। এতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের কাছ থেকে।

শুধু তাই নয়, নতুন এই ব্যবস্থাপনার কারণে ভোগান্তি বেড়েছে যাত্রীদের। ৪ ফেব্রুয়ারি সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, আব্দুল্লাহপুর থেকে বাড্ডা, রামপুরা রুটে নিয়মিত চলাচলকারী ভিক্টর পরিবহন, রাইদা ও তুরাগ পরিবহনের বাসের সংখ্যা হাতেগোনা। বাস সংকটের কারণে অনেক যাত্রীকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। বাস না পেয়ে অনেককে হেঁটে কিংবা বিকল্প উপায়ে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।

সমাধানের কথা বললেও মঙ্গলবারও (১১ ফেব্রুয়ারি) সড়কে তেমন গোলাপি রঙের বাস দেখা যায়নি। এমনকি বিমানবন্দর থেকে বাড্ডা রামপুরা হয়ে যাত্রাবাড়ী ও গুলিস্তান রুটের যেসব কোম্পানির বাস কাউন্টারভিত্তিক চলাচলের আওতায় এসেছে, সেগুলোসহ অন্যান্য বাসও তেমন চলাচল করতে দেখা যায়নি।

মহাখালীর একজন যাত্রী রুকাইয়া ইসলাম বলছেন, ‘বাস শ্রমিকরা সবসময় তাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে। এর জন্য সড়কে শৃঙ্খলা না এলেও তাদের কিছু যায় আসে না। কারণ তারা এভাবেই অভ্যস্ত। তারা সবসময় আমাদের জিম্মি করে রাখে। ভেবেছিলাম অন্তর্বর্তী সরকারের সময় একটা সুস্থ সমাধান আসবে। কিন্তু কোনও কিছুই হচ্ছে না।’

অফিসগামী আরেক যাত্রী নিয়ামুল হাসান বলেন, ‘পরিবহন সেক্টর পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। মানুষের যে কষ্ট হয় এই বিবেকটা পরিবহন শ্রমিকদের নাই। তাদের জীবনে শৃঙ্খলা নাই, মানুষকেও সেই কষ্টে রাখে।’

যদিও ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, ‘যেসব চালক-শ্রমিক এই ব্যবস্থার আপত্তি জানিয়েছে তারা চুক্তিভিত্তিক চলতে চায়। তারা চায় নিজেরা ভাড়া তুলে সেখান থেকে মালিককে দেবে। এতে তারা অধিক আয়ের আশায় সড়কে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। আমরা এসব আর হতে দেবো না। বাসগুলো রঙ করতে পাঠানোয় বাস সড়কে কিছুটা কম।’

কালের আলো/এমএএইচইউ